বিজ্ঞাপন

জনপ্রতি পেঁয়াজ বিক্রির পরিমাণ বাড়িয়েছে টিসিবি

December 11, 2019 | 4:57 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: খোলাবাজারে জনপ্রতি পেঁয়াজ বিক্রির পরিমাণ বাড়িয়েছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। গত মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) থেকে প্রত্যেক ক্রেতার কাছে ১ কেজির পরিবর্তে টিসিবি‘র ট্রাক থেকে ২ কেজি করে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে। একইসঙ্গে টিসিবি‘র প্রতিটি ট্রাকে পেঁয়াজের পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। আগে একেকটি ট্রাকে প্রতিদিন এক হাজার কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করা হতো। এখন তা বাড়িয়ে তিন হাজার কেজি করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) টিসিবি‘র মুখপাত্র হুমায়ুন কবির সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গতকাল (মঙ্গলবার) থেকে প্রত্যেক ক্রেতাকে ১ কেজির পরিবর্তে ২ কেজি করে পেঁয়াজ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আগে প্রতিটি ট্রাকে করে প্রতিদিন এক হাজার কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করা হতো। এখন প্রতিটি ট্রাকে পেঁয়াজ দেওয়া হচ্ছে তিন হাজার কেজি।

হুমায়ুন কবির আরও বলেন, বর্তমানে টিসিবির কাছে পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। জনগণের চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে পেঁয়াজ বিক্রির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।

সূত্র জানায়, আকস্মিকভাবে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়া গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে খোলা বাজারে টিসিবি পেঁয়াজ বিক্রি করতে শুরু করে। প্রথমে রাজধানের পাঁচটি স্পটে পাঁচটি ট্রাকে করে টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করে। পরবর্তী সময়ে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ২২ সেপ্টেম্বর থেকে রাজধানীর ১০টি স্পটে ১০টি ট্রাকে এবং ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৩৫টি স্পটে ৩৫টি ট্রাকে করে পেয়াঁজ বিক্রি শুরু করে টিসিবি। খোলা বাজারের এই পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ৪৫ টাকা।

বিজ্ঞাপন

১৭ সেপ্টেম্বর ট্রাকে করে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হলে একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ২ কেজি করে পেঁয়াজ কিনতে পারতেন। পেঁয়াজের দাম বাড়তে বাড়তে একসময় প্রতি কেজি ২৫০ টাকা পেরিয়ে যায়। ওই সময় টিসিবি’র ট্রাকে পেঁয়াজের জন্য ক্রেতাদের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে। ওই সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও পেঁয়াজ না পেয়ে ফিরে যেতে হয়েছে অনেককে। এ অবস্থায় ৩ নভেম্বর থেকে একেকজন ক্রেতার জন্য ১ কেজি করে পেঁয়াজ বরাদ্দ করে টিসিবি। এরপর বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলে সরবরাহ বাড়তে থাকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার থেকে ফের একেকজন ক্রেতার কাছে ২ কেজি করে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, ঈদুল আজহার পর থেকেই বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। এর মধ্যে ভারতের মহারাষ্ট্রে বন্যার কারণে পেঁয়াজের ফলন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই সময় ভারত সরকার প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের মিনিমাম এক্সপোর্ট প্রাইজ (এমইপি) নির্ধারণ করে দেয়। আগে প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের আমদানি মূল্য ২৫০ থেকে ৩০০ মার্কিন ডলার থাকলেও গত ১৩ সেপ্টেম্বর তা বাড়িয়ে ৮৫০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়। সপ্তাহ দুয়েক পর ২৯ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ ঘোষণা করে ভারত।

পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির প্রবণতার মধ্যে ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করলে পেঁয়াজের দাম লাগামহীন হয়ে পড়ে। গত আড়াই মাসে প্রতি কেজি ৪০ টাকা থেকে ২৬০ টাকাতেও বিক্রি হয় পেঁয়াজ। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি হওয়ায় বর্তমানে বাজারে সরবরাহ খানিকটা বেড়েছে। কিছু কিছু এলাকায় দেশি পেঁয়াজও উঠতে শুরু করেছে বাজারে। তবে এখনো পেঁয়াজের দামে লাগাম পরানো যায়নি।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, বর্তমানে প্রতিবছর দেশে পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ২৪ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে গত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে ২৩ দশমিক ৭৬ লাখ মেট্রিক টন। উৎপাদন চাহিদার কাছাকাছি হলেও উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রায় ৩০ শতাংশ নষ্ট হয় বলে প্রতিবছর ৭ থেকে ৮ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়।

সারাবাংলা/জিএস/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন