ওশান ডান্স ফেস্টিভ্যালের পাশে দাঁড়ালো শিল্পকলা একাডেমি

এন্টারটেইনমেন্ট করেসপন্ডেন্ট

ওশান ডান্স ফেস্টিভ্যালের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকি বলেন, আগামীবার থেকে এ আয়োজন করতে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সে ব‍্যাপারে সহযোগিতা করবেন তারা। গতকাল বিকেলে ওশান ডান্স ফেস্টিভ্যালে অতিথি হিসেবে তিনি এ কথাগুলো বলেন। এ সময় তার সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন নৃত‍্যযোগের সভাপতি আনিসুল ইসলাম হিরু ও সাধারণ সম্পাদক লুবনা মারিয়াম।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) ওশান ডান্স ফেস্টিভ্যালের দ্বিতীয় দিন সকাল থেকে মারমেইড ইকো রিসোর্টে ছিল ধারণাপত্র উপস্থাপন ও প্রবন্ধপাঠ। সেখানে সংস্কৃতি ও নৃত্যশিক্ষার বিষয়ভিত্তিক নানা ধারণা তুলে ধরেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্ডিত ও নৃত্যশিক্ষকেরা। ডব্লিউডিএ, এপির সভাপতি ভারতের ঊর্মিমালা সরকার তার ধারণাপত্রে নাচ নিয়ে লেখালেখি ও গবেষণার সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘নাচ নিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশে রেফারেন্স দেওয়ার মতো কোনো গবেষণা বা লেখা নেই। এ বিষয়ে অন্য ডিসিপ্লিনের লোকেদেরও এগিয়ে আসা প্রয়োজন। আমাদের শিক্ষাপদ্ধতিটি এমন যে, এখানে শিক্ষকদের প্রশ্ন করা যায় না। মুখস্ত বিদ্যার ওপর ভিত্তি করেই শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে হয়। শিক্ষককে বলা যায় না যে, পড়া ও চর্চার মধ্যে মিল খুব সামান্য।’ তিনি মুখস্ত বিদ্যা রেখে আদি বিষয়বস্তুকে নতুন আঙ্গিকে উপস্থাপনের আহবান জানান।

পরবর্তী অধিবেশনগুলোয় ‘মেডিয়েটিং ডান্স’-এ কোরিওগ্রাফির ভাষা, স্থান ও পরিবেশ নিয়ে কথা বলেন নরওয়ের টোন পারনিল অস্টার্ন। স্ট্রিট ডান্সারদের উঠে আসা নিয়ে কথা বলেন ভারতের মেঘনা ভরদ্বাজ। অস্ট্রেলিয়ার সংগীতজ্ঞ ও নৃত্যশিল্পী সিওয়াই গরম্যান এক উপস্থাপনায় তুলে ধরেন আলো ও শব্দের গুরুত্ব। তিনি বলেন, পরিবেশনার ওপর ভিত্তি করে স্থান নয়, বরং স্থানের ওপর ভিত্তি করে পরিবেশনা সাজাতে পারাটাই গুরুত্বপূর্ণ। এক এক ধরনের আলো এবং শব্দ মানুষের মগজে ভিন্ন ধরনের তরঙ্গ সৃষ্টি করে। সুতরাং পরিবেশনার ক্ষেত্রে রঙের ব্যবহার ভীষণ প্রভাব রাখে আর যন্ত্র থেকে শব্দ উৎক্ষেপন আরও জরুরি। কেননা শব্দই বলে দেয় তথ্যের গুরুত্ব।

এ ছাড়া ভোরে সৈকতে যোগ ব্যয়ামের কর্মশালায় অংশ নেন তরুণ শিল্পীরা। ছিল আনিসুল ইসলাম হিরু ও টমাস বুঙ্গারের কর্মশালা। শেষ বিকেলে ছিল সাশার জারিফের সঙ্গে নৃত্যবিষয়ক সংলাপ। বিকেল থেকে কক্স কার্নিভালে থাকবে পারফরমেন্স। আন্তর্জাতিক অংশে ছিল তাইওয়ানের লেই ডান্স থিয়েটারের পরিবেশনা ইন্সপিরেশন অব আওয়ার হোম টাইন, শুটে বিশ্ববিদ্যালয় ও সোমাটিক থিয়েটারের যৌথ পরিবেশনা নট অ্যালন, বাংলাদেশের অমিত চৌধুরী ও সুইটি দাশের পরিবেশনা রূপান্তর, তাহনুন আহমেদির আজান, মেহরাজ হক তুষারের ট্রাস্ট, নৃত্যশৈলীর হলি স্যান্ড, কোরিয়ার লি মিহের স্প্রিং কামিং উইথ এ ওয়ার্ম ব্রিজি এবং ভারতের আস্থা গান্ধীর ইন ট্রানজিট।

জাতীয়ভাবে নির্বাচিত অংশে ছিল বাংলাদেশের শিল্পীদের সমসাময়িক নৃত্য পরিবেশনা। চারদিনের এ নৃত্য উৎসবের আয়োজন করেছে ওয়ার্ল্ড ড্যান্স অ্যালায়েন্সের বাংলাদেশ শাখা নৃত‍্যযোগ। উৎসব সহযোগী হিসেবে আছে মাত্রা ও চ্যানেল আই। সমর্থন দিচ্ছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, অ্যাকাডেমিক সহযোগী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। উৎসবের ভেন্যু কক্সবাজারের মারমেইড বিচ রিসোর্ট।

সারাবাংলা/এএসজি/পিএম