বিজ্ঞাপন

ঋণ খেলাপিরা প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ পাবেন না

April 13, 2020 | 1:15 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবিলায় ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ ঋণ খেলাপিরা পাবেন না। শুধু তাই নয় যে সব ঋণ খেলাপি বিভিন্ন সময়ে সরকারের দেওয়া সুযোগ নিয়ে তিন বারের বেশি তাদের ঋণ পুনঃতফসিল করেছেন, তারাও এই প্রণোদনার প্যাকেজের আওতায় আসবে না।

বিজ্ঞাপন

গতকাল রোববার (১২ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে দেশের সকল তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, যেসব শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠান করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শুধু সেসব প্রতিষ্ঠান এই সুবিধার আওতাভুক্ত হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, যেসব শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের প্রতিষ্ঠান করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শুধুমাত্র সেসব প্রতিষ্ঠান এ সুবিধার আওতাভুক্ত হবে।

প্রণোদনা প্যাকেজের আওতাভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, ‘খেলাপি ঋণ/বিনিয়োগ গ্রহীতারা এ প্যাকেজের আওতায় ঋণ/বিনিয়োগ সুবিধা প্রাপ্য হবে না। কোনো ঋণ/বিনিয়োগ গ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের কোন ঋণ/বিনিয়োগ মন্দ/ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকৃত হওয়ার পর ইতোপূর্বে তিনবারের অধিক পুনঃতফসিলকৃত হলে এরূপ ঋণ/বিনিয়োগ গ্রহীতা প্রতিষ্ঠান প্যাকেজের আওতায় ঋণ/বিনিয়োগ সুবিধা পাবে না।’

বিজ্ঞাপন

এতে আরও বলা হয়েছে, নতুনভাবে ঋণ/বিনিয়োগ গ্রহণে ইচ্ছুক আবেদনকারী (যারা এ যাবত নিজস্ব পুঁজির মাধ্যেমে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ব্যাংক ঋণ/বিনিয়োগের উপর নির্ভরশীল হতে হচ্ছে) এবং বিদ্যমান ঋণ/বিনিয়োগ গ্রহীতা-উভয়ের ক্ষেত্রেই গাইডলাইনস অন ইন্টারনাল ক্রেডিট রিস্ক রেটিং সিস্টেম ফর ব্যাংক অনুযায়ী সর্বশেষ সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণীর তথ্যের ভিত্তিতে রেটিং নূন্যতম মার্জিনাল হতে হবে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বাংলাদেশে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুজ্জীবিত করতে শ্রমিক-কর্মচারীদের কাজে বহাল এবং উদ্যেক্তাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা ধরে রাখতে ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্পসুদে ঋণ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। মূলত গত ৫ এপ্রিল তারিখে প্রধানমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের প্রতিষ্ঠানসমূহের জন ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে ঋণ/বিনিয়োগ সুবিধা দিতে ৩০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করেন।

ওই প্যাকেজের আওতায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের প্রতিষ্ঠানসমূহকে তাদের নিজ তহবিল থেকে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বাবদ ঋণ/বিনিয়োগ সুবিধা দেবে। গ্রাহক পর্যায়ে সহনীয় সুদ/মুনাফার হার কার্যকর করতে বর্তমানে চলমান সুদ/মুনাফার হার ৯ শতাংশের বিপরীতে সরকার সাড়ে চার শতাংশ সুদ ভর্তুকি হিসেবে প্রদান করবে।

বিজ্ঞাপন

প্রজ্ঞাপনে প্যাকেজের অর্খ বিনিয়োগের বিষয়ে বলা হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ঋণ/বিনিয়োগের চাহিদার বিপরীতে এ প্যাকেজের আওতায় প্রদত্ত ঋণ/বিনিয়োগ ব্যবহার করা যাবে। প্যাকেজের আওতায় গৃহীত ঋণ/বিনিয়োগ দিয়ে বিদ্যমান কোন ঋণ/বিনিয়োগ হিসাব সমন্বয়/পরিশোধ করা যাবে না। ব্যবসা সম্প্রসারণ বা নতুন কোন ব্যবসা চালুর জন্য এ ঋণ/বিনিয়োগ ব্যবহার করা যাবে না।

উল্লেখ্য, গত ৫ এপ্রিল করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ কয়েকটি প্যাকেজ ঘোষণা করেন। ঘোষিত প্যাকেজগুলোর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের জন্য ৩০ হাজার কোটি ঋণ সুবিধার কথা বলা হয়।

সারাবাংলা/জিএস/এমও

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন