বিজ্ঞাপন

ঘন কুয়াশায় নষ্ট হচ্ছে বোরো বীজতলা, আলু নিয়েও শঙ্কায় কৃষক

January 17, 2020 | 7:56 am

মো. শামীম কাদির, ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট

জয়পুরহাট: ঘন কুয়াশার কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বোরোর বীজতলা। একইসঙ্গে আলুর ক্ষেত নিয়েও শঙ্কায় পড়ছেন কৃষকরা। বারবার কীটনাশক স্প্রে করেও শঙ্কা কাটছে না তাদের। তবে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, বৈরি আবহাওয়ায় ফসল বাঁচাতে কি কি করতে হবে তা জানিয়ে কৃষকদের লিফলেট দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই ঘন কুয়াশা কেটে যাবে বলেও আশা কৃষি কর্মকর্তাদের।

বিজ্ঞাপন

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ বছর আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩৭ হাজার ৯১৭ হেক্টর। শুরুতে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় জেলায় ৩৮ হাজার ৩২৫ হেক্টর জমিতে  আলুর চাষ হয়েছে। কিন্তু টানা শৈত্যপ্রবাহ, কুয়াশা ও অকালের বৃষ্টির কারণে বীজতলা ও আলুক্ষেত নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় দিন কাটছে কৃষকদের। আলু গাছে নাভিধসা রোগের আক্রমণ হওয়ার আশঙ্কায় বার বার ছত্রাকনাশক স্প্রে করছেন কৃষকরা।

কৃষকরা জানান, ক্ষেতে রোগ ধরলে সম্পূর্ণ আলু গাছ নষ্ট হয়ে যাবে। এজন্য সার্বক্ষণিক পরিচর্যা ও বার বার ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে। দিনে স্প্রে করার পর কুয়াশা এবং বৃষ্টির কারণে গাছ পানিতে ধুয়ে যাচ্ছে। ফলে পরের দিন আবারও স্প্রে করতে হচ্ছে। এরই মধ্যে কেউ কেউ তিন থেকে চার বার ছত্রাকনাশক স্প্রে করেছেন জমিতে।

বিজ্ঞাপন

জয়পুরহাট সদর উপজেলার সরদার পাড়া গ্রামের কৃষক ওয়াদুদ সরদার বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ থেকে বৈরি আবহাওয়ার কারণে আলু ক্ষেত নিয়ে খুব দুঃশ্চিন্তায় আছি। কয়েকদিন থেকে সূর্যের দেখা নেই। প্রচণ্ড শীত, ঘন কুয়াশা আর মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত দুই হাজার টাকা খরচ করে ক্ষেতে দুই বার ছত্রাকনাশক স্প্রে করেছি। জানি না ভাগ্যে কি আছে!’

অন্যদিকে, ঘন কুয়াশার কারণে জেলার অধিকাংশ বোরোর বীজতলা হলুদ বর্ণ হয়ে গেছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে অনেক কৃষক বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকেও দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও শেষ রক্ষা হচ্ছে না। অনেকের বীজতলাও নষ্ট হয়ে গেছে।

বিজ্ঞাপন

জয়পুরহাট পৌরসভার পাঁচুরচক মহল্লার কৃষক আব্দুর রশিদ জানান, প্রচণ্ড কুয়াশায় তার বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন নতুন করে ফের বীজ বুনে শীত থেকে বীজতলা বাঁচানোর চেষ্টা করছেন তিনি।

সদর উপজেলার বানিয়াপাড়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন জানান, বীজতলা নষ্ট হওয়ায় হয়তো দেড় থেকে দু’হাজার টাকা ক্ষতি হচ্ছে কিন্তু অর্থের চেয়ে সময়ের ক্ষতি হচ্ছে বেশি। বীজতলা নষ্ট হওয়ার কারণে সময় মত বোরো ধান রোপণ করা যাবে না বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন এই কৃষক।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা বাবলু কুমার সূত্রধর বলেন, ‘শীতের কারণে বোরোর বীজতলা ও আলু ক্ষেতের ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকরা শঙ্কিত হলেও এখন পর্যন্ত ফসল ভালো আছে। বৈরি এই আবহাওয়ার মধ্যে কৃষকদের করণীয় বিষয়ে লিফলেট বিতরণের পাশাপাশি নানা পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।’ আবহাওয়ার বৈরিভাব কেটে গেলে জেলায় এবার বোরো ও আলুর বাম্পার ফলন হবে বলেও আশা করছেন এই কর্মকর্তা।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমও/ইএইচটি

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন