বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধু উপমহাদেশের মুক্তির প্রতীক: ভারতের পররাষ্ট্র সচিব

March 2, 2020 | 3:13 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এই মাসে মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমরা এই সফরের প্রত্যাশায় রয়েছি কারণ, আমাদের প্রধানমন্ত্রী এই সম্পর্কের প্রতি অগ্রাধিকার দেন এবং এর চেয়েও বড় কারণ বঙ্গবন্ধু একজন বিশ্বনন্দিত নেতা এবং বাংলাদেশ ও আমাদের উপমহাদেশের মুক্তির প্রতীক’।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২ মার্চ) দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে বিস (বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ) আয়োজিত সেমিনারে ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এসব কথা বলেন।

‘ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় সফরের প্রস্তুতি নিতে তিনি ঢাকা সফর করছেন’ জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এই মাসে মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বঙ্গবন্ধু একজন বিশ্বনন্দিত নেতা এবং বাংলাদেশ ও আমাদের উপমহাদেশের মুক্তির প্রতীক। ভারতে তাঁর নাম বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। তিনি বাংলাদেশে যেমন সম্মান লাভ করেন তেমনি ভারতেও তিনি সমান শ্রদ্ধার পাত্র। সুতরাং আমি এই জ্ঞানী, নির্ভীক, দৃঢ়প্রত্যয়ী এবং সর্বোপরি এমন একজন বীর যিনি শোষণের হাত থেকে একটি জাতিকে মুক্তি দিয়েছেন, সেই মহান বঙ্গসন্তানের জন্মশতবর্ষে আপনাদের শুভকামনা জানাই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান আমাদেরও জাতীয় বীর। তাই বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে যৌথ প্রযোজনায় বিশেষ চলচ্চিত্র নির্মাণসহ জন্মশতবর্ষের বিভিন্ন আয়োজনের অংশীদার হতে পেরে আমরা গর্বিত। ’

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “দূরত্ব অনেকসময় দৃষ্টিভঙ্গিতে সহায়তা করে। সোনার বাংলা থেকে দূরে থাকার এই এক বছরে আমাদের সম্পর্কের মৌলিক বিষয়গুলোর প্রতি আলোকপাত করার সুযোগ হয়েছে আমার এবং আমি দৃঢ়প্রত্যয়ের সাথেই পুনর্ব্যক্ত করতে পারি যে, এই সম্পর্কের প্রতি ভারত সত্যিকার অর্থেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। আমাদের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত সুষমা স্বরাজ দুই বছর আগে ঢাকায় বলেছিলেন যে, আমাদের জন্য ‘প্রতিবেশী প্রথমে’ এই নীতির বাস্তবায়নে ‘বাংলাদেশই প্রথমে’। আমরা যতটা জল, স্থল আর ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে সংযুক্ত ততটাই সংযুক্ত আমাদের অভিন্ন ইতিহাস, সংস্কৃতি আর আত্মত্যাগের মাধ্যমে। বাংলার মাটি এবং বাংলার জল আমাদের দুই দেশকে সমৃদ্ধ এবং লালনপালন করে; আমাদের সমাজ ও আত্মাকে টিকিয়ে রাখে। এটা অনস্বীকার্য যে, আমাদের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে গভীরতম সাদৃশ্যের ভিত্তিতে যাকে অন্য কিছু ভাবা অসম্ভব।”

বিজ্ঞাপন


তিনি আরও বলেন, ‘প্রায়ই আমরা এসব বৃহত্তর বাস্তবতা থেকে দৃষ্টি হারাই, বিশেষ করে ক্ষণিকের উত্তেজনায়। কিন্তু আমরা যারা নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে আছি, আমাদের দৃষ্টি সবসময় নিবদ্ধ থাকে বাংলাদেশের সঙ্গে নিকটতম সম্পর্ক তৈরিতে।’

‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের শক্তিশালী, সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ এবং সম্প্রীতির বাংলাদেশ বিনির্মাণে আপনাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আমাদের পূর্ণ সমর্থন একবারেই ভারতের জাতীয় স্বার্থে’, জানিয়ে হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, ‘বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক সূচক, যেমন শিশুমৃত্যু থেকে নারী শিক্ষা, প্রাথমিক স্বাস্থ্য থেকে স্বাক্ষরতা ইত্যাদি উন্নয়নে আপনাদের অভূতপূর্ব সফলতা বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গতি এনে দিয়েছে। আজকে এশিয়ার উন্নয়নে নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ, যেটা সত্যিই প্রশংসনীয় অর্জন। যখন আপনারা দেশ গড়ছেন এবং দেশের মানুষ দ্রুত উন্নয়নের সুফলগুলো পেতে শুরু করেছে, তখন বাংলাদেশের উচিত এর কৌশলগত অবস্থান এবং দ্রুত বর্ধনশীল সক্ষমতার সুফল নেয়া। ‘

‘স্থলে, জলে আপনাদের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী হওয়ার কারণে এবং আমাদের এই বন্ধনের জন্য এটা খুবই স্বাভাবিক যে, আমাদের অংশীদারিত্ব অনেক বেশি পরিমাণে পারস্পরিক লাভজনক সহযোগিতাকেন্দ্রিক হবে। আমাদের নেতাদের বিচক্ষণতার কারণেই আমরা সীমান্ত ও জমি বিনিময়সহ অনেক কঠিন সমস্যা যেগুলো প্রতিবেশীদের মধ্যকার সম্পর্ক নষ্ট করে, সেগুলো চিহ্নিত করে পরিপক্কতার সাথে সমাধান করতে পেরেছি। আমি বলব যে বাংলাদেশ এবং ভারত যেভাবে এ ধরনের সমস্যাগুলি সমাধান করেছে তা অন্যান্য দেশের জন্য অনুকরণীয়’, বলেও জানান ভারতের পররাষ্ট্রসচিব। সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ বিশ্বে আমাদের বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার ও এই অঞ্চলে আমাদের বৃহত্তম বাণিজ্যের অংশীদার বলেও জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেআইএল/এমও

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন