বিজ্ঞাপন

গর্বের একুশ, উদযাপনের একুশ

February 21, 2018 | 9:57 pm

মাকসুদা আজীজ, অ্যাসিস্ট্যন্ট এডিটর

বিজ্ঞাপন

ঢাকা : ‘৫২র একুশে ফেব্রুয়ারি। দিনটি বেদনার, দিনটি কষ্টের স্মৃতির। তবু এ দিনটি অর্জনের, রক্তের বিনিময়ে ভাষার অধিকার আদায় করার গর্বের।

একুশের প্রথম প্রহর কেটে যায় প্রভাত ফেরিতে, শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানাতে। এরপর একুশ হয়ে যায় উদযাপনের। ৬৬ বছর পেরিয়ে এসে এই প্রজন্মের কাছে একুশ যত না শোকের তার চেয়ে অনেক বেশি আনন্দের। ১৯৯৯ সাল থেকে একুশ শুধু আমাদের নয়। একুশে ফেব্রুয়ারি পৃথিবীর সকল ভাষার মানুষদের নিজ ভাষা উদযাপনের দিন। ইউনেস্কো বাংলা ভাষার মানুষদের ভাষার অধিকার অর্জনের দিনটির সম্মান করে একুশে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।

সেই থেকে একুশে ফেব্রুয়ারির শোকের গায়ে লেগেছে উৎসবের ছোঁয়া। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ফ্যাশান হাউজগুলোও বের করে একুশের পোশাক। বর্ণমালা ছাপা সেই জামা গায়ে দিয়ে সব বয়সী মানুষ বের হয়ে গিয়েছে। আজকের দিন বড় গলায় অর্জনের কথা বলার।

বিজ্ঞাপন

শহীদ মিনার থেকে বের হয়েই দলে দলে সবাই ঢুকে যাচ্ছে বই মেলায়। প্রায় সবার সঙেই ছোট ছোট শিশু।

ছোট্ট আদিবা এসেছে ভাই বাবা ও চাচার সঙ্গে। তার মাথায় হিযাব। ছোট্ট এ মেয়েটি পড়ে মাদ্রাসায়। একুশে ফেব্রুয়ারির জনসমাগমে সেও হয়েছে শামিল। ভাষা সৈনিকদের সংগ্রামের দেওয়াল চিত্রের পাশে দাঁড়িয়ে গিয়েছে তারা। সংগ্রামে হয়তো অংশ নিতে পারেনি, কিন্তু ওরা তো এই সংগ্রামের উত্তরসূরি!

বিজ্ঞাপন

বেলুন ওয়ালারা বেলুন নিয়ে মেলার বাইরে পসরা জমিয়েছে আর শিশু একাডেমির সামনে রঙ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন শিল্পীরা। উদ্দেশ্য রাঙিয়ে দিবেন মেলার পথের মানুষদের।

গালে একুশের প্রতীক রাঙিয়ে মেলায় ঘুরছে আরধ্যা বাবা মায়ের হাত ধরে সে এসেছে মেলায়। কিনেছে বই, জেনেছে পূর্বপুরুষদের গৌরবের অর্জনের কথা। এ পরিবারের সবাই একরঙের জামা পরে হাটছেন মেলায়।

আজানের বয়স মাত্র সাড়ে তিন। সে এখনও বর্ণমালার সঙে পরিচিত নয়। তার মা তাই তাকে কিনে দিয়েছে বর্ণমালার পাজল। আর বিশাল একটা বই। বইটা আজানের চেয়েও বড় সেটা জড়িয়ে কী যে খুশি সে! হাতের চরকিটা কখনও হারিয়ে ফেলেছে সে খবরই নেই। আজ সে শুধুই বই পড়বে!

বিজ্ঞাপন

আজানই অবশ্য বইমেলার সবচেয়ে ছোট ক্রেতা নন। পাচ মাস, ছয় মাসের ছোট ছোট চড়ুই পাখির মতো শিশুরা বাবা মায়ের কোলে চড়ে এসেছে ভাষাকে জানতে, ঐতিহ্যকে চিনতে। আর এই চেনা পরিচয়ের ফাকে ছোট্ট শাবিব তো মায়ের কোলে ঘুমিয়েই পড়েছে।

ওরা হয়তো জানে না বাংলা কী, ভাষা কী, অর্জন কী। ওরা হয়তো কখনও জানবে না এই ভাষায় কথা বলার অধিকার আদায়ের সংগ্রাম কত কঠোর ছিল। তবে বড় হয়ে তারা এটা জানবে, বাংলা তার পরিচয়, বাংলা তার অধিকার। এই অধিকার আদায়ের একুশ তাই তার খুব গর্বের, আড়ম্বরে উদযাপনের।

সারাবাংলা/এমএ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন