বিজ্ঞাপন

নিষেধাজ্ঞা মেনে সাফল্য, সামুদ্রিক মাছের রফতানি দেড়গুণ

November 22, 2019 | 8:38 am

ওমর ফারুক হিরু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

কক্সবাজার: কক্সবাজার থেকে বিদেশে সামুদ্রিক মাছ রফতানির পরিমাণ বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় এর পরিমাণ প্রায় দেড়গুণ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মৎস্যসম্পদ রক্ষায় সরকারি নির্দেশনা মেনে নির্দিষ্ট সময়ে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ রাখার ফলে এই সাফল্য এসেছে।

বিজ্ঞাপন

কক্সবাজার মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৮ সালে স্থানীয় বাজার ও দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি হয়েছিল ৭৫ মেট্রিক টন সামুদ্রকি মাছ। ২০১৯ সালে এসে এর পরিমাণ হয়েছে ১২৫ মেট্রিক টন, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দেড়গুণ।

মাছ রফতানির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কক্সবাজারে ছোট-বড় পাঁচ হাজারেরও বেশি মাছ ধরার ট্রলার সমুদ্র থেকে মাছ শিকার করে বিদেশে রফতানির জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের জাহাজে তুলে দেওয়া পর্যন্ত চলে বিশাল কর্মযজ্ঞ। সাগর থেকে মাছ আহরণ শেষে বাছাই, পরিষ্কার, নম্বরিং, প্যাকেজিং, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্লাস্ট ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হয়। পরে মৎস্য অধিদফতরের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিদেশে রফতানির জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এর পর চট্টগ্রাম থেকে জাহাজের মাধ্যমে চীন, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হয় এসব মাছ।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, বিদেশে রফতানি করা মাছের মধ্যে রয়েছে রূপচাঁদা, পাতা, মায়া, কামিলা, ছুরি, ক্যাটল ফিস, স্টোইট, কাঁকড়া ও চিংড়ি উল্লেখযোগ্য। রফতানির যাবতীয় প্রক্রিয়া নিখুঁতভাবে পরিচালনা করতে প্রতিদিনই ব্যস্ত সময় কাটে স্থানীয় মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

কক্সবাজার মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের সিনিয়র সুপারভাইজার আব্দুর সাত্তার জানান, ফিসারি ঘাট থেকে মাছগুলো ফ্রিজার ভ্যানে করে মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনে আনা হয়। এসব মাছ রিসিভ করে গ্রেড করা হয়। গ্রেড করার পরে প্রোডাকশন রুমে আনা হয়। পরে নম্বরিং করে প্যাকেজিং করা হয় এবং রফতানির জন্য ব্লাস্টে ফ্রিজআপ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ ও বিপণন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ রঞ্জুর রহমান সারাবাংলাকে জানান, মাছ গ্রহণ থেকে শুরু করে রফতানি পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ কঠোরভাবে মনিটরিং করা হয়। কোনো মাছে ক্রটি আছে কি না, তা পরীক্ষা করা হয়। যেসব মাছ রফতানিযোগ্য নয়, সেগুলো আলাদা করা হয়।

স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী শ্যামল দেবনাথ জানান, মৎস্য অবহরণ কেন্দ্র থেকে রফতানি উপযোগী মাছ সংগ্রহ করে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনে আনার পরে প্রক্রিয়াজাতকরণ শেষে পুনরায় ফ্রিজিং গাড়িতে করে চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বিভিন্ন দেশে চলে যায় মাছ।

বিজ্ঞাপন

কক্সবাজার মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ ও বিপণন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মো. ইসানুল হক বলেন, গত অর্থবছরে (২০১৮) বিদেশে রফতানি করা হয়েছিল ৭৫ মেট্রিক টন সামুদ্রিক মাছ। এবার এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২৫ মেট্রিক টনে। সরকার ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ রেখেছিল এ বছর। এর ফলে ওই সময় মাছ পর্যাপ্ত বৃদ্ধির সময় পেয়েছে। ফলে নিষেধাজ্ঞার ওই সময়ের পর সমুদ্রে নেমে বড় বড় মাছের ঝাঁক পেয়েছেন জেলেরা। সে কারণেই মৎস্য রফতানির এই সাফল্য।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মৎস্য সম্পদ রক্ষায় প্রতিবছর সরকারের এমন নির্দেশনা মেনে চলছে ভবিষ্যতে সামুদ্রিক মাছের রফতানি আরও বাড়বে। তাতে স্থানীয় অর্থনীতির চাকা যেমন গতিশীল হবে, তেমনি দেশের সার্বিক অর্থনীতিতেও আরও বড় ভূমিকা রাখার সুযোগ তৈরি হবে।

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন