বিজ্ঞাপন

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে শুরু হতে পারে

February 22, 2018 | 2:13 pm

এম এ কে জিলানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আগামী মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে শুরু হতে পারে। ঢাকা এবং নেপিডোর কূটনৈতিক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

নেপিডোর কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে আট হাজার ৩২ জন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটি তালিকা মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লে. জে. কাউ সুইয়ের হাতে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। মিয়ানমার ওই তালিকা যাচাইয়ের জন্য দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দিয়েছে।

মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তালিকা যাচাইয়ের পর দেশটির ইমিগ্রেশন কার্যালয়ে পাঠাবে। ইমিগ্রেশন কার্যালয় যাচাই বাছাইয়ের তথ্য-উপাত্ত মিলিয়ে দেখে সন্তুষ্ট হলেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাস্তবায়নের জন্য সবুজ সংকেত মিলবে।

বিজ্ঞাপন

যাচাই-বাছাইয়ের পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে আরও দুই সপ্তাহ সময় লাগবে বলে নেপিডোর কূটনৈকিত সূত্রে জানা গেছে। এই হিসেবে মার্চের ১০ তারিখের পর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে বলে ঢাকা ও নেপিডো আশা করছে।

মিয়ানমারের সমাজ কল্যাণমন্ত্রী ইউ মিন মাইয়া আই জানান, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে আমরা খুব দ্রুততার সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। যাচাই বাছাই শেষ হলে প্রতিদিন ৩০০ রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসন করা হবে। আর যাচাই বাছাই শেষ করতে আরও দুই সপ্তাহ লাগতে পারে।

এদিকে, কক্সবাজারের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা জানান, নিরাপদ এবং পূর্ণ নাগরিক অধিকারের নিশ্চয়তা না পেলে তারা মিয়ানমারে ফিরতে চান না।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, জাতিসংঘ জানিয়েছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসেনর জন্য মিয়ানমার এখনো অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারেনি।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য আট হাজার ৩২ জনের একটি তালিকা মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লে. জে. কাউ সুই এর কাছে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হস্তান্তর করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। ঢাকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের পর্যায়ক্রমে ফিরিয়ে নিবে বলে মিয়ানমার কথা দিয়েছে। আমরা আজ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য প্রায় আট হাজার ৩২ জনের একটি তালিকা হস্তান্তর করেছি। তারা এই তালিকা যাচাই-বাছাই করে জানাবে। তারপর রোহিঙ্গারা তাদের বসত-ভিটায় ফিরতে শুরু করবে।’

রাখাইন প্রদেশে গত বছরের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অবর্ননীয় নির্যাতন শুরু হলে বাংলাদেশ সীমান্তে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ঢল শুরু হয়। নতুন করে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা ইতোমধ্যে প্রায় সাত লাখে পৌঁছেছে। এর আগে থেকে প্রায় সাড়ে চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ১১ লাখ। তার মধ্যে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের শূন্য রেখায় অবস্থান নেয়েছে সাড়ে ৬ হাজার রোহিঙ্গা। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নির্যাতনকে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র প্রধানরা গণহত্যা বলে অভিহিত করেছেন।

আন্তর্জাতিক সমাজের তীব্র সমালোচনার মুখে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে গত নভেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করে মিয়ানমার। কিন্তু বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাহানা দেখিয়ে সময়ক্ষেপন করছে দেশটি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারত, চীন ও রাশিয়ার সমর্থনের কারণে মিয়ানমার এখনো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে পাত্তা দিচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেআইএল/এমআই

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন