বিজ্ঞাপন

নৌকা পোড়ানোর অভিযোগ মোছলেমের, হামলার অভিযোগ সুফিয়ানের

January 4, 2020 | 8:33 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই প্রার্থী নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দাখিল করেছেন। বিএনপি প্রার্থী আবু সুফিয়ানের অভিযোগ, বোয়ালখালী উপজেলায় প্রচারণায় গিয়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগ-শ্রমিক লীগের চার নেতার নেতৃত্বে হামলার শিকার হয়েছেন। আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমেদের অভিযোগ, প্রচারণার অংশ হিসেবে তার টাঙানো নৌকা পুড়িয়ে দিয়েছেন বিএনপির দুই নেতা।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে দুই প্রার্থীর স্বাক্ষরিত পৃথক অভিযোগ চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের উপ-নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বে থাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামানের কাছে দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে হাসানুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘দুজন প্রার্থীর কাছ থেকে দুটি অভিযোগ পেয়েছি এবং সঙ্গে সঙ্গেই সেগুলো তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বোয়ালখালী থানার ওসির কাছে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ইলেকশন ইনকোয়ারি কমিটির কাছেও দেওয়া হয়েছে।’

সুফিয়ানের অভিযোগ, শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম গোমদণ্ডী এলাকায় প্রচারণার সময় নৌকার প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমেদের অনুসারী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম বোরহান উদ্দিন, উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল তালুকদার ও ছাত্রলীগের সভাপতি মোনাফ এবং পৌরসভা যুবলীগের সভাপতি কাজী রাসেলের নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এতে সুফিয়ানের সঙ্গে থাকা চার নেতাসহ ১০ জন আহত হন। এসময় তিনটি মোটর সাইকেল ভাঙচুরেরও অভিযোগ এনেছেন আবু সুফিয়ান।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এস এম বোরহান উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘নৌকার জনপ্রিয়তা দেখে ভয় পেয়ে বিএনপির প্রার্থী মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন। উনি যে এলাকায় প্রচারণা করছিলেন, তার পাশের এলাকায় আমরা একটি নৌকার ক্যাম্প উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলাম। উনি সুন্দরভাবে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন, হঠাৎ গুজব ছড়িয়ে দেন যে- তাকে অবরুদ্ধ করা হয়েছে। বাস্তবে এমন কিছুই হয়নি। প্রশাসনের কর্মকর্তারাও সেখানে গিয়ে এর কোনো প্রমাণ পাননি। উনি প্রচারণা শেষ করে নামাজ পড়তে চলে যান। পরে শুনতে পাই যে, উনি বিভিন্ন অভিযোগ এনেছেন।’

বোরহানের অভিযোগ- আবু সুফিয়ান যুবলীগ কর্মী ইসমাইল হত্যা মামলার প্রধান আসামি আবুল কালাম আবু, হত্যা মামলার আসামি মোরশেদ, যুবদল নেতা গোলাম হোসেন নান্নু, মো. আলী, নারী নির্যাতন মামলার আসামী সুজন, কালা মামুনসহ বিতর্কিত লোকজন নিয়ে গণসংযোগে গিয়েছিলেন। এতে বরং জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল।

আবু সুফিয়ান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামে অনেক মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এসব মামলার আসামি হয়ে আমাদের নেতাকর্মীরা আজ ঘরে পর্যন্ত থাকতে পারছে না। আমার নামেও ১৯টি মামলা আছে। আমি প্রচারণায় গেলেই হাজার হাজার মানুষ আমার সঙ্গে চলে আসেন। বিএনপির ত্যাগী-নির্যাতিত নেতাকর্মী, যারা মামলা-হামলার শিকার হয়ে ফেরারি আছেন, তারাও আসেন।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে মোছলেম উদ্দিন আহমেদ অভিযোগ করেছেন, শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাত আড়াইটার সময় বোয়ালখালী পৌরসভার পূর্ব কালুরঘাটে বিএনপি নেতা পৌর মেয়র আবুল কালাম আবু এবং মোস্তাক আহমদ খানের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী বাঁশ ও কাপড় দিয়ে বানানো নৌকা আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে। হেলাল উদ্দিন ও এহসান নামে দুজন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া পৌরসভার পশ্চিম কধুরখীল পাঠানপাড়ায় বাঁশ দিয়ে টাঙানো একটি নৌকা খুলে পুকুরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন তিনি।

বোয়ালখালী পৌরসভার মেয়র বিএনপি নেতা আবুল কালাম আবু এসব অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা বলে উল্লেখ করেছেন।

উভয় প্রার্থীই পরস্পরের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন রিটার্নিং অফিসারের কাছে।

এর আগে আবু সুফিয়ান শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং সংসদ সদস্য আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছিলেন। তবে মোছলেম উদ্দিন এই প্রথম নির্বাচন কমিশনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর অনুসারীদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ এনেছেন।

বিজ্ঞাপন

জাসদ নেতা মঈনউদ্দিন খান বাদলের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনে ১৩ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ হবে।

সারাবাংলা/আরডি/এমআই

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন