বিজ্ঞাপন

ভালভার্দের বহিষ্কার সমাধান নাকি বলি?

January 14, 2020 | 3:03 pm

স্পোর্টস ডেস্ক

২০০৩ সালে শেষবার কোনো কোচকে বহিষ্কার করেছিল বার্সেলোনা। এরপর থেকে কোনো কোচকেই বহিষ্কার পর্যন্ত যেতে হয়নি শেষ ১৭ বছরে। তবে এই ইতিহাস এবার পেছনে ফেলে দিল কাতালান ক্লাবটি। স্প্যানিশ সুপারকাপে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের কাছে হেরে বাদ পড়ায় বিদায় ঘন্টায় বেজেছে আর্নেস্তো ভালভার্দের। তবে তাঁর ওপর বার্সেলোনার অসন্তোষ কেবল সুপার কাপের হারের জন্য নয়। গেল দুই মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের নক আউটে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে করুন ভাবে। আর সুপার কাপের হারে সে অসন্তোষ পৌঁছে যায় চরমে যা শেষ পর্যন্ত গড়ায় ভালভার্দের বহিষ্কার পর্যন্ত।

বিজ্ঞাপন

লুইস এনরিকের কাছ থেকে ২০১৭ সালের মে মাসে বার্সেলোনার দায়িত্ব বুঝে নিয়েছিলেন আর্নেস্তো ভালভার্দে। আড়াই মৌসুম বার্সেলোনার ডাগ আউটে থেকে জিতেছেন দু’টি লা লিগা, একটি কোপা দেল রে এবং একটি স্প্যানিশ সুপার কাপ। গেল মৌসুমে দলকে নিয়ে গিয়েছিলেন কোপা দেল রে’র ফাইনালেও। তবে ভ্যালেন্সিয়ার কাছে হেরে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে রানার আপ হয়েই।   তবে কেবল কোপা দেল রে কিংবা স্প্যানিশ সুপারকাপে হারাতেই ভালভার্দের ওপর ক্ষভ বাড়েনি কাতালান ক্লাবটির। গেল দুই মৌসুমে যথক্রমে এএস রোমা এবং লিভারপুলের বিপক্ষে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে বাদ পড়ায় ক্ষোভটা বেড়েছে বহুগুণে। আর একই সময়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ জিতেছে টানা তিনটি চ্যাম্পিয়নস লিগ। আর নিজেদের নিয়ে গেছে অনন্য এক উচ্চতায়। এসব নিয়েই ক্ষোভটা তেড়েফুঁড়ে উঠেছিল ভালভার্দের ওপর।

তবে সব ভুল কি ভালভার্দের একারই ছিলো? উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের দিকে নজর দিলে দেখা মিলবে কোচের থেকে খেলোয়াড়দের উদাসীনতায় কাতালানদের বিদায়ের মূখ্য কারণ। বার্সেলোনা শেষবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জয় করেছিল ২০১৪/২০১৫ মৌসুমে। এরপর টানা দুই মৌসুম কোয়ার্টার ফাইনাল আর এক মৌসুম সেমি ফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে লিওনেল মেসির দলকে। আর যার সম্পূর্ণ দায়ভার দেওয়া হয়েছে এই সময়ে বার্সেলোনার ডাগ আউটে থাকা দুই কোচ লুইস এনরিকে এবং আর্নেস্তো ভালভার্দেকে।

কেবল কোচের ওপর দায় ভার চাপিয়েই দায় সারা ভাবটা দেখালেন বার্সার খেলোয়াড়রা। গেল তিন মৌসুমে বার্সেলোনার দুই মহাতারকা লুইস সুয়ারেজ আর লিওনেল মেসির পারফরম্যান্সের ওপর চোখ দিলে দেখা যাবে ঘরের মাঠে আগুন ঝরা পারফরম্যান্স আর প্রতিপক্ষের মাঠে যেন নিজেদের খুজেই পাননা এই দুই স্ট্রাইকার।

বিজ্ঞাপন

২০১৬/২০১৭ থেকে ২০১৮/২০১৯ এই তিন মৌসুমে লুইস সুয়ারেজ এবং লিওনেল মেসির উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে ঘরের মাঠ ন্যু ক্যাম্পের পারফরম্যান্স নজর কাড়া।

বিজ্ঞাপন

শেষ তিন মৌসুমে লিওনেল মেসি এবং লুইস সুয়ারেজের এওয়ে ম্যাচের পারফরম্যান্স।

বার্সেলোনার আক্রমণভাগের দুই কাণ্ডারির পারফম্যান্সের দিকে নজর দিলে দেখা যাচ্ছে ঘরের মাঠে নিজেদের নামের পাশে একের পর এক গোল আর অ্যাসিস্ট তুলতে পারলেও এওয়ে ম্যাচে বেশ নিষ্প্রভ দুই মহাতারাকাই। লুইস সুয়ারেজ শেষ তিন মৌসুমে কোনো গোল আর অ্যাসিস্টের দেখা পাননি। তবে এওয়ে ম্যাচে নিষ্প্রভ হলেও ঘরের মাঠে লুইস সুয়ারেজ করেছেন ৫ গোল আর ৮টি অ্যাসিস্ট।

বিজ্ঞাপন

একই ভাবে লিওনেল মেসির পারফরম্যান্সের দিকে নজর দিলে দেখা মিলছে ঘরের মাঠে শেষ তিন মৌসুমে গোল করেছেন ২২টি আর অ্যাসিস্ট করেছেন ৫টি। প্রতিপক্ষের মাঠে গেলে দেখা মিলে ঠিক তার বিপরীত চিত্র। গেল তিন মৌসুমে প্রতিপক্ষের মাঠে লিওনেল মেসি গোল করেছেন ৭টি আর অ্যাসিস্ট মাত্র একটি।

গেল তিন মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের নক আউট পর্বে লিওনেল মেসি গোল করেছেন ১০টি আর অ্যাসিস্ট করেছেন তিনটি। অন্যদিকে লুইস সুয়ারেজ এই তিন মৌসুমে চার গোল আর ছয়টি অ্যাসিস্ট করেছেন।

অর্থাৎ চ্যাম্পিয়নস লিগের দিকে নজর দিলে দেখা মিলছে লিওনেল মেসি আর লুইস সুয়ারেজ নিজেদের নামের সঙ্গে করতে পারছেন না সুবিচার। আর শেষ পর্যন্ত দলকে বাদ পড়তে হচ্ছে চ্যাম্পিয়নস লিগের নক আউট পর্ব থেকেই। আর শেষ পর্যন্ত দায় ভার বর্তেছে কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দের ওপর। কেবল কোচের পরিবর্তনই বার্সেলোনার এই দুর্দশা দূর করতে পারবে কিনা বলে দিবে সময় তবে নক আউট পর্বে বার্সেলোনার খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সের কোনো উন্নতি না ঘটলে মৌসুমের পর মৌসুম অধরা রয়ে যাবে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা।

সারাবাংলা/এসএস

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন