বিজ্ঞাপন

চরমোনাইয়ের ‘মোদি ঠেকাও’ বিক্ষোভে জনদুর্ভোগ

March 4, 2020 | 7:42 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানীর বায়তুল মোকারমের উত্তর গেট থেকে পল্টন মোড় হয়ে বিজয়নগর থেকে নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের (চরমোনাই) ‘মোদি ঠেকাও’ বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিয়েছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী। এই বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশকে যেমন বাড়তি নিরাপত্তা দিতে হয়েছে, তেমনি আশেপাশের সব সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জনদুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে রাজধানীবাসীকে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৪ মার্চ) বিকেলে বায়তুল মোকারম মসজিদের উত্তর গেট থেকে বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিম চরমোনাইয়ের নেতৃত্বে শুরু হয় বিক্ষোভ মিছিল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরোধিতা করে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

আরও পড়ুন-  ‘মোদিকে এনে বঙ্গবন্ধুকে অপমানের চেষ্টা করলে প্রতিহত করা হবে’

বিকেল সোয়া ৫টায় শুরু হওয়া হাজার নেতাকর্মীর মিছিলটি একসময় লাখো নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে সরব হয়ে ওঠে। বিক্ষোভ মিছিলে নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করে নানা ধরনের স্লোগান দেন ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

বিজ্ঞাপন

বিক্ষোভ মিছিলের শুরুতে অন্যান্য সড়কে থাকা যানবাহনগুলোকে আটকে দেয় পুলিশ। এছাড়া পুলিশ মূল সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত ছোট ছোট সড়কগুলোতে ব্যারিকেড বসিয়ে যানবাহন আটকে দেয়। মিছিল শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব সড়কে যানবাহন আটকে থাকে। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে।

ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মিছিলের কারণে পল্টন মোড়ে বিজয়নগর থেকে পল্টনের দিকে, গুলিস্তান থেকে পল্টন মোড়, মতিঝিল থেকে পল্টন মোড় ও  শাহবাগ থেকে পল্টন মোড় পর্যন্ত সড়ক বন্ধ করে রাখে পুলিশ। এর বাইরে বিজয়নগর পানির ট্যাংকি মোড়ে সেগুন বাগিচা ও পুরানা পল্টন থেকে আসা সড়কগুলোও বন্ধ করে অবস্থান নেয় পুলিশ। পরে মিছিলটি নাইটিঙ্গেল মোড়ে গিয়ে মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়।

বিজ্ঞাপন

মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিম চরমোনাই মোনাজাতের আগে বলেন, নরেন্দ্র মোদি যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাই। একদিকে মুসলিমদের হত্যায় মেতে উঠবেন, অন্যদিকে সেই মুসলিমের দেশে এসে আতিথেয়তা নেবেন— তা হতে পারে না। মোদির বাংলাদেশে আসা ঠেকাতে না পারলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তার আগমন প্রতিহত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন চরমোনাই পীর।

বিক্ষোভ মিছিলটি বড় হওয়ায় সড়কের আশপাশে থাকা ভবনগুলো থেকে উৎসুক জনতা মিছিল দেখতে ভিড় জমান। অনেকে মোবাইল ফোন দিয়ে ভিডিও করেন। আকরাম টাওয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আব্বাস উদ্দিন বলেন, ২০১৩ সালের পর ঢাকায় এত বড় মিছিল দেখলাম।

পল্টন মোড়ে উৎসুক পথচারীদের মধ্যে নাবিল আহমেদ বলেন, বিক্ষোভ মিছিল যে কেউ করতে পারে। তবে তা শুক্রবার বা শনিবার করলে জনভোগান্তি হয় না। আজ অফিস ডে, তার ওপর ৫টায় ছুটি হয়েছে। এই মুহূর্তে রাস্তা বন্ধ করে মিছিল করা মানে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়। এটা বন্ধ হওয়া দরকার। আর পুলিশই বা কেন এসব মিছিলের অনুমতি দেয়, বুঝি না।

মিছিল চলাকালে দেখা যায়, নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে পল্টন মোড়, তাঁতীবাজার থেকে জিরো পয়েন্ট হয়ে পল্টন, শাহবাগ মৎস্য ভবন হয়ে পল্টন মোড়ের সড়ক যানজটে আটকে ছিল সব ধরনের যানবাহন। মূল সড়ক ছাড়িয়ে আশপাশের ছোট-বড় সড়কগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে এই যানজট।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর ছিদ্দিক সারাবাংলাকে বলেন, বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন বিক্ষোভ মিছিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিল। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ মিছিল করার মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়। আজ তারা মিছিল করেছে।

জনদুর্ভোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ঢাকায় যেকোনো মিছিল মানেই জনদুর্ভোগ। এতটা লোক সমাগম হবে মিছিলে, তা আগে তারা বলেননি। যেহেতু আজ বেশি লোক হওয়ায় জনদুর্ভোগ বেড়েছে, তাই আগামীতে ছুটির দিন ছাড়া এ ধরনের বিক্ষোভ মিছিলের অনুমতি দিতে সতর্ক থাকব আমরা।

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন