বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ ভালো আছে, ঘাবড়ানোর কিছু নেই: প্রধানমন্ত্রী

March 12, 2020 | 4:15 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাভাইরাস নিয়ে সারাবিশ্বে আতঙ্ক শুরু হয়ে গেছে। বাংলাদেশ এখনও ভালো আছে, ঘাবড়ানোর কিছু নেই। কিন্তু আরও ভালো থাকার জন্য আমাদের আরও সচেতন হতে হবে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) সকালে গণভবনে মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ‘পরিচ্ছন্ন গ্রাম-পরিচ্ছন্ন শহর’ কর্মসূচির আওতায় দেশব্যাপী পরিছন্নতা কার্যক্রমের উদ্বোধনের সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।

কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা শেষে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কয়েকটি বিভাগীয় শহরে সংযুক্ত হয়ে মতবিনিময় করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সবাইকে আমি অনুরোধ করব, হাঁচি-কাশি এলে আপনারা হাতের তালু না নিয়ে হাতের মাধ্যমে, কনুই ব্যবহার করেন। হাত মেলানো, কোলাকুলি করা বা কাউকে জড়িয়ে ধরা এগুলো বন্ধ রাখতে হবে। কখন কার মাঝে যে এই রোগ আছে আর কখন চলে আসবে, এটি কেউ বলতে পারে না। সে জন্য সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতন থাকা দরকার।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘জাতির পিতা এই বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলেন এবং দেশের মানুষকে উন্নত সমৃদ্ধ জীবন দিতে চেয়েছিলেন। আমরা তারই আদর্শ নিয়ে দেশ পরিচালনা করছি। আমরা চাই, বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসাবে গড়ে তুলতে। বাংলাদেশকে আর কেউ কোনোভাবে যেন অন্য চোখে দেখতে না পারে। বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী আজকে যে সম্মান পেয়েছে, সেই সম্মান ধরে রেখে এগিয়ে যাবে। আমরা বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে সম্মানের সঙ্গে চলতে চাই।’

দেশকে সুন্দভাবে গড়ে তুলতে হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে গেলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এটি আমাদের সকলের জন্য দরকার। আমাদের ধর্মেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কথা বলা আছে। আমরা চাই যে, দেশের মানুষ সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে। এটা শুধু দেশ বলে না, প্রত্যেকটা মানুষের ব্যক্তিগত জীবনেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার প্রয়োজনীয়তা রয়ে গেছে। নিজে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা না থাকলে আশপাশের মানুষগুলো ভালো থাকতে পারবে না।’

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কথা তুলে তিনি বলেন, ‘এখন জানেন যে, সারা বিশ্বব্যাপী একটি আতঙ্ক শুরু হয়ে গেছে। সেটি হচ্ছে করোনাভাইরাস। করোনাভাইরাসটা ছড়িয়ে পড়েছে, হয়ত মৃতের সংখ্যা তেমন না কিন্তু আতঙ্ক অনেক বেশি। সেই জন্য আমি সবাইকে বলব যে, এখান থেকেও আমাদের দেশকে মুক্ত রাখতে হবে। এরইমধ্যে বিদেশ থেকে আসা আমাদের দুই জন নাগরিক তাদেরকে আমরা শনাক্ত করেছিলাম। তাদের চিকিৎসা করা হয়েছে। একজন সংক্রমিত হয়েছিল। বাকিরা ভালো আছে। ভালো সবাইকে রাখতে হবে। সেটিও মাথায় রাখতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

এরইমধ্যে প্রায় ১১৪টার মতো দেশে এই কভিড-১৯ বা করোনাভাইরাস দেখা দিয়েছে এবং বাংলাদেশকে এই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে প্রতিরোধ করার জন্য সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে অবহিত করেন সরকার প্রধান শেখ হাসিনা।

যদি কেউ কখনো মনে করেন, কেউ সংক্রামণ হয়েছে বা তার কোনোরকম নমুনা দেখা দিচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানান। কোনোরকম উপসর্গ দেখা দিলে সেটি না লুকিয়ে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসককে দেখানোর পরামর্শ দেন তিনি।

মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচির উদ্বোধনের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে পরিচ্ছন্নতার জন্য একটি ব্যবস্থা নিচ্ছি বা মানুষের মাঝে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে চাচ্ছি। এটির কারণ হচ্ছে যে, আমাদের দেশের সব মানুষই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হোক। কারও রোগ যেন আরেকজনের শরীরে সংক্রমিত না হয়।’

খোলা বাতাস একান্তভাবে প্রয়োজন। আজকে অবশ্য যারা একটু অর্থশালী তাদের আবার এসি রুমে থাকার প্রবণতা একটু বেশি। এতে একজনের রোগ আরেকজনের কাছে খুব দ্রুত সংক্রমিত হয়। কিন্তু যতবেশি আমরা খোলা বাতাসে থাকতে পারব বা বাতাস আসার একটা সুযোগ করতে পারব? ততই কিন্তু আমরা ভালভাবে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারব বলেও জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

একেবারে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন,উপজেলা জেলা পর্যায় পর্যন্ত এবং প্রত্যেকটা বিভাগীয় শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য সকলকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রত্যেককে সুর্নিদিষ্ট জায়গায় ময়লা ফেলার আহ্বান জানান। একইঙ্গে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জায়গা সুনির্দিষ্ট থাকার পাশাপাশি রিসাইক্লিং করার করার জন্য সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচির উদ্যোগ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে নিজেরা সচেতন থাকার পাশাপাশি অপরকে সচেতন করার আহ্বান জানান তিনি।। এছাড়াও নিজের জায়গা, নিজের দেশ, নিজের মাটি, সব জায়গা সুন্দর ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সবাই সুন্দরভাবে বাঁচবে, সবাই সুন্দরভাবে থাকবে এবং সবাই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে। সেটিই আমাদের আকাঙ্ক্ষা। আমি চাই, আপনারা সবাই বিষয়গুলো মেনে চলবেন। আমি মনে করি, আমরা যদি এভাবে চলতে পারি আমাদের দেশটি আরও উন্নত হবে।’

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গণভবন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, স্থানীয় সরকার পল্লী, উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদ।

সারাবাংলা/এনআর/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন