বিজ্ঞাপন

ভোট দিলেন ঢাকা দক্ষিণের মেয়রপ্রার্থী তাপস-ইশরাক

February 1, 2020 | 9:27 am

সারাবাংলা টিম

ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস এবং বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেন ভোট দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে ধানমন্ডির কামরুন্নেসা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন শেখ ফজলে নূর তাপস। আর সকাল ৮টা ৫০মিনিটে রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশন রোডের শহীদ শাহজাহান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন।

ভোট দেওয়া শেষে ফজলে নূর তাপস সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আমার ভোটটি দিয়েছি। ইলেকট্রনিকস ভোটিং মেশিনে এই প্রথম আমি আমার ভোটটি দিলাম। এটি একটি সহজ পদ্ধতি। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। গত ১৮ দিন আমরা যে গণসংযোগ করেছি ঢাকাবাসী অত্যান্ত স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেটা সাদরে গ্রহণ করেছে। আমরা যে রূপরেখা ও ইশতেহার দিয়েছি ঢাকাবাসী উন্নয়নের পক্ষে তাদের ভোটটি দিয়ে রায়টি দেবেন।’

তাপস আরও বলেন, ‘নিবার্চনে হার জিত থাকবে। এটি অবশ্যই প্রতিযোগিতামূলক। আমি খুবই আশাবাদী নিবার্চন শান্তিপূর্ণভাবে হবে। নিবার্চন এখনো শান্তিপূর্ণভাবে হচ্ছে। এখন পযর্ন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি।

বিজ্ঞাপন

বিএনপির পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অমূলক। বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি বা ক্ষমতা না থাকায় তারা তাদের পোলিং এজেন্ট দিতে পারেনি। তারা দিতে পারছে না বলে আওয়ামী লীগের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।’

ইভিএম নিয়ে বিরোধী দলের আপত্তি ছিলো এমন প্রশ্নে তাপস আরও বলেন, ‘ইভিএম এ আমি প্রথম ভোট দিলাম। আমার কাছে সহজ ও আধুনিক মনে হয়েছে। আমার ভোটটি সঠিক জায়গায় গিয়েছে এটি নিশ্চিত। আমি গণসংযোগেও দেখেছি ঢাকাবাসীর এ বিষয়ে কোন অভিযোগ ছিল না। আর আজকে ঢাকাবাসী তাদের ভোট দিয়ে তাদের সেবক নিবার্চিত করবে। আর তাদের ভোট দিয়ে উন্নত ঢাকা গড়ার পক্ষে রায় দেবে।’

‘শেষদিন পযর্ন্ত বিদেশিদের কাছে নালিশ করেছে বিএনপি’- এ বিষয়ে তাপস বলেন, গণসংযোগের সময়ও তারা অভিযোগ নিয়ে ব্যস্ত ছিল, এখনও নালিশ নিয়ে ব্যস্ত আছে। আমরা তো নিবার্চন ও গণসংযোগ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। ইনশাআল্লাহ আমরা সুনির্দিষ্ট রূপরেখা দিয়েছি। জনগণ সেটা মেনে নিয়েছে। তাদের উন্নয়নের কোনো রূপরেখা ছিল না। সুতরাং আমার বিশ্বাস ঢাকাবাসী উন্নত ঢাকা গড়ার পক্ষে তাদের রায় দেবে।’’

বিজ্ঞাপন

জীবনের প্রথম ভোট নিজেকে দিয়ে ঢাকা দক্ষিণে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন বলেছেন, ‘সকল ধরনের জরিপে দেখেছি ধানের শীষ ৮০, ৮৫, ৯০ ভাগ এগিয়ে। আজকে যদি ভোটগ্রহণ ঠিক মতো সম্পন্ন হয়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যদি ঠিক মতো দায়িত্ব পালন করে, নির্বাচন কমিশন যদি ঠিক মতো দায়িত্ব পালন করে, তাহলে আমরা বিপুল ভোটে জয়লাভ করব।’

ইশরাক বলেন, ‘আমি আজকে আমার জীবনের প্রথম ভোট দিলাম। এর আগে ভোট দেওয়ার সুযোগ হয়নি। আমি ধানের শীষে আমার ভোট দিয়েছি এবং আমাদের যে কাউন্সিলর প্রার্থী এবং মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী বিএনপি সমর্থিত— তাদেরকে ভোট দিয়েছি।’

অবিভক্ত ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকার পুত্র ইশরাক বলেন, ‘গত রাত থেকে আমরা অভিযোগ পাচ্ছিলাম বিভিন্ন কেন্দ্রের সিসিটিভি ক্যামেরা কেটে দেওয়া হচ্ছিল। সেগুলোর কিছু ছবি ও ভিডিও ফুটেজ আমরা শেয়ার করেছি গণমাধ্যমে।’

ইশরাক বলেন, ‘আওয়ামী লীগের একজন সিনিয়র নেতা বলেছেন, ভোটকেন্দ্র দখলে এবং নিয়ন্ত্রণে রাখতে। উনার আরও সংযত ভাষা ব্যবহার করা উচিত ছিল বলে আমি মনে করি। কারণ, এই ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য সংঘাতের সম্ভবনা তৈরি করে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘সকালে আমরা জানতে পেরেছি যে, আমাদের পোলিং এজেন্ডদের ঢুকতে দেওয়া হ্চ্ছে না। সেটার ব্যবস্থা আমরা অবশ্যই নেব। আমরা ম্যাজিস্ট্রেটদেরকে অবহিত করেছি। আমি এখন সেইসব কেন্দ্রে যাব, যেখানে ভোটকেন্দ্র দখলের পাঁয়তারা চলছে। কারণ, গত নির্বাচনে দেখেছি সকাল ১০টার দিকে এই ধরনের কর্মকাণ্ড শুরু হয়।’

‘আজকে আমি বলে দিতে চাই আপনাদের মাধ্যমে, কোনো কিছু আমাকে আটকাতে পারবে না। যে ধরনের বাধা-বিপত্তিই আসুক। আমি আজকে আমার বাবাকে স্মরণ করে বাসা থেকে বের হয়েছি। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য আমি সম্পূর্ণ প্রস্তুত’— বলেন ইশরাক হোসেন।

তিনি বলেন, ‘আমাকে যদি হামলার শিকার হতে হয়, আহত হতে হয়, হব। কিন্তু ভোটকেন্দ্র দখল মুক্ত করার এবং ভোটারদের নিরাপদভাবে ভোট দেওয়ার জন্য যা যা করার দরকার আমি করব এবং এটা থেকে আমি পিছপা হবো না।’

ইভিএমে ভোট দিতে কোনো সমস্যা হয়নি উল্লেখ করে ইশরাক বলেন, ‘ইভিএম-এ আমি প্রথমবারেই ভোট সম্পন্ন করতে পেরেছি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, আমরা যে আশঙ্কাগুলো প্রকাশ করে আসিছলাম এর ত্রুটিযুক্ত প্রোগ্রামিং নিয়ে, তা থেকে আমরা সরে আসছি।’

তিনি বলেন, ‘আমি আগেই বলেছি, ফলাফল আমার পক্ষে এলেও নির্বাচনে ইভিএম মেনে নেব না। ইভিএম নিয়ে আমাদের বক্তব্য পাটলাবো না।’

ডিএসসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাতজন। এরা হলেন— নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপি’র ইশরাক হোসেন, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আবদুর রহমান, ডাব প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. আক্তারুজ্জামান অরফে আয়াতউল্লাহ, আম প্রতীকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) বাহরানে সুলতান বাহরান এবং মাছ প্রতীক নিয়ে গণফ্রন্টের আবদুস সামাদ সুজন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ লাখ ৯৩ হাজার ৪৪১ এবং নারী ভোটার ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৫৩।৭৫টি সাধারণ ও ২৫টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড এই সিটি গঠিত। এই সিটিতে ১ হাজার ১৫০টি ভোটকেন্দ্রে ৬ হাজার ৫৮৮টি ভোটকক্ষ রয়েছে। ডিএসসিসি নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন ইসির যুগ্ম সচিব মো. আব্দুল বাতেন। তার সঙ্গে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা থাকবেন ২৫ জন।

অন্যদিকে দক্ষিণ সিটিতে ৭৫টি সাধারণ ও ২৫টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড মিলিয়ে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৪০৮ জন। এর মধ্যে ৭৫টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ৩২৬ জন, ২৫টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে প্রার্থী ৮২ জন।

সারাবাংলা/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন