বিজ্ঞাপন

সিটি ও উপনির্বাচন স্থগিতের দাবি বিএনপির

March 19, 2020 | 8:07 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দেশে করোনাভাইরাস সংক্রামণের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনসহ পাঁচ উপনির্বাচন আপাতত স্থগিতের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। সেইসঙ্গে দেশের আদালতগুলো ‘যতদিন প্রয়োজন’ বন্ধের দাবি জানিয়েছে দলটি।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। করোনাভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে জনগণের কাছ থেকে এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে এরই মধ্যে নির্বাচন বন্ধের কথা এসেছে। কিছুক্ষণ আগে নির্বাচন কমিশন বলছে যে, ২১ তারিখে যে নির্বাচনগুলো আছে তা হবেই এবং ২৯ তারিখের নির্বাচনের ব্যাপারে ২১ তারিখ সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা এটাকে একেবারেই একপেশে এবং জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক বিবর্জিত সিদ্ধান্ত হিসেবে মনে করি।’

‘আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে আহবান জানাচ্ছি, কমিশন তাদের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাহার করে জনগণের স্বার্থে, মানুষের বেঁচে থাকার স্বার্থে এই নির্বাচনগুলোকে আপাতত স্থগিত রাখবেন। পরবর্তী সময় নির্বাচনে তারিখ ঘোষণা করা যেতে পারে’— বলেন মির্জা ফখরুল।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘এমনিতেই গত নির্বাচনে ভোটারের পারসেন্টেজ যেটা দেখেছি, তাতে ৮%-৯% এর বেশি আসবে না। সেই ক্ষেত্রে এই করোনাভাইরাসের কারণে ভোটাররা কত পারসেন্ট আসবে, ভোটের টার্ন আউট কী হবে— সেটা আমরা সবাই অনুমান করতে পারি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের আদালতগুলোতে ব্যাপকসংখ্যক মানুষের ভিড় হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মিথ্যা মামলার আসামিদের আসতে হয়, হাজিরা দিতে হয়। প্রায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ সেখানে উপস্থিত হন। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি। অন্যান্যগুলোতেও প্রতিদিন হাজার হাজার লোক আদালতে হাজিরা দিতে আসে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যে রিপোর্ট পেয়েছি, তাতে ৩০ জন বিচারক এরই মধ্যে কোয়ারেনটাইনে চলে গেছেন। সেক্ষেত্রে এটা পরিষ্কার, আদালতগুলোতে এই ভাইরাসের সংক্রামণটা বেশি হচ্ছে। আমরা সেই কারণে আহবান জানাচ্ছি, এই পরিস্থিতি বিবেচনা করে, জনগণের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে, তাদের জীবনের কথা চিন্তা করে আদালতগুলো আপাতত বন্ধ রাখা প্রয়োজন।’

বিজ্ঞাপন

‘আমাদের আহ্বান থাকবে, যতদিন প্রয়োজন আদালতের কার্য্ক্রম স্থগিত রাখা। আমরা আশা করব, সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা দেশের কথা চিন্তা করে, জনগণের কথা চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত নেবেন’— বলেন বিএনপির মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি, প্রথম থেকে সরকার এই করোনাভাইরাসের বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি। আমরা প্রথম সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম, এখানে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে সরকার। আমরা বলেছিলাম, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করুন। তারা বন্ধ করেননি। পরে ১৬ তারিখে তারা স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে।’

‘প্রয়োজনে সব শাটডাউন করা হবে’— আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন তো শাটডাউান করার জায়গাটা অলরেডি এসে গেছে। এখন শাটডাউন না করলে ভয়াবহ মহামারি আকার ধারণ করবে। বাংলাদেশ এমনিতেই ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। ভাইরাসটি এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। এখন এটা বাইরের থেকে আসার দরকার হবে না, দেশের অভ্যন্তরে যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের দ্বারা সব জায়গায় ছড়াবে।’

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘ভ্ইারাসের সংক্রামকদের চিকিৎসায় বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্ধারণ, শনাক্তকরণসহ চিকিৎসক-নার্সদের প্রয়োজনীয় পোশাক (পিপিই) ও যন্ত্রপাতি— কোনো কিছু সরকার ব্যবস্থা করতে পারেনি।’

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন