বিজ্ঞাপন

‘করোনাজয়ী’ সিনথিয়া জানতই না সে আক্রান্ত

May 9, 2020 | 12:10 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

বগুড়া: কোনো ধরনের ওষুধ না খেয়েও করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছে বগুড়ার নন্দীগ্রামের কিশোরী সিনথিয়া। বাড়িতেই মা-বাবা তাকে চিকিৎসকদের পরামর্শে দিয়েছেন প্রয়োজনীয় পরিচর্যা। আইসোলেশনেও রাখা হয়েছিল কৌশলে। শেষ পর্যন্ত শনাক্ত হওয়ার দুই সপ্তাহ পরে পরপর ‍দু’টি নমুনায় তার ফল ‘নেগেটিভ’ এসেছে। পরিবার বলছে, সিনথিয়াকে জানানো হয়নি যে সে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিল!

বিজ্ঞাপন

নন্দীগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তোফাজ্জল হোসেন মন্ডল জানিয়েছেন সিনথিয়ার করোনামুক্তির খবর। তিনি বলেন, আক্রান্ত হওয়ার সপ্তাহ দুয়েক পর আরও দুই বার করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে সিনথিয়ার। দুইটি পরীক্ষাতেই তার শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। তার পরিবারের অন্য কারও শরীরেও এখনো করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়নি বলে জানান তিনি।

কিশোরী সিনথিয়া ইসলাম উপজেলার ৫ নম্বর ভাটগ্রাম ইউনিয়নের বিজরুল গ্রামের আমিনুল ইসলাম মামুনের মেয়ে। আমিনুল র‌্যাংগস গ্রুপের একজন কর্মকর্তা। রাজধানীর কাফরুল এলাকায় বসবাস করেন। গত ১৮ এপ্রিল সপরিবারে নন্দীগ্রাশে ফেরেন তিনি। ঢাকা থেকে যাওয়ার কারণে দুই দিন পর তাদের পরিবারের সবার নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়।

ডা. তোফাজ্জল জানান, গত ২২ এপ্রিল পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া যায়। পরীক্ষায় সিনথিয়ার শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যায়। তবে তার পরিবারের আর কারও শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি ছিল না। পরে আমরা সিনথিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসার পরামর্শ দেই। তবে পরিবার তাতে রাজি হয়নি। সিনথিয়ার লক্ষণগুলোও মৃদু ছিল। তাই বাড়িতেই তাকে আইসোলেশনে রাখার অনুমতি দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

সিনথিয়ার বাবা আমিনুল ইসলাম বলেন, মেয়ের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবরে খানিকটা মুষড়ে পড়েছিলাম। তবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে সাহস পেয়েছি। আমরা সিনথিয়াকে বুঝতেই দেইনি সে করোনায় আক্রান্ত। সে যেন না বুঝতে পারে, সে কারণেই হাসপাতালে ভর্তি করাইনি। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে এটুকু বুঝতে পারছিলাম, ঘরেই তাদের পরামর্শ অনুসরণ করলে হয়তো সিনথিয়া সুস্থ হয়ে উঠবে। সেভাবেই আমরা ওকে রেখেছি।

সিনথিয়াকে কী ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, জানতে চাইলে আমিনুল বলেন, ওর শরীরে তেমন উপসর্গ না থাকায় কোনো ওষুধ প্রয়োজন হয়নি। চিকিৎসকরা হালকা গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে নিয়মিত গার্গেল করতে বলেছিলেন। ঠান্ডা পানির বদলে হালকা গরম পানি ও চা খাওয়াতে বলেছিলেন। এগুলো সব আমরা নিয়মিত করিয়েছি। সিনথিয়া সুস্থ হয়ে ওঠায় স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তোফাজ্জল জানান, সিনথিয়ার শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর তার বাসাসহ আশপাশের কয়েকটি বাসা লকডাউন করা হয়েছিল। সিনথিয়া সুস্থ হয়ে ওঠায় লকডাউন প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন