বিজ্ঞাপন

করোনায় ত্রাণ সহায়তা নিয়ে সম্মুখযুদ্ধে দুই ব্যারিস্টার

May 12, 2020 | 8:28 am

আব্দুল জাব্বার খান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দুই দিন ধরে ঘরে তেমন রান্না নেই। আপনি চাইলে আমার মেয়েকে ফোন দিয়ে দেখতে পারেন। তিন মেয়েসহ পাচঁজনের সংসার। স্বামীর আয় রোজগার বন্ধ। ঘরে খাবার নেই। উপায়ান্ত না দেখে আপনার কাছে এসেছি। ইউটিউবে আপনার সাহায্য দেওয়ার ভিডিও দেখেছি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে পরিবারের জন্য এভাবে সাহায্য প্রার্থনা করছেন এক নারী। পরে তার পরিবারের জন্য দুই সপ্তাহের ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

প্রতিদিন এমন মধ্যবিত্ত পরিবারসহ অসংখ্য মানুষকে খাবার, জামা কাপড়, ওষধপত্র বিতরণ করে আসছেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী।

করোনার ছোবলে যখন অবরুদ্ধ দেশ। বন্ধ রয়েছে কল কারখানা, অফিস-আদালত। জীবন বাচাঁতে মানুষ অবস্থান নিয়েছে ঘরে। তখন মানুষের জন্য কাজ করে করোনাকালে ত্রাণ সহায়তায় সম্মুখ সারিতে রয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এই দুই তরুণ ব্যারিস্টার।

দিনমজুর, রিকশাচালক, হাসপাতালসহ মধ্যবিত্তদের ঘরেও সাহায্য পৌঁছে দিচ্ছেন তারা। সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছেন অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে। অনেকে তাদেরকে ত্রাণযোদ্ধা হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। বলছি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন ও ব্যারিস্টার আহসান হাবিব ভূইয়ার কথা।

বিজ্ঞাপন

দেশের এ দুর্যোগের সময় অনেক ব্যক্তি সংগঠনের পক্ষ থেকেই অসহায় মানুষের পাশে সাহায্য নিয়ে দাঁড়িয়েছেন। তার মধ্যে এই দুই আইনজীবীও শুরু থেকেই ত্রাণ বিতরণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। যার মধ্যে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন তার নিজ এলাকায় ত্রাণে বিতরণ করছেন। আর ব্যারিস্টার আহসান হাবিব ভূইয়া ঢাকায় ত্রাণ কাজ অব্যাহত রেখেছেন।

মহামারি এই করোনার দুঃসময়ে চিকিৎসা ক্ষেত্রে সম্মুখযুদ্ধে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছেন চিকিৎসকেরা। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঠিক একইভাবে অসহায় মানুষকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণেও অসংখ্য ত্রাণযোদ্ধা তাদের দায়িত্ব পালন করছেন।

ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন বলেন, ‘করোনার শুরু থেকেই আমি আমার গ্রামে চলে আসি। আমি আমার হবিগঞ্জের চুনারুঘাট এলাকার মানুষের জন্য কাজ করছি।’

বিজ্ঞাপন

‘এই দুর্দিনে মানুষের জন্য যদি কিছু করতে পারি তাহলে আমি মনে করি আমার জীবন সার্থক হবে। দুর্দিনেই মানুষের পাশে দাড়াঁতে হয়। সু সময়ে তো সবাইকেই পাওয়া যায়। দুঃসময়ে মানুষের পাশে থাকার সাহস যাদের আছে আমি মনে করি তাদের দ্বারাই মানুষের উপকার হবে।’

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘মানুষের জন্য কিছু করার নেশা রক্তে থাকতে হবে। শুধুমাত্র টাকা-পয়সা থাকলেই হয় না। মন থাকতে হবে। মানুষের পাশে থাকার শপথ নিয়েও যারা মানুষের পাশে দাড়াঁয়নি আমি মনে করি তাদের শপথ ভঙ্গ হয়েছে।’

করোনায় মানুষকে চিকিৎসা সহায়তার জন্য ব্যারিস্টার সুমন তার গাড়ি দিয়ে দিয়েছেন।

একইভাবে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আহসান হাবিব ভূইয়া। প্রতিদিন ১০০০ মানুষকে খাবার দিচ্ছেন তিনি। এছাড়াও তালিকা করে রাজধানীর মধ্যবিত্ত পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

করোনায় আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রি হাসপাতালের নার্স ও স্টাফদের খাবারের কষ্টের সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রথমেই তিনি এগিয়ে আসেন। প্রতি রাতে নার্স স্টাফদের জন্য খাবার পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তিনি। যদিও তারপর আর প্রয়োজনও হয়নি।

আইনজীবী আহসান হাবিব ভূইয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘মানুষ বাচঁলে বাচবে দেশ। দেশের এই দুর্যোগের সময় মানুষের পাশে দাড়াঁতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। সাহায্য চেয়ে অনেকেই এসএমএস করছেন। লজ্জায় কাউকে বলতে পারছেন না। আমরা চেষ্টা করছি পরিচয় গোপন রেখে সাহায্য দিয়ে আসতে। খাদ্য সামগ্রীর সঙ্গে প্রয়োজনীয় ওষুধ, শিশু খাদ্য যার যার প্রয়োজন আমরা তাই দেওয়ার চেষ্টা করছি।’

প্রতিদিন ১০০০ মানুষকে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করছি। এছাড়াও ঈদকে সামনে রেখে ঈদের পোশাক, বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে।

এই দুর্দিনে মানুষের পাশে দাঁড়াতে বিত্তবানদেরকেও আহবান জানান এ দুই আইনজীবী।

সারাবাংলা/এজেডকে/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন