বিজ্ঞাপন

প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই ২৯ ডিসেম্বর ঐক্যফ্রন্টের বিক্ষোভ

December 26, 2019 | 6:01 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ‘ভোট কারচুপি-ডাকাতির’ প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আগামী ২৯ ডিসেম্বর দুপুর ২টায় এ কর্মসূচি পালন করা হবে। এই কর্মসূচির জন্য প্রশাসন থেকে কোনো ধরণের অনুমতি নেওয়া হবে না বলে ফ্রন্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে বৈঠক শেষে কর্মসূচির বিষয়ে ব্রিফিং করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব।

আ স ম রব বলেন, ‘২৯ তারিখে আমরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করব। এই কর্মসূচির জন্য আগে থেকে কোনো অনুমতি নেওয়া হবে না। আমাদের কর্মসূচিতে যদি কোনো ধরনের বাধা দেওয়া হয়, তাহলে লাগাতার বিক্ষোভ শুরু হবে এবং এই কর্মসূচি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে।’

রব বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও তার আগের দিন ২৯ ডিসেম্বর রাতে ভোট ডাকাতি হয়েছে। সেই ভোট ডাকাতির প্রতিবাদে আমরা ২৯ ডিসেম্বর দুপুর ২টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করব। তবে ২৯ ডিসেম্বরের কর্মসূচিতে কোনো ধরনের হামলা হলে, বাধা দেওয়া হলে ওই কর্মসূচি সারাদেশে লাগাতারভাবে চলবে এবং সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। গণতন্ত্র পুনঃউদ্ধারের জন্য ২৯ ডিসেম্বর থেকে আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।’

বিজ্ঞাপন

জেএসডি সভাপতি বলেন, ‘ব্রিটিশ আমলে আমাদের জন্ম। আমরা পাকিস্তান আমলে মোনায়েম খাঁর শাসনামলে এনএসএফ‘র হামলা দেখেছি। কিন্তু এ ধরনের টর্চার সেল দেখি নাই। যে ডাকসু থেকে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল, জাতীয় সংগীত চূড়ান্ত করা হয়েছে। পৃথিবীর কোনো দেশে স্বাধীনতার আগে জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত চূড়ান্ত করা হয়নি। কিন্তু ঐতিহাসিক ডাকসুতে তা চুড়ান্ত করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘সেই ডাকসুতে ভিপি নুরের ওপর হামলা হয়েছে। এই পর্যন্ত তার ওপর ৯ বার হামলা হয়েছে। প্রক্টরের সহযোগিতায় সিসিটিভির ফুটেজ খুলে নেওয়া হয়েছে।’

রব আরও বলেন, ‘নুরের ওপর হামলার ঘটনায় সারাদেশে যে প্রতিবাদ উঠেছে এর সঙ্গে ঐক্যফ্রন্ট সমর্থন জানাচ্ছে। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে শেখ হাসিনাকে বিদায় নিতে হবে। জনগণের ওপর হামলা, মা বোনের ওপর নির্যাতন, ভিপি নুরের ওপর হামলাসহ সব হামলার প্রতিবাদে এই স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদী সরকারের বিদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’

বিজ্ঞাপন

রব আরও বলেন, ‘ভিপি নূরসহ ছাত্রনেতাদের মারতে চেযেছিল কিন্তু তারা বেঁচে গেছেন। যারা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামে হামলা করেছে, তাদের অনেকের বাবারও মুক্তিযুদ্ধের সময় জন্ম হয়নি। কীসের মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, এরা ছাত্রলীগের গুণ্ডা।’

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আজকের বৈঠকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সেটা হলো আমাদের ঐক্যকে সুসংগঠিত করে আমাদের ভোটের অধিকারকে আদায় করতে হবে। নির্বাচনকে অর্থবহ করতে হবে। জনগণ ক্ষমতার মালিক হিসাবে যাতে ভুমিকা রাখতে পারে সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেজন্য আমাদের ঐক্যকে আপসহীনভাবে ধরে রাখব।’

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমাদের অনুষ্ঠানিক কর্মসূচি হলো ২৯ ডিসেম্বর দুপুর দুইটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হবে। আগামী ২৮ ডিসেম্বর মহানগর নাট্যমঞ্চে জেএসডি‘র কাউন্সিল হবে। সেই কাউন্সিলে প্রধান অতিথি থাকবেন ড. কামাল হোসেন। এছাড়াও সেখানে ঐক্যফ্রেন্টের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থাকবেন। ওখান থেকে আন্দোলনের সূচনা হবে। সেখানে একজন সংবিধান রচয়িতা আরেকজন হলেন জাতীয় পতাকা উত্তোলনকারী। এই দুইজনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের ঝাণ্ডা ওড়ানো হবে। আন্দোলনের সূচনা করা হবে। সেখানে কর্মসূচি দেওয়া হবে। সেই কর্মসূচিতে যাতে পুলিশ বাধা না দেয়। কারণ আমরা কোনো বাধা মানব না। সেখানে প্রয়োজনে বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিন থাকলেও ভোট ডাকাতি হয়েছে ২৯ ডিসেম্বর। তাই আমরা ২৯ ডিসেম্বর ভোট ডাকাতি দিবস হিসাবে পালন করব। তবে ৩০ ডিসেম্বরও আমাদের কর্মসূচি থাকবে।’

বিজ্ঞাপন

ভিপি নূরসহ ছাত্রনেতাদের ওপর মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নামে ছাত্রলীগ নেতাতের হামলা প্রসঙ্গে মান্না বলেন, ‘ডাকসুতে হামলার ঘটনায় সিসি টিভির ফুটেজ দেখানো হোক। একইসঙ্গে ফুটেজ দেখে দেখে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে বিচার করা হোক। এর বাইরে কাউকে ধরা হলে কিংবা বিচার করা হলে আমরা মানব না। আমরা প্রতিবাদ করব। একইসঙ্গে নুরের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। ডাকসুতে যে ঘটনা ঘটেছে আমি ডাকসুর ভিপি হিসেবে উদ্বিগ্ন। বুয়েটের হামলা আর ডাকসুর হামলা একই রকম। পার্থক্য হলো বুয়েটে মারা গেছে, এখানে মারা যাননি। আমরা সমব্যথায় সমশক্তি দিয়ে এটি প্রতিহত করব।’

‘জাতীয় নির্বাচন হয়েছিল ৩০ ডিসেম্বর, কর্মসূচি কেন ২৯ ডিসেম্বর’ সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে জেএসডি’র সভাপতি বলেন, ‘২৯ তারিখ থেকে ভোট কারচুপি শুরু হয়। তাই ২৯ তারিখেই আমাদের কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।’

মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ড. কামালসহ আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আবু সাঈদ।

সারাবাংলা/জিএস/একে

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন