বিজ্ঞাপন

করোনাকে ‘অভিশাপ’ বললেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা!

April 2, 2020 | 9:57 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে বিশ্বব্যাপী। বাংলাদেশেও এ পর্যন্ত ৫৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন এই ভাইরাসে। কিন্তু এই ভাইরাস কি অভিশাপ? স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত ব্রিফিং থেকে সেই প্রশ্নই উঠে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

বরাবরের মতোই বৃহস্পতিবারও (২ এপ্রিল) করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ের আয়োজন ছিল স্বাস্থ্য অধিদফতরের। ব্রিফিং পরিচালনা করেন অধিদফতরের এমআইএস শাখার পরিচালক ডা. হাবিবুর রহমান। আর তার বক্তব্যেই উঠে আসে ‘অভিশাপ’ শব্দটি।

ব্রিফিংয়ের শুরুতেই ডা. হাবিবুর জানান, আজ পর্যন্ত আমরা ৬১ হাজার ৮৮০ জনকে হোম কোয়ারেনটাইন ও ২৪৩ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেনটাইনে নিয়েছি। সব মিলিয়ে ৬২ হাজার ১২৭ জনকে কোয়ারেনটাইন করেছি। গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৪০৪ জনকে হোম কোয়ারেনটাইন ও ৯ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেনটাইনে নেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট ৪৫ হাজার ৪২৭ জনকে কোয়ারেনটাইন থেকে মুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে ১৬ হাজার ৭০০ জন কোয়ারেনটাইনে আছেন।

এই পরিসংখ্যান তুলে ধরার আগেই ডা. হাবিবুর বলেন, ‘করোনার অভিশাপ থেকে মুক্তি লাভ করার জন্য বিদেশ ফেরত ব্যক্তি ও আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা সবাইকে কোয়ারেনটাইন করার কোনো বিকল্প নেই।’

বিজ্ঞাপন

স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন পরিচালক হিসেবে ডা. হাবিবুর রহমান এভাবে করোনাভাইরাসকে ‘অভিশাপ’ হিসেবে অভিহিত করতে পারেন কি না, তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা, সমালোচনা।

বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএইচআরএফ) কার্যনির্বাহী সদস্য নূরুল ইসলাম হাসিব বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি শাখার শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে তিনি এভাবে বলতে পারেন না। কোনো রোগই কখনো ‘অভিশাপ’ হতে পারে না। এর মাধ্যমে তিনি কেবল জনমনে আতঙ্ক ছাড়ানোর কাজটিই করছেন।

জানতে চাইলে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) মহাসচিব ও করোনা প্রতিরোধ বিষয়ক জাতীয় কমিটির সদস্য ইকবাল আরসালান সারাবাংলাকে বলেন, চিকিৎসকরা বিজ্ঞানভিত্তিক কথা বলে থাকেন। এর বাইরে আর কোনো কিছু আসলে বলার থাকে না। আর কোনো রোগকেই কখনো অভিশাপ বলা যায় না। আমাদের কাজই হলো বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেওয়া। আমি শুনেছি আজকে ব্রিফিংয়ে এমন একটি শব্দচয়ন হয়েছে। এটি দুঃখজনক। আমি এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলব।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, চিকিৎসকরা বিজ্ঞানের বাইরে তিনি কথা বলতে পারেন না। তাও যদি বলে থাকেন, সে বিষয়ে তাকেই জিজ্ঞাসা করা উচিত কেন তিনি এটা বললেন।

গণমাধ্যমকর্মীরা বলছেন, বৃহস্পতিবারের ব্রিফিংয়ে নিজের বক্তব্য উপস্থাপনের পর এমআইএস পরিচালক ডা. হাবিবুর গণমাধ্যমকর্মীদের মাত্র দু’জনকে প্রশ্ন করার সুযোগ দেন। ফলে ওই অনলাইন ব্রিফিংয়ে যুক্ত অনেক গণমাধ্যমকর্মীই বিষয়টি নিয়ে তাকে প্রশ্ন করতে চাইলেও করতে পারেননি।

এ বিষয়ে জানার জন্য সারাবাংলার পক্ষ থেকে একাধিকবার ডা. হাবিবুরের মোবাইল নম্বরে ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসবি/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন