বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামেও হামলা, ছাত্রলীগকে দায়ী করলেন নুরের অনুসারীরা

December 18, 2019 | 7:43 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদে কর্মসূচি পালন করতে এসে চট্টগ্রাম নগরীতে হামলার শিকার হয়েছেন কোটা স্বার্থ সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীরা। এতে কমপক্ষে আট জন আহত হয়েছেন। নুরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত পরিষদের নেতারা এই হামলার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করেছেন।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ষোলশহর ও মুরাদপুর এলাকায় দু’দফা হামলার শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছেন পরিষদের নেতারা।

আরও পড়ুন- কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, ভিপি নুর আহত

হামলায় আহতরা হলেন— পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জসিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল হক তায়েফ, সাফায়াত সিফাত, তানভির সৌরভ, নুরুল কাউসার, সোয়াইবুল ইসলাম ও তাওহীদুল ইসলাম এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলাম।

বিজ্ঞাপন

আহতরা নগরীর চান্দগাঁও থানার শমসের পাড়া এলাকায় ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এর আগে, মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ডাকসু ভিপি নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে মানববন্ধন ও সমাবেশের ডাক দিয়েছিল কোটা স্বার্থ সংরক্ষণ পরিষদ। বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নগরীর ষোলশহর বিপ্লব উদ্যানের সামনে জড়ো হন পরিষদের ৩০ থেকে ৪০ জন নেতাকর্মী। আগে থেকেই সেখানে অবস্থান নিয়েছিল প্রায় অর্ধশত তরুণ-যুবক।

বিজ্ঞাপন

আহত জসিম উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা মানববন্ধন শুরু করব, এমন সময় লাঠিসোঠা-লোহার রড নিয়ে এসে কিছু ছেলে আমাদের ওপর হামলা করে। সেখানে পুলিশ আমাদের মাত্র পাঁচ মিনিট দাঁড়ানোর অনুমতি দিয়েছিল। আমরা পুলিশের কথা মেনে কর্মসূচি শুরু করেছিলাম। এরপরও পুলিশের সামনেই আমাদের ওপর হামলা করা হলো। আমাদের মোবাইল-মানিব্যাগ কেড়ে নেওয়া হয়েছে। পুলিশ প্রতিরোধের কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা পুলিশকে অনুরোধ করেছিলাম, আমাদের যেন মুরাদপুর পার করে দেওয়া হয়।’

‘পুলিশের নিরাপত্তার মধ্যে আমরা মিছিল নিয়ে মুরাদপুরের দিকে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ পুলিশ সরে যায়। এরপর ষোলশহর ফরেস্ট গেটের কাছে প্রাইম ব্যাংকের সামনে আমাদের ওপর আবার হামলা করা হয়। আমাদের ১০-১২ জন নেতাকর্মী একটি বাসে উঠেছিল। সেই বাস থেকে নামিয়ে মারধর করা হয়েছে। বাসও ভাঙচুর করা হয়েছে। পরে আমাকে রাস্তার পাশে একটি কক্ষের ভেতরে নিয়ে মাথায় আঘাত করে। ছেড়ে দেওয়ার পর আমরা যার যার মতো করে চান্দগাঁওয়ে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছি,’— বলেন জসিম উদ্দিন।

জানতে চাইলে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার(উত্তর) বিজয় কুমার বসাক সারাবাংলাকে বলেন, ‘একপক্ষ মানববন্ধন করতে এলে আরেকপক্ষ ধাওয়া দিয়েছিল। হামলার কোনো ঘটনা আমাদের সামনে ঘটেনি। হামলা হলে আমাদের কেউ অভিযোগ করল না কেন?’

বিজ্ঞাপন

এদিকে, জসিম উদ্দিন হামলার জন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দায়ী করে বলেন, ‘ছাত্রলীগের মহিউদ্দিন গ্রুপের জোবায়ের ও আরিফের নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা হয়েছে।’

নগরীর ইস্পাহানি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র আরিফ উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিতর্কিত ইস্যুতে তারা মানববন্ধন করতে এসেছিল। আর ডাকসু ভিপি নুরের ওপর হামলার বিষয়টিও সঠিক নয়। মিথ্যাচার করে কর্মসূচি পালনের প্রতিবাদ জানাতে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। কিন্তু তারাই প্রথমে আমাদের ওপর আক্রমণ করে। তখন হাতাহাতি হয়েছে। পরে পুলিশ তাদেরকে মুরাদপুরের দিকে নিয়ে যায়।’

আরিফ উদ্দিন ২০১৮ সালের আগস্টে চট্টগ্রামে ‘নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে’ যুক্ত ছিলেন। আরিফসহ যারা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন, তারা চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনির অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

এর আগে মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ভারতের এনআরসি ইস্যুতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করতে গেলে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামে একটি সংগঠনের হামলার শিকার হন ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর। বুধবার আবারও ঢাকায় নুরের অনুসারীদের ওপর হামলা হয়েছে।

আরও পড়ুন-

হামলার প্রতিবাদে নুরের বিক্ষোভ, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের পাল্টা মিছিল

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন