বিজ্ঞাপন

শূন্য রেখার রোহিঙ্গাদের ফেরতের বিষয়ে কথা দেয়নি মিয়ানমার

February 20, 2018 | 5:03 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: দুই দেশের সীমান্তের শূন্য রেখায় অবস্থানরত নির্যাতিত সাড়ে ৬ হাজার রোহিঙ্গাদের আর ভয়-ভীতি দেখাবে না বলে জানিয়েছে মিয়ানমার। তবে কবে নাগাদ এই রোহিঙ্গাদের ফেরত নিবে সে বিষয়ে মঙ্গলবারের বৈঠকে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানায়নি দেশটি।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তের ওপারে শূন্য রেখায় অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের নিজদেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের সঙ্গে মঙ্গলবার সকালে বৈঠক করে বাংলাদেশ। ওই বৈঠকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে রোহিঙ্গাদের আর ভয়-ভীতি না দেখানোর আশ্বাস দেয়। বৈঠক শেষে কক্সবাজারের শরণার্থী প্রত্যাবাসন বিষয়ক কমিশনার আবুল কালাম এনডিসি সারাবাংলাকে এই তথ্য জানান।

কমিশনার আবুল কালাম এনডিসি সারাবাংলাকে বলেন, বৈঠকে মিয়ানমারের পক্ষে দেশটির ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসক পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা। শূন্য রেখায় অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের বিষয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে মিয়ানমার তাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়েছে। বৈঠকে দেশটির প্রতিনিধি দল বলেছে, তারা তাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করবে।

বিজ্ঞাপন

কমিশনার আবুল কালাম এনডিসি সারাবাংলাকে আরো বলেন, শূন্য রেখায় অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের সঙ্গেও আমরা আলাপ করেছি। এই সময় মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলও উপস্থিত ছিল। রোহিঙ্গারা বলেছে, তারা পূর্ণ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না পেলে ফিরে যাবে না। রোহিঙ্গারা আরো বলেছে, মিয়ানমারের উপমন্ত্রীসহ দেশটির সেনারা শূন্য রেখায় এসে তাদের ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে। এতে রোহিঙ্গারা আতঙ্কিত।

আবুল কালাম বলেন, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বৈঠকে বলেছে, তারা শূন্য রেখায় অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের আর ভয়-ভীতি দেখাবে না।

বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক জানান, মিয়ানমারের ঢেকিবুনিয়া সীমান্তের তংপিও লিতওয়ে নামক স্থানে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় শুরু হয়ে ২ঘন্টা ধরে চলে দুই দেশের জয়েন্ট ওর্য়াকিং গ্রুপের বৈঠক। বৈঠকে ১২ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল মান্নান।

বিজ্ঞাপন

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে গত বছরের আগস্টে দেশটির সেনাবাহিনীর নির্মম নির্যাতন শুরু হলে বাংলাদেশ সীমান্তে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ঢল নামে। নতুন করে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা ইতোমধ্যে প্রায় সাত লাখে পৌঁছেছে। এর আগে থেকে প্রায় সাড়ে চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ১১ লাখ। তারমধ্যে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের শূণ্য রেখায় অবস্থান নেয় সাড়ে ৬ হাজার রোহিঙ্গা। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নির্যাতনকে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র প্রধানরা গণহত্যা বলে অভিহিত করেছেন।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীব্র সমালোচনার মুখে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে গত নভেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করে মিয়ানমার। যদিও চুক্তি বাস্তবায়নে বিভিন্ন অযুহাতে সময়ক্ষেপন করছে দেশটি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারত, চীন ও রাশিয়ার সমর্থণের কারণে মিয়ানমার এখনো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে পাত্তা দিচ্ছে না।

সারাবাংলা/জেআইএল/এমএইচ/এমএস /

 

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন