বিজ্ঞাপন

‘মুমিনুল অনেক আগ্রাসী হয়েছে, সৌম্যদের সময় দিতে হবে’

February 21, 2018 | 5:27 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকায় পা রাখার পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে মুখে যেন প্রায় কুলুপ এঁটেই রেখেছিলেন। শ্রীলঙ্কার হয়ে প্রথম অধ্যায়টা পুরনো সঙ্গী বাংলাদেশের বিপক্ষে- সেটা বাড়তি সুবিধা দেবে কি না এমন প্রশ্নেও কোনো উত্তর দেননি। সিরিজে শ্রীলঙ্কা দাপটের সঙ্গে খেলতে শুরু করেছে, চন্ডিকা হাথুরুসিংহেও অনেক বেশি নমনীয় হয়েছেন। শেষের দিকে তো বলেই বসলেন, বাংলাদেশের নাড়ি-নক্ষত্র সবকিছুই জানতেন বলে পরিকল্পনায় সুবিধা হয়েছে।

যাওয়ার আগে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন আরও অনেক কিছু। মুমিনুলকে বাদ দেওয়া, মাশরাফির নেতৃত্ব, সৌম্য বা সাব্বিরের প্রতি পক্ষপাতিত্ব- এসব অনেক কিছু নিয়েই অকপটে কথা বলেছেন শ্রীলঙ্কার নতুন কোচ।

অভিযোগের ডালি একটা সময় তার প্রতি কম জমা হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের শেষে ওভাবে হুট করে চলে যাওয়াটা পেশাদারি ছিল কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। শেষের দিকে তার স্বভাব একনায়কসুলভ হয়ে উঠেছিল কি না, উঠেছে এমন প্রশ্নও। হাথুরুসিংহে অবশ্য কোনোটাই স্বীকার করেননি, আবার আত্মপক্ষ সমর্থন করতে গিয়ে খুব বেশি কথাও খরচ করেননি। বলতে গেলে পাশ কাটিয়েই গেছেন। তবে কিছু কিছু ব্যাপারে নিজের মতামত জানিয়েছেন সরাসরিই।

বিজ্ঞাপন

এর মধ্যে মুমিনুল প্রসঙ্গটা ঘুরে ফিরে এসেছে অনেকবারই। গত বছর শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়েই মুমিনুল বাদ পড়েছিলেন দল থেকে। হাথুরু তখন এমনও বলেছিলেন, অফ স্পিনে মুমিনুলের দুর্বলতা আছে। এরপর মুমিনুল নিজেকে ফিরে পাননি সেভাবে, তবে চট্টগ্রাম টেস্টে সেঞ্চুরি করার পর স্বভাববিপরীত আগ্রাসী উদযাপনে যেন একটা জবাব দিয়েছেন। হাথুরু সেটা খেয়ালও করেছেন, ‘হ্যাঁ, আমি ওকে এরকম কখনো করতে দেখেনি। তবে ও কেন এটা করলো সেটা তো মানুষের কাছে জিজ্ঞেস করে লাভ নেই, ও-ই ভালো বলতে পারবে।’

হাথুরু অবশ্য মানলেন, মুমিনুল আগের চেয়ে বেশ কিছুটা উন্নতি করেছেন টেস্টে, ‘সে খুবই ভালো একজন টেস্ট খেলোয়াড়। তবে তার উন্নতি করার জায়গা আছে। কিছু উইকেটে সে খুবই ভালো, কিন্তু একটু স্পোর্টিং উইকেটে ওকে আরও ভালো করতে হবে। হ্যাঁ, গত তিন বছরে সে অনেক উন্নতি করেছে। আগের চেয়ে অনেক বেশি আগ্রাসীও হয়েছে। সে খুবই বুদ্ধিমান, নিজের টেকনিকও বদলেছে অনেকখানি।’

মুদ্রার অন্য পিঠেই থাকে, মুমিনুলকে যেমন সুযোগ দিতে চাননি, এই সময়ে বেশ কিছুদিন রানখরায় থাকার পরও সৌম্য বা সাব্বিরদের এতোটা সুযোগ দিয়েছেন কেন? এখানে কি ব্যক্তিগত কোনো পক্ষপাত ছিল? হাথুরুর আত্মপক্ষ সমর্থন, ‘আপনি সব খেলোয়াড়কে জিজ্ঞেস করুন। সিনিয়র-জুনিয়র আমি আলাদা করিনি। সবাইকে সমানভাবেই দেখেছি। সৌম্য খুবই প্রতিভাবান একজন খেলোয়াড়, ওকে ঠিকমতো দেখাশুনো করলে বাংলাদেশের জন্য ও অনেক গুরুত্বপূর্ন হবে। ভালো খেলোয়াড় আরও আছে, ওদেরকে আমি সময় দেইনি ব্যাপারটা কিন্তু তা নয়। আমি যখন এসেছি রিয়াদ তখন রান পাচ্ছিল না। এখন ওর তিনটি আইসিসি সেঞ্চুরি আছে। মুশফিক, তামিমকে সময় দিয়েছি, সাব্বির-ইমরুলকেও। আমি তো খুবই অবাক হয়েছি কেন সাব্বির দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে খেলানো হয়নি। মিরাজও আছে। এদেরকে সময় দিলে এরাই হবে দলের ভবিষ্যত হবে। ক্রিকেট হচ্ছে ব্যর্থতার খেলা। আপনাকে এখানে ধৈর্য ধরতে হবে। যথেষ্ট সুযোগ, সময় দিতে হবে। প্রতিভা বুঝতে পারলে সেটা বিকাশের জন্য বাড়তি সময় দিতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

প্রশ্ন উঠেছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায়ে হাথুরুর ভূমিকা নিয়েও। এখানেও হাথুরু কূটনৈতিক পথেই হাঁটলেন, ‘আমার পক্ষে এটা বলা কঠিন, কারণ এখন আমি আর বাংলাদেশের কোচ নই। এখন আমি কিছু বললে এটা নির্বাচকদের প্রভাবিত করতে পারে। আমার পক্ষে এটা বলাটা শোভন নয়। ওদের নিজেদেরই নেতা খুঁজে বের করতে হবে।’

প্রশ্ন ছিল মোস্তাফিজকে নিয়েও, তার শুরু থেকে চোট সবকিছুই তো কাছ থেকে দেখেছেন হাথুরুসিংহে। শ্রীলঙ্কার কোচ অবশ্য মোস্তাফিজকে নিয়ে ধৈর্য হারাতে নিষেধ করলেন, ‘ওর যে অস্ত্রোপচার হয়েছে, সেটা থেকে সেরে উঠতেই এক দেড় বছর লাগবে। সে তার কাটারটাও ফিরে পাচ্ছে। সমস্যা হচ্ছে, এক ধরনের উইকেটে সে খুবই কার্যকরী আবার অন্য উইকেটে সেভাবে হচ্ছে না। এর কারণ হচ্ছে মিরপুরে যেভাবে সে কাটার দিতে পারে, অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ডে তো সেভাবে দিতে পারবে না।’

সারাবাংলা/এএম/এমআরপি

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন