বিজ্ঞাপন

ঢামেক রেডিওথেরাপি বিভাগের বেহাল দশা, ভোগান্তিতে ক্যানসার রোগীরা

February 4, 2020 | 9:47 am

সোহেল রানা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ক্যানসার আক্রান্ত ৬০ বছর বয়সী মোশারফ হোসেনকে কোলে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় রেডিওথেরাপি বিভাগে যাচ্ছিলেন তার ছেলে মহিবুল হোসেন। তিনি জানান, সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ধামরাই থেকে এসেছেন। বর্হিবিভাগ থেকে হুইল চেয়ারে করে রেডিওথেরাপি বিভাগে এসে দেখেন শুধু সিঁড়ি। লিফট কিংবা ঢালু সিঁড়ি (র‌্যাম্প) নেই। উপায় না পেয়ে বাবাকে কোলে নিয়ে উপরে উঠতে হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

পটুয়াখালী সদর থেকে আসা রোগী শিউলী বেগম (২০)। তার সঙ্গে আছেন বাবা আনসার আলী ও মা হোসনে আরা।
শিউলির বাবা আনসার আলী জানান, ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়েছি। সেখানে কোনো উন্নতি হয়নি। পরে ঢামেক হাসপাতালে দেখানো শুরু করি। আজ চিকিৎসককে দেখানোর জন্য দাঁড়িয়ে আছি। এভাবে রোগীদের দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয় ডাক্তারের জন্য।

প্রতিদিন বহির্বিভাগে মহিলা পুরুষসহ প্রায় ১৫০-২০০ জন রোগী আসে। এদের মধ্যে যাদের অবস্থা বেশি খারাপ তাদেরকে ভর্তি করা হয়। এখানে এসে রোগীদের অনেক ভোগান্তি হয়। অনেক বয়স্ক রোগী আসেন যারা হাঁটতে পারেন না। হুইল চেয়ার অথবা ট্রলিতে করে নিয়ে আসা হয় তাদেরকে কোলে করে নিয়ে স্বজনদের ওপরে উঠতে হয়। অনেকদিন ধরে এই অবস্থা থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না কতৃপক্ষ। এছাড়া হাসপাতালের বেডের অবস্থাও খারাপ। মহিলাদের জন্য মাত্র আটটি ও পুরুষদের জন্য ২০টি বেড রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

দেখা গেছে, সিঁড়ির পাশে একটা ফাঁকা যায়গা, সেখানে লিফট বানানোর কথা ছিল। কিন্তু কোনো কিছুই হয়নি। সেখানে বানানো হয়েছে স্টোর রুম।বহির্বিভাগের রেডিও থেরাপির আলমগীর হোসেন নামের একজন এমএলএসএস বলেন, ‘একটি মেশিনের নাম এলিট-৪০, সেটা অনেক দিন ধরেই নষ্ট। ‘লিন্যাক মেশিন’ নামে একটি মেশিন তিন মাস ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। ‘কোবাল্ট-৬০’ নামে আরও একটি মেশিন নষ্ট হয়ে আছে। ফলে ক্যানসার রোগীদের থেরাপি দেওয়া যাচ্ছে না। বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে তাদের থেরাপি নিতে হয়। এর জন্য অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়।’

এই কোটি টাকার লিন্যাক মেশিনটি-২০১৮ সালে দীর্ঘ সাত মাস নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় জাহিদ মালেক এসেছিলেন পরিদর্শনে। তিনি বলেছিলেন— ‘শুধু মেশিন কিনলেই হবে না, এর তদরকি প্রয়োজন।’
কিন্তু একটি মেশিনেরও তদারকি হয় না। এজন্যই দীর্ঘ সময় ধরে বিকল হয়ে পড়ে থাকে।

বিজ্ঞাপন

সদ্য যোগ দেওয়া রেডিওথেরাপি বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. স্বপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি কিছুদিন ধরে প্রধানের দায়িত্ব নিয়েছি। অনেক সমস্যাই আছে আমাদের। শুনেছি দুএক বছরের মধ্যে ভবনটি ভেঙে নতুন করে করা হবে। তখন আর সমস্যা থাকবে না।’

এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘সেখানে একটু সমস্যা আছে। সেখানে ঢালু সিঁড়ির ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’ এছাড়া মেশিন নষ্টের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কতৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই মেশিন মেরামত করা হবে।’

সারাবাংলা/এসআর/এমআই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন