বিজ্ঞাপন

ছায়ানটের শুদ্ধসঙ্গীত উৎসব

December 21, 2019 | 5:03 pm

এন্টারটেইনমেন্ট করেসপন্ডেন্ট

‘ছায়ানট’- ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সাংস্কৃতিক সংগঠনটি সংস্কৃতিচর্চায় দেশিয় ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। যেটি চিন্তাবিদ, সাহিত্যিক, চিত্রশিল্পী, নাট্যশিল্পী, চলচ্চিত্র সংসদকর্মী, বিজ্ঞানী, সমাজব্রতী নানা ক্ষেত্রের মানুষের সৃজনচর্চার মিলনমঞ্চ। স্বাধীনতা সংগ্রামের সাংস্কৃতিক অভিযাত্রায় ব্যাপ্তি ও গভীরতা সাধনে পালন করে বিশিষ্ট ভূমিকা। সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ থেকে স্বাধীনতাযুদ্ধ পর্যন্ত বাঙালির পথপরিক্রমণের গৌরবের অংশ ছায়ানট। স্বাধীনতার পর সংস্কৃতি ও সঙ্গীতচর্চাকে আরও ব্যাপক ও নিবিড় করে তোলার সৃষ্টিশীল সাধনায় নিমগ্ন রয়েছে ছায়ানট। প্রায় ছয় দশক ধরে সাংস্কৃতিক সাক্ষরতা ও সংস্কৃতি বিকাশের লক্ষ্যে এ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এবং সাংস্কৃতিক বিকৃতি ও সংস্কৃতিহীনতা প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে ছায়ানট বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।

বিজ্ঞাপন

ছায়ানটের শুদ্ধসঙ্গীত উৎসব

ছায়ানট প্রতিষ্ঠার পরই বাঙালিকে তার গানের ঐতিহ্য স্মরণ করিয়ে দিতে ঘরোয়া পরিবেশে আয়োজন করে সুরুচিসম্মত সঙ্গীত অনুষ্ঠান ‘শ্রোতার আসর’। ছায়ানটের মূল অনুষ্ঠানের মধ্যে- রমনা বটমূলে বর্ষবরণ, জাতীয় দিবস (শহীদ দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস), রবীন্দ্র-নজরুল জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী, ঋতু উৎসব (বর্ষা, শরৎ, বসন্ত), লোকসঙ্গীতানুষ্ঠান, দেশঘরের গান, শুদ্ধসঙ্গীত উৎসব, রবীন্দ্র-উৎসব, নজরুল-উৎসব এবং নৃত্যোৎসব।

বিজ্ঞাপন

এরই ধারাবাহিকতায় ছায়ানট আয়োজন করেছে দুদিনব্যাপী শুদ্ধসঙ্গীত উৎসবের। ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর ছায়ানট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এই সঙ্গীতের আসর।

ছায়ানটের শুদ্ধসঙ্গীত উৎসব

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সম্মেলক কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে শুরু হয় প্রথম দিনের আয়োজন। জাতীয় সঙ্গীত শেষে স্বাগত কথনে সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ছায়ানটের সহসভাপতি খায়রুল আনাম শাকিল। এরপর উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে তবলা শিল্পের জীবন্ত কিংবদন্তী ময়মনসিংহের পবিত্র মোহন দে। উদ্বোধনী বক্তৃতায় তিনি শাস্ত্রীয় সংগীতের প্রসারে ছায়ানটের ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বললেন, ‘দেশের সংগীতচর্চায় অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এ প্রতিষ্ঠান। শুদ্ধ সংগীত প্রসারেও তাদের ভূমিকা প্রশংসনীয়। আমার বিশ্বাস, ছায়ানটের নিষ্ঠা দেশের তরুণ শিল্পীদের শুদ্ধ সংগীতচর্চায় আগ্রহী করে তুলবে।’

উদ্বোধনী পর্ব শেষে শুরু পরিবেশনা। প্রথমেই রেজোয়ান আলীর পরিচালনায় ‘অষ্টপ্রহরের রাগ’ পরিবেশন করে ছায়ানটের শিল্পীরা। এরপর কণ্ঠসঙ্গীতে সতীন্দ্রনাথ হালদার পরিবেশন করেন রাগ ‘পুরিয়া’। শিল্পিকে তবলায় সঙ্গত করলেন গৌতম সরকার। অনিল কুমার সাহা পরিবেশন করলেন রাগ ‘পুরিয়া ধানেশ্রী’। তবলায় ছিলেন শুকদেব রায়। চট্টগ্রামের স্বর্ণময় চক্রবর্তী শোনালেন রাগ ‘মারবা’। তাকে তবলায় সঙ্গত করলেন সবুজ আহমেদ। এরপর ছিল ত্রয়ী যন্ত্রবাদন- সবুজ আহমেদের তবলা, শান্ত আহমেদের বেহালা ও কামরুল আহমেদের বাঁশি।  সবশেষে মর্তুজা কবীর মুরাদ বাঁশিতে রাগ ‘ভুপালী’ বাজিয়ে শেষ করেন এই উৎসবের প্রথম দিনের আয়োজন।

বিজ্ঞাপন

ছায়ানটের শুদ্ধসঙ্গীত উৎসব

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) ছিল এই আয়োজনের দ্বিতীয় তথা শেষদিন। সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হয়ে রাতব্যাপী চলা এই অনুষ্ঠানে প্রথমেই শ্রী আসিত দে’র পরিচালনায় ‘অষ্টপ্রহরের রাগ’ পরিবেশন করে ছায়ানটের শিল্পীরা। এরপর গৌতম সরকারের পরিচালনায় বৃন্দ পরিবেশনায় তবলা বাজিয়ে শোনান ছায়ানটের শিল্পীরা। কণ্ঠসঙ্গীতে পরাগ প্রতীম চক্রবর্তী শোনালেন রাগ ‘মূলতানী’। সরোদ বাজিয়ে শোনালেন রাজরূপা চৌধুরী। রাগ ‘মধুবন্তী’ গাইলেন সুপ্তিকা মন্ডল। তবলা বাজিয়ে শোনালেন অনন্য রোজারিও। মিনহাজুল হাসান ইমন কণ্ঠসঙ্গীতে পরিবেশন করলেন রাগ ‘পুরিয়া ধানেশ্রী’। সেতারে রাগ 'হেমকল্যান' বাজালেন এবাদুল হক সৈকত। এরপর একে একে কণ্ঠসঙ্গীত পরিবেশন করলেন খায়রুল আনাম শাকিল, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী, শ্রাবন্তী ধর, টিংকু শীল ও অভিজিৎ কুণ্ড, শেখর মণ্ডল, রেজোয়ান আলী এবং শ্রী অসিত দে। এছাড়াও বেহালায় রাগ ‘যোগ’ বাজিয়ে শোনালেন মো. আলাউদ্দিন মিয়া।

বিজ্ঞাপন

দুই দিনের পুরো আয়োজনটিই ছিল সবার জন্য উন্মুক্ত।

সারাবাংলা/এএসজি/পিএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন