বিজ্ঞাপন

চবিতে বাহারি পিঠার উৎসব

January 26, 2020 | 4:40 pm

চবি করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: আবহমান গ্রাম বাংলার অন্যতম সংস্কৃতি হলো পিঠা উৎসব। আধুনিকতার ছোঁয়ায় ও নগরায়নের ফলে এই পিঠা উৎসব বিলুপ্তির পথে। বাঙালির এই পিঠা উৎসবের সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে এবং তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) চলছে পিঠা উৎসব। এই উৎসবের আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক জোট।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে পিঠা উৎসব শুরু হয়। যা চলবে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। তারপর অনুষ্ঠিত হবে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

উৎসবে নানা ধরনের পিঠার মধ্যে আছে- পুড়িং, লেখন পুড়িং, ভাপা, ঝাল পিঠা, সাগুর লাড্ডু, গাজর লাড্ডু, পাটিসাপটা, ঝিনুক পিঠা, ফিরানি, রসগজা, বিন্নি চালের পাটিসাপটা, নকশী পিঠা, ছাঁচ পিঠা, বাঁধাকপির বল, পাতা বাহার, চিকেন বল, পাকন, মাছ পিঠা, বুন্দি পিঠা, পুলি পিঠা, দুধ চিতই, মাল পোয়া, গেলাপ পিঠা, ফুল ঝুড়ি, কামরাঙ্গা পিঠা, লবঙ্গলতিকাসহ নানা ধরনের পিঠা।

বিজ্ঞাপন

এখন শীতকাল। শীতকে বরণ করে নিতে হাজির হয় পিঠা উৎসব। শীতকালে পিঠা উৎসবে মেতে উঠা বাঙালির চিরায়ত রূপ। এই সময়টাতে টাটকা চালে তৈরি করা হয় হরেক রকমের পিঠা। শীতের সকালে ঠাণ্ডা হিম বাতাসে উৎসবের আমেজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) নতুন মাত্রা পেল। পিঠা বাংলার নিজস্ব আদিম আভিজাত্যপূর্ণ খাদ্যদ্রব্য।

পিঠা আবহমান বাংলার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। শীতের আমেজকে উপভোগ্য করে তুলতে ভুল করেননি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিক্ষার্থীরা। ‘নতুন ধানে নতুন প্রাণে, চলো মাতি পিঠার গানে’ এই স্লোগান ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে দিনব্যাপী এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। পিঠা উৎসবে শীতকে আরও উৎসবমুখর করতে দিনভর আয়োজন করেছিলেন পিঠা উৎসব। সকাল থেকেই হরেক রকমের পিঠার সমাহার ঘটিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোটের শিক্ষার্থীরা।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পিঠা উৎসব উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরিণ আখতার। তিনি বলেন, পিঠা খাওয়া গ্রামবাংলার মানুষের চিরায়ত ঐতিহ্য হিসেবে বিবেচিত। কালের বিবর্তনে এ ঐতিহ্য এখন ম্লান হয়ে আসছে। তবে শীত এলে বাংলার ঘরে ঘরে এখনো পিঠা তৈরির উৎসব শুরু হয়। এ সমস্ত নান্দনিক আয়োজন পারস্পরিক সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করে। গ্রাম বাংলার নানা বৈচিত্রের পিঠা সম্পর্কে শহুরে জীবনে তেমন সাড়া না জোগালেও গ্রামাঞ্চলে এখনো এর প্রচলন সমধিক। এখানে অনেক পিঠা দেখতে পেলাম, যেগুলো আমাদের আবহমান বাংলার ঐতিহ্যের প্রতিচ্ছবি।

বিজ্ঞাপন

আয়োজকেরা যা বললেন…

বিশ্ববিদ্যালয় সবচেয়ে পুরনো সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘অঙ্গন’। অঙ্গনের সাধারণ সম্পাদক সর্বোত্তমা চাকমা সারাবাংলাকে বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব হারাতে বসেছে। সবসময় পিঠা উৎসব হয় না। আমাদের আজকের এই পিঠা উৎসবের মাধ্যমে বাঙালির সংস্কৃতিকে জীবিত করা। যদিও বড় পরিসরে আয়োজন করতে পারিনাই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে যদি আমরা সাহায্য পাই তাহলে আগামীতে বড় ধরনের আয়োজন করতে পারব বলে মনে করছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম আলো বন্ধুসভার সাংগঠনিক সম্পাদক রুবাইয়া রাখী সারাবাংলাকে বলেন, গ্রাম বাংলার অন্যতম উতসব হলো পিঠা উৎসব। নগরায়নের ফলে এই পিঠা উৎসব হারাতে বসেছে। এখন অনেকে গ্রাম বাংলার পিঠা বানাইতে পারেন না। এভাবে অনেক পিঠা বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।

মূলত তাদের কাছে এই পিঠা উৎসবের বার্তা পৌঁছে দেওয়া। বাঙালির এই সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে আমাদের এই পিঠা উৎসব।

বিজ্ঞাপন

উত্তরায়নের সাধারণ সম্পাদক শম্পা বড়ুয়া সারাবাংলাকে বলেন, আধুনিকতার ছোঁয়ায় বাঙালীর সংস্কৃতি এই পিঠা উৎসব হারিয়ে যাচ্ছে। নতুন প্রজন্মদের কাছে এই পিঠা উৎসবের বার্তা পৌঁছে দিতে আমাদের এই আয়োজন।

সারাবাংলা/সিসি/এমআই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন