বিজ্ঞাপন

‘স্বয়ংক্রিয়ভাবে নীরবে নিঃশব্দে কারচুপির প্রকল্প ইভিএম’

January 6, 2020 | 7:43 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনকে (ইভিএম) স্বয়ংক্রিয়ভাবে নীরবে নিঃশব্দে ভোট কারচুপির প্রকল্প হিসেবে অভিহিত করেছেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, পৃথিবীর দুইশ দেশের মধ্যে মাত্র চারটি দেশে ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে। এই চারটি দেশের সরকার ও নির্বাচন কমিশন— কোনোটিই বিতর্কিত নয়। বাংলাদেশের সরকার ও নির্বাচন কমিশন— দু’টিই বিতর্কিত। ফলে স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য ইভিএম একটি অন্তরায়।

সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিকেলে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

আরও পড়ুন- সিটি নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের তীব্র বিরোধিতা বিএনপির

বিজ্ঞাপন

আমীর খসরু বলেন, ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন, প্রার্থীবিহীন একটি নির্বাচন করে সরকার ক্ষমতা দখল করেছে। ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর মধ্যরাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে সরকার ক্ষমতা দখল করে। এখন আবার ইভিএম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে। এখন ক্ষমতা দখলের একটি নতুন প্রক্রিয়া দেখতে পাচ্ছি, সেটি হলো ইভিএম।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ইভিএমের মাধ্যমে ভোটচুরির যে প্রক্রিয়া, সেটি একেবারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নীরবে নিঃশব্দে ভোটচুরির একটি প্রকল্প ছাড়া আর কিছুই না। নির্বাচনের ফল কী হবে, সেটা নির্ভর করবে ইভিএমের প্রোগ্রামের ওপর। জনগণ যে ভোট দেবে, সে ভোটটা কাকে দেবে, তার কোনো পেপার ট্রে নেই। ট্রেইল না থাকার কারণে ইভিএমের টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য জামিলুর রেজা চৌধুরী এই প্রকল্পে সই করেননি। ফলে সেখানে ভেরিফাই বা পরীক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই। তারপরও নির্বাচন কমিশন রহস্যজনক কারণে ইভিএম প্রক্রিয়া বেছে নিয়েছেন।

আরও পড়ুন- ইসির সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, উপস্থিত তাবিথ-ইশরাকও

বিজ্ঞাপন

কারচুপি করতে যেন সুবিধা হয়, সে কারণেই ইভিএম বেছে নেওয়া হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, যেভাবে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ব্যালট বাক্স ভর্তি করা হয়েছে, সরকার প্রার্থীবিহীন নির্বাচনে জয়লাভ করেছে, একইভাবে নতুন করে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে কারচুপির জন্য এই ভোটের আয়োজন করা হয়েছে। তাই জনগণ সারাদিন ভোট দেবে, কিন্তু তাতে কোনো লাভ হবে না। কারণ ইভিএমের প্রোগ্রামে যেভাবে সেট করা আছে, সেভাবেই ফলাফল আসবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির উদাহরণ দিয়ে আমীর খসরু বলেন, সেখানে নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও প্রযুক্তির মাধ্যমে টাকা চুরি করা হয়েছে। ইভিএমেও একই প্রক্রিয়ায় ভোট চুরি হবে। এর মাধ্যমে জনগণ তাদের ভোটাধিকার ফিরে পাবে না।

সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীদের হয়রানির অভিযোগ

সিটি করপোরেশন নির্বাচন থেকে বিএনপি প্রার্থীদের দূরে রাখার জন্য সরকার নানাভাবে চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, এরই মধ্যে আমাদের একজন প্রার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরেকজনকে অপহরণ করা হয়েছে, আজ তাকে মুন্সিগঞ্জের আলু খেতে পাওয়া গেছে। এছাড়াও সংরক্ষিত নারী আসনের আমাদের এক প্রার্থীর বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। ভয়-ভীতি দেখিয়ে নির্বাচন থেকে সরিয়ে রাখার জন্য সরকার অতীতে যে প্রক্রিয়া সরকার শুরু করেছিল, পুলিশি অভিযানের নামে তা আবারও শুরু হয়েছে। অভিযানের নামে দুই সিটিতে বিএনপি প্রার্থীর সমর্থক, এজেন্ট, কর্মীদের বাছাই করে করে হয়রানি করা হচ্ছে। বিষয়টি আমরা নির্বাচন কমিশনে তুলে ধরেছি। ইসি আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছে, এ ধরনের অভিযান এবার হবে না।

বিজ্ঞাপন

নির্বাচনের সময় বিএনপির একজন প্রার্থীকে গ্রেফতার বিষয়ে তিনি বলেন, ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত কোনো ধরনের গ্রেফতার অভিযান চালানো হবে না বলে আমাদের জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তারা আরও জানিয়েছে, ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত আর কাউকে গ্রেফতার করা হবে না, যদি না দৃশ্যমান বড় ধরনের কোনো অঘটন না ঘটে। আগামী ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত আগের কোনো মামলাতেও কাউকে গ্রেফতার করা হবে না।

এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকব। কারণ তাতে করে জনগণ দেখতে পারবে, দেশে কিভাবে নির্বাচন হচ্ছে।

ইসির সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি প্রতিনিধি দলে ডিএনসিসি নির্বাচনে দলের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও ডিএসসিসিতে মেয়র প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন উপস্থিত ছিলেন। তাদের সঙ্গে আরও ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বিজন কান্তি সরকার ও বিএনপি’র যুগ্ম-মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

এদিকে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, কবিতা খানম ও রফিকুল ইসলাম উপস্থিত রয়েছেন বৈঠকে। আরও উপস্থিত আছেন ইসি’র সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ আলমগীর এবং দুই সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন ও আবুল কাসেম।

সারাবাংলা/জিএস/টিআর

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন