বিজ্ঞাপন

থাই বিনিয়োগে চাঙ্গা হবে মিয়ানমারের শিল্প খাত!

February 3, 2020 | 7:48 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

থাইল্যান্ডের বিখ্যাত আবাসন কোম্পানি আমাতা করপোরেশন মিয়ানমারে বিশাল অংকের অর্থ বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে দেশটির খুঁড়িয়ে চলা শিল্প খাতে গতি আসার পাশাপাশি বহির্বিশ্বে ব্যবসায়িক ভাবমূর্তি কিছুটা বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

গত আগস্টে আমাতা করপোরেশন মিয়ানমারের সঙ্গে একটি ‘ল্যান্ড লিজ’ সমঝোতায় স্বাক্ষর করে। এ সমঝোতার আওতায় আগামী ৭০ বছরের জন্য মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনের সমুদ্র বন্দর এলাকায় ৮০০ হেক্টর জমি ব্যবহার করবে আমাতা করপোরেশন। এ জমিতে গড়ে তোলা হবে আমাতা-ইয়াঙ্গুন স্মার্ট অ্যান্ড ইকো সিটি। এতে থাকবে বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন একটি শিল্পাঞ্চল। এছাড়া বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে এ অঞ্চলে ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ প্রকল্পও তৈরি করা হবে। এ জমিতে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে থাই আবাসন প্রতিষ্ঠানটি।

আমাতা করপোরেশনের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী বিক্রম ক্রমদিত। মিয়ানমারে তার প্রতিষ্ঠানের এ বিশাল অংকের অর্থ বিনিয়োগের বিষয়ে বলেন,  মিয়ানমার বৃহত্তর মেকং নদী তীরবর্তী অঞ্চলের দেশগুলোর জন্য ভারত সাগরে যাওয়ার অন্যতম প্রবেশদ্বার। এ জন্য আমরা বিনিয়োগের জন্য  দেশটিকে পছন্দ করেছি। তিনি বলেন, আমাতা করপোরেশন শুরুতে ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করলেও আস্তে আস্তে তা বেড়ে প্রায় ৩৭০ কোটি ডলার ছড়িয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, মেকং নদী তীরবর্তী দেশ হিসেবে ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, লাওস, চীন ও মিয়ানমার বিদেশি পণ্যের বড় বাজার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও উৎপাদনের দিক দিয়ে এখনও আশানুরূপ অবস্থানে পৌঁছাতে পারেনি। যেমন মিয়ানমারে ৫ কোটি ৪০ লাখ মানুষের একটি বিশাল বাজার রয়েছে। তবে এখানে বড় উৎপাদন ব্যবস্থা নেই। বিশ্বমানের শিল্পাঞ্চলের অভাব, বিদ্যুতের অপ্রতুলতা এবং বিনিয়োগে আইনি জটিলতায় দেশটিতে শিল্প পরিবেশ ব্যহত হচ্ছে। ফলে বড় বাজার হওয়া সত্ত্বেও এখানে উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য নেই।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি মিয়ানমার বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশটির বিনিয়োগ কমিশন উৎপাদন খাতের জন্য সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের বিভিন্ন আবেদন সহজে অনুমোদন দেওয়া শুরু করেছে। এতে দেখা গেছে, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে ২২ শতাংশ বেশি বিদেশি বিনিয়োগ প্রবেশ করেছে মিয়ানমারে। ২০১৯ সালে মোট ১৩০ কোটি ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ পায় দেশটি। তবে এ অংক এখনও অনেক কম বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

মিয়ানমারে বড় অংকের অর্থ নিয়ে আমাতার প্রবেশ দেশটিকে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আস্থা অর্জনে সহায়তা করবে। ইয়াঙ্গুন-আমাতা স্মার্ট ইকো সিটি প্রকল্পের আওয়তায় ৭৫ শতাংশ জমিতে একটি বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলা হবে। বাকি জমি ব্যবহার করা হবে বাণিজ্যিক ও আবাসন সুবিধা বৃদ্ধিতে। এ প্রকল্প বিভিন্ন স্তরে আগামী ৫ বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন হওয়ার কথা রয়েছে।

এছাড়া আমাতার বিনিয়োগে দেশটির বিদ্যুৎ সমস্যাও কিছুটা লাঘব হতে পারে। থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ কোম্পানি পিটিটি’র সঙ্গে মিলে আমাতা মিয়ানমারের এই শিল্পাঞ্চলে বড় একটি বিদ্যুৎ প্রকল্পও তৈরি করবে। এ প্রকল্পের উৎপাদন ক্ষমতা হবে ৬০০ মেগাওয়াট। এখান থেকে জাতীয় গ্রিডেও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। আমাতা করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শুধু এ বিদ্যুৎ প্রকল্পেই খরচ হতে পারে ৫০ থেকে ৬০ কোটি মার্কিন ডলার।

বিজ্ঞাপন

এ শিল্পাঞ্চলে ১২০ থেকে ১৫০টি কারখানা বরাদ্দ পাবে। ফলে এ শিল্পাঞ্চলই হবে মিয়ানমারে সবচেয়ে বড় ও আধুনিক শিল্পাঞ্চল। বিশ্বমানের সকল সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন এ শিল্পাঞ্চলের কারণে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে বলে আশা করছে দুই পক্ষই।

আমাতা করপোরেশনের মার্কেটিং ম্যানেজার ইয়াসুও সুতসি বলেন, চলতি মাস থেকেই এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে যাবে। ২০২১ সালের শেষ নাগাদ শিল্পাঞ্চলে প্রথম কারখানা বরাদ্দ পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, পূর্ব-পশ্চিম অর্থনৈতিক করিডোরে ইয়াঙ্গুনের সঙ্গে সড়ক পথে থাইল্যান্ড যুক্ত রয়েছে। তাই ইয়াঙ্গুনে উৎপাদন কারখানা তৈরি করলে সহজেই  মিয়ানমারের বাজার ধরে থাইল্যান্ডেও পণ্য বিক্রি করা যাবে। ইতিমধ্যে থাইল্যান্ডের অন্তত ২০টি কোম্পানি ওই শিল্পাঞ্চলে কারখানা স্থাপনের চিন্তা করছে। খবর নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আইই

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন