গেইল ঝড়ে রংপুরের ফাইনালের আশা, খুলনার বিদায়

সারাবাংলা ডেস্ক

ক্রিস গেইলের দিনে আর কি হতে পারে? ব্যাটকে তরবারি বানিয়ে বোলারদের উপর ছড়ি ঘুরানো এটাই নিয়তি হয়ে দাঁড়ায়। ২২ গজের ক্রিজকে বানিয়ে ফেলেন চার-ছক্কার ফুলঝুড়ির উৎস। সেই সাথে ম্যাচকেও পকেটে পুরে নিয়ে ম্যাচের পুরো দৃষ্টি কেড়ে নেন।

আজও তাই হয়েছে। এলিমিনেটর ম্যাচে খুলনার বিপক্ষে রংপুরের ৮ উইকেটের বিশাল জয় এসেছে তার হাত থেকেই। ৪৫ বলে সেঞ্চুরি করা গেইল জয়ে নিয়ে মাঠ ছাড়েন ৫১ বলে ১২৬ করে। অন্যপ্রান্তে মিঠুনও গেইলকে দারুণ সঙ্গ দিয়ে গেছেন। ৩৬ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন তিনি।

১৬৮ রানের টার্গেটে নেমে শুরুতেই সোহাগ গাজী ও ম্যাককালামের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় রংপুর রাইডার্স। সেই বিপর্যয় থেকে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন ব্যাটিং দানব ক্রিস গেইল ও মোহাম্মদ মিঠুন।

এই ম্যাচ হারলেই বাদ। জিতলে ফাইনাল যাওয়ার জন্য আশা জিইয়ে থাকবে। তবে, দিনের দ্বিতীয় খেলায় ঢাকা ও কুমিল্লার মধ্যকার ম্যাচের হেরে যাওয়া দলের সঙ্গে খেলে দ্বিতীয়কোয়ালিফায়ারে পরীক্ষা দিতে হবে। এমন সমীকরণের সামনে দুই দল রংপুর রাইডার্স ও খুলনা মাঠে নেমেছিল আজ। বাঁচা-মরার ম্যাচে আজ টস ভাগ্য জিতে রিয়াদের খুলনাকে ব্যাটিংয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রংপুর রাইডার্স অধিপতি মাশরাফি বিন মুর্তজা।

প্রথমে রংপুর ভালো শুরু করলেও শেষে এসে বোলিং প্রতাপ অব্যাহত রাখতে না পারায় ১৬৮ রানের টার্গেট পেয়েছে টম মুডির শীষ্যরা।

ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে অনুপস্থিত থাকা মাশরাফি ব্যাক করেছে। স্কোয়াডেও কিছু পরিবর্তন এনেছে রংপুর। ক্রিস গেইল, নাজমুল ইসলাম, লাসিথ মালিঙ্গা ও সোহাগ গাজীকে স্কোয়াডে রেখে গত ম্যাচের এডাম লিথ, শাহরিয়ার নাফিস, আব্দুর রাজ্জাক, স্যামুয়েল বদ্রি ও এবাদাত হোসেনকে বসিয়ে রেখেছে।

এদিকে খুলনারও দুটি পরিবর্তন এসেছে। বেনি হাওয়েল ও মোশাররফ হোসেইন রুবেলকে রেখে ফার্স্ট বোলার জোফ্রা আর্চার ও লেগ স্পিনার তানভীর ইসলামকে রেখেছে।

শেষ ছয় ওভারের ব্যাটিং ঝড়ে মোটামুটি ভাল পুজিতে করেছে খুলনা। ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৭ করেছে খুলনা। টপ ওর্ডারের ব্যাটিং ব্যর্থতা শেষে খুলনার হাল ধরার চেষ্টা করেন বিপিএলে চমক হয়ে আসা আরিফুল হক ও দুই ক্যারিবিয়ান ব্রাথওয়েট ও পুরান। ৩০ বলে ২৯ করে ফেরেন আরিফ। পুরানের ব্যাট থেকে আসে ২৮ রান। তাতে ২ চার ও ১ ছয়ের মার ছিল। ব্রাথওয়েটের ব্যাট থেকেও ঝড়ো ইনিংস এসেছে। ৯ বলে ৩ চার ও ১ ছয়ে করেছেন ২৫ রান।

এর আগে ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ১৫ রানে আউট হয়ে গেলেও আরেক ওপেনার মাইকেল ক্লিঙ্গার করেন ২৬ বলে ২১ রান।

আর আফিফ হাসান ৯ বলে ১১ রান করলেও, একটি করে ছয় ও চারের মার ছিল তাতে। কিন্তু ভাগ্য তার সহায় ছিল না। মালিঙ্গার বলে সরাসরি বোল্ড হয়েই ফেরেন এই তরুণ হার্ড হিটার।

তবে পরে নেমে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ৬ বলে ২০ রানের তাণ্ডব ইনিংস ছিল দুর্দান্ত। শুধু বাউন্ডারি থেকেই এসেছে ২০ রানের ইনিংস।

রংপুরের বোলারদের মধ্যে লাসিথ মালিঙ্গা একাই দুটি উইকেট নিয়েছেন। যদিও তিনি চার ওভার বল করে রান দিয়েছেন ৪৯। এছাড়া সোহাগ গাজী, নাজমুল ইসলাম, রুবেল হোসেন ও রবি বোপারা একটি করে উইকেট পেয়েছেন।

অন্যদিকে রংপুরের বিপক্ষে দুই উইকেট নিয়েছের আর্চার একাই। শতক হাকিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার ও মোস্ট এক্সাইটিং প্লেয়ারের পুরস্কার লুফে নিয়েছে ক্রিস গেইল।

এ জয়ে ফাইনালে যাওয়ার আশা টিকে রইল রংপুর রাইডার্সের। বিপিএলের এ আসর থেকে ছিটকে গেল মাহমুদুল্লাহর খুলনা।