বিজ্ঞাপন

সুবিধা নিতেই রাজনীতিতে আসেন ভারতীয়রা, গবেষণায় তথ্য

February 18, 2018 | 3:40 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

আর্থিক সুবিধা পেতে কিংবা সামাজিক ভাবমূর্তির আকাঙ্খা থেকেই ভারতীয়রা রাজনীতিতে আসেন। এ ক্ষেত্রে দলমত নির্বিশেষে সব রাজনীতিকের মানসিকতাই অভিন্ন। যদিও একাধিকবার নির্বাচনে অংশ নেওয়া রাজনীতিবদরা তাদের ‘সামাজিক ভাবমূর্তি’ নিয়ে বিচলিত হন না।

‘হোয়াট মোটিভেইটস পলিটিশিয়ানস? ইভিডেন্স ফ্রম এ ল্যাব ইন দ্য ফিল্ড এক্সপেরিমেন্ট ইন ইন্ডিয়া’ শীর্ষক এক গবেষণার ফলাফলে এসব বিষয় উঠে এসেছে। ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কুনাল সেন এবং তার সহকর্মীরা ভারতের আঞ্চলিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা-পঞ্চায়েতের উপর একটি আচরণগত অর্থনীতির গবেষণা করেন।

রোববার আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে অধ্যাপক কুনাল এ গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন। বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. কেএএস মুর্শিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিআইডিএসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন।
গবেষণা ফলাফল উপস্থাপনকালে অধ্যাপক কুনাল বলেন, নিঃস্বার্থ রাজনীতি বলে কিছু নেই। সব রাজনীতিকের মানসিকতা এক্ষেত্রে অভিন্ন। যদিও একাধিকবার নির্বাচনে অংশ নেয়া রাজনীতিবিদরা তাদের ‘সামাজিক ভাবমূর্তি’ নিয়ে বিচলিত হন না। তাদের কাছে আর্থিক বা অন্যান্য সুবিধা প্রাপ্তিটাই মুখ্য। অবশ্য নবীন বা নারী রাজনীতিকরা শুরুতে সামাজিক ভাবমূর্তিকেই বেশি গুরুত্ব দেন।

বিজ্ঞাপন

গবেষণায় ভারতের গুরুত্বপূর্ণ দুটি রাজ্য উত্তর প্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েতের (ইউনিয়ন পরিষদের অনুরূপ) নির্বাচিত ১০৫ জন রাজনীতিক ও ৬৯ জন সাধারণ মানুষের মানসিকতা বিশ্লেষণ করা হয়েছে বলে জানান কুনাল সেন। তিনি বলেন, আমাদের বিশ্লেষণ হলো, তৃণমূল পর্যায়ের সরকার ব্যবস্থার রাজনীতিতে কেউ নিঃস্বার্থভাবে আসেন না। দলমত নির্বিশেষে তাদের প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু পাওয়ার আশা থাকে। সেক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায়ে (এমএলএ) যারা রাজনীতিতে আসেন, তারা কিসের আশায় রাজনীতিতে যুক্ত হন সে প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই আসে। সাধারণত প্রচুর টাকা পয়সা খরচ করেই কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে যুক্ত হতে হয়। তবে ব্যতিক্রমও থাকতে পারে। এ বিষয়েও গবেষণা হওয়া উচিত।

গবেষণার দেখা যায় যে, রাজনীতিবিদ এবং অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যে যদি একটি অর্থনৈতিক সুবিধার গেইম খেলা হয় তখন, এই দুই দলের মধ্যে আচরণগত তেমন পার্থক্য থাকে না। যদিও ধারণা করা হয় যে, সামাজিক ভাবমূর্তি রাজনীতিবিদদের আরও বেশি ন্যায়সঙ্গতভাবে অর্থনৈতিক বন্টনে উৎসাহিত করবে।

গবেষণার ফলাফলে বিপরীতি চিত্রও দেখা যায়। যখন অর্থনৈতিক সুবিধা বন্টনের বিষয়টি লোকজনের কাছে জানাজানি হয়, তখন রাজনীতিবিদদের চেয়ে বরং অরাজনৈতিক ব্যক্তিরাই বেশি ন্যায্য বন্টন করে। রাজনীতিবিদদের মধ্যে আবার নারী রাজনীতিকরা তাদের সামাজিক ভাবমূর্তির দ্বারা বেশি উৎসাহিত হয়। এ কারণে তারা লোকসম্মুখে অর্থনৈতিক ন্যায্য বন্টনে পুরুষ রাজনীতিবিদরে তুলনায় বেশি উৎসাহিত হন।

বিজ্ঞাপন

সামাজিক ভাবমূর্তি বা ইমেজ রাজনীতিবিদরে ন্যায়সঙ্গত আচরণে উদ্বুদ্ধ করে না। রাজনীতিবিদরা সাধারণ মানুষের তুলনায় মানসিকভাবে কঠোর হয়ে থাকেন। তাই সাধারণ লোকের কথায় প্রভাবিত হওয়ার মানসিকতা থেকে অনেকাংশে মুক্ত। এ কারণে তারা লোক জানাজানির পরও অর্থনৈতিক প্রাপ্তির বিষয়টিকে অগ্রাধিকারে রাখেন।

সারাবাংলা/জেজে/এইচএ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন