বিজ্ঞাপন

‘অহেতুক ঘোরাঘুরিতে করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়ছে’

April 12, 2020 | 6:36 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা মুখে বলে বলে করতে পারব না। এজন্য সবাইকে একটু সচেতন হতে হবে। ঘরে থাকতে হবে। অহেতুক ঘোরাঘুরির ফলেই কিন্তু করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। এরকমটা চলতে থাকলে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১২ এপ্রিল) সকালে গণভবন থেকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের জেলাগুলোর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যতটুকু সাধ্য আমরা করে যাচ্ছি। একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখা অত্যন্ত ছোট। জনসংখ্যার দিক থেকে অনেক ঘনবসতি, অনেক বড়। এত বেশি ঘনবসতির এই জায়গায় মানুষকে সুরক্ষিত রাখা অত্যন্ত কঠিন একটা কাজ। তারপরও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। সেজন্য প্রত্যেকটা মানুষকে নিজের কথা ভাবতে হবে। নিজের পরিবারের কথা ভাবতে হবে। নিজের পাড়া প্রতিবেশি বা এলাকাবাসী বা কর্মস্থলের যারা সবার কথা ভাবতে হবে। যাতে করে সবাই সুরক্ষিত থাকে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এজন্য সবাইকে একটু সচেতন থাকতে হবে। ঘরে থাকতে হবে। কারও সঙ্গে অহেতুক মেলামেশা না করা; যাতে করে এই ভাইরাসটা ছড়াতে না পারে- এই ব্যাপারে সবাইকে বারবার অনুরোধ করছি। প্রত্যেকে এ ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকেন। কারণ দেখা যাচ্ছে অনেক জেলায় কোনো সংক্রমিত ব্যক্তি ছিলই না। কিন্তু এক জেলা থেকে মানুষ যখন আরেক জেলায় চলে গেছে, তখনই সংক্রমিত হয়ে গেছে।’

বিজ্ঞাপন

স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে দেওয়া নির্দেশনাগুলো মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সারা বিশ্বব্যাপী যে সমস্যাটা দেখা দিয়েছে তা আপনারা জানেন। এই ভাইরাসে শুধু একটি দেশ না, সারাবিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, আক্রান্ত হচ্ছে। বিশ্বের প্রায় ১ লাখ তিন হাজারের ওপর মানুষ ইতোমধ্যে মারা গেছে। এছাড়া লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। অনেক উন্নত দেশও এটা মোকাবিলা করতে হিমশিম খাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্য যে, আমাদের দেশেও এই ভাইরাসের আক্রমণ হয়েছে। ভাইরাসটিতে ইতোমধ্যে ৩০ জন মারা গেছে। তবে এর থেকে বেশি আমাদের সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরে গেছে। আমরা সারাদেশে এই ভাইরাস মোকাবিলার জন্য বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এটা অত্যন্ত সংক্রমক। এই ভাইরাস কার শরীরে প্রবেশ করেছে বা যার হয়েছে সে কার কার সঙ্গে মিশছেন, কথা বলছেন, কে সংক্রমিত হবে, এটা বোঝা খুব কষ্টকর। এটিই সব থেকে বড় চিন্তার বিষয়।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ভয়াবহতার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘এটা খুব একটা অবাক কাণ্ড। এই একটা ভাইরাসের কারণে আজ সারাবিশ্ব স্থবির। সারাবিশ্বের মানুষ কিন্তু ঘরে বন্দি। স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্পূর্ণভাবে স্থবির হয়ে গেছে। আমরা এই ভাইরাস থেকে দেশবাসীকে বাঁচানোর জন্যই সব কর্মসূচি বন্ধ করে দিয়েছি এবং সবাইকে অনুরোধ করছি আপনারা যার যার নিজের ঘরে থাকেন। কারও সঙ্গে মেশামিশির দরকার নেই। খুব নেহাত প্রয়োজন যতটুকু ততটুকুই করবেন। আমি জানি এর জন্য সবার খুব কষ্ট হচ্ছে। তারপরও আমাদের সাধ্যমত আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দেশবাসীকে সুরক্ষিত রাখার লক্ষ্যে কাজ করা পুলিশবাহিনী, প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, সশস্ত্রবাহিনী, স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রত্যেকেই অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।এছাড়া গণমাধ্যম কর্মীরাও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তথ্য সংগ্রহ ও পরিবেশন করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তাদেরও ধন্যবাদ জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বলতে গেলে তারা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কিন্তু আপনাদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। আপনাদের সাহায্য করছেন। আপনাদের জীবন বাঁচানোর জন্য তারা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।’

গণভবন প্রান্তে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। এ সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন