বিজ্ঞাপন

অনলাইনে ‘সীমিত আকারে’ ক্লাসে চান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

June 10, 2020 | 11:37 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: করোনাকালের বন্ধের ভেতর অনলাইনে সীমিত আকারের ক্লাস চান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, পুরোদমে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সক্ষমতা আমাদের নেই। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের পূর্ণ সুবিধা নেওয়ার মতো বাস্তবতাও সবার নেই। বড় একটি অংশের শিক্ষার্থীদের সামর্থ্যের তুলনায় ইন্টারনেটের খরচও বেশি। সবার কাছে প্রয়োজনীয় ডিভাইসও নেই।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১০ জুন) অনলাইন নিউজ পোর্টাল সারাবাংলা ডটনেট আয়োজিত সমসাময়িক বিষয়ে অনুষ্ঠান ‘সারাবাংলা ফোকাস’-এ এসব কথা বলেন অংশগ্রহণকারীরা। ফেসবুক লাইভের এই আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়র (বুয়েট) শিক্ষক বাদল মহালদার, প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আব্দুল আহাদ, বুয়েট শিক্ষার্থী সুমিত কুমার সাহা ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রামিসা আনজুম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সারাবাংলার প্রধান প্রতিবেদক এমএকে জিলানি।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বুয়েট শিক্ষক বাদল মহালদার বলেন, অনলাইনে সব ক্লাস নেওয়ার মতো সক্ষমতা আমাদের নেই। তবে সময়টাকে কাজে লাগাতে হলে আমাদেরকে অনলাইনে সীমিত আকারে হলেও ক্লাস চালু করতে হবে।

তিনি বলেন, এটা সত্য যে সবাই বইপত্র বাসায় নিয়ে যেতে পারেনি। গ্রামে ও মফস্বলে ইন্টারনেটের গতি অনেক কম। সেখানে বসে ক্লাস করা খুবই কঠিন। তবু আমাদের একটা সমাধানে আসতে হবে। একটি পথ বের করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

বাদল মহালদার বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বলি। ফেসবুক ব্যবহার মানেই কিন্তু ডিজিটাল নয়। আমরা এখনো পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করি। এখন আবার বইও অনলাইনে দিতে হয়। এখানে কপিরাইট ইস্যু রয়েছে। চাইলেই সেটি করা যায় না। এজন্য আমাদের একটি কমন প্লাটফর্ম তৈরি করতে হবে, যেন এই সমস্যাগুলো এড়ানো যায়।

প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আব্দুল আহাদ বলেন, অনলাইনে ডাটা খরচ বেশি— এটা সত্য। তবে ঢাকায় না থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের পরিবহন ও আবাসন খরচ কমেছে। সেটাও কিন্তু ভাবতে ‍হবে। অনলাইন কিন্তু আমাদের জন্য একটা আশীর্বাদ। সমন্বয়ের ক্ষেত্রে হয়তো সময় লাগবে। তবে এটাকে কাজে লাগানো গেলে বিষয়টা সহজ হয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের যেসব শিক্ষক দেশের বাইরে পড়ালেখা করেছেন, অনলাইনে ক্লাসের বিষয়ে তাদের অভিজ্ঞতা ভালো। দেশের বাইরে পড়াশোনার ক্ষেত্রে এটি বহুল ব্যবহৃত মাধ্যম। এখানে আমাদের প্রস্তুতি ছাড়াই এই মাধ্যমে শিফট করতে হয়েছে। এজন্য কিছু প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে। তবে নতুন আইডিয়ার মাধ্যমে এগুলোর সমাধানে যেতে হবে।

বিজ্ঞাপন

বুয়েট শিক্ষার্থী সুমিত কুমার সাহা বলেন, অনলাইনে ক্লাস প্রয়োজন, তবে এর আগে আমাদের কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। বুয়েটের একটি জরিপের উদাহরণ দিয়ে বলি, আমাদের ২৫০ জন শিক্ষার্থীর কাছে অনলাইন ক্লাস করার মতো ডিভাইস নেই। ৭৫০ জনের অনলাইন সংযোগ নেই বা দুর্বল সংযোগ রয়েছে। আর ৭০০ জন শিক্ষার্থীর হাতে নিয়মিত ডাটা কেনার মতো পর্যাপ্ত টাকাই নেই। এদের বাইরে রেখে ক্লাস চালু করবেন কিভাবে?

তিনি বলেন, আমাদের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকে ল্যাবে নিয়মিত ক্লাস করতে হয়। সেটি কি অনলাইনে করা সম্ভব? তবে আমরা কিছু আইডিয়া দিয়েছি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। লাইভ ক্লাস না করিয়ে রেকর্ড করা ক্লাস প্রচার করলে সুবিধা। ভিডিও ক্লাসের সঙ্গে অডিও ক্লাসও অনলাইনে দিলে সহজে ডাউনলোড করা যাবে। মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে কথা বলে ডাটার দাম কমাতে হবে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ধারে ডিভাইস দেওয়া যেতে পারে।

সুমিত আরও বলেন, ফোর্থ ইয়ারে যারা ল্যাবে বা ফিল্ডে গিয়ে থিসিস করবে তাদের জন্য ক্লাস চালুর পর সময় দিতে হবে। আর ক্লাসের জন্য এমন একটি প্ল্যাটফর্ম চালু করতে হবে, যেটি সবার জন্য সহজ হবে।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়েরর শিক্ষার্থী রামিসা আনজুম বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এই লকডাউনের সময়ও অনলাইনে ক্লাস করে আমরা সেমিস্টার শেষ করে ফেলেছি। ক্লাসের পাশাপাশি প্রেজেন্টেশনও দিতে হয়েছে। শুধু পরীক্ষা হয়নি। অনলাইনে ক্লাস নিয়মিত করা গেলে অনেক সময় বেঁচে যাবে।

বিজ্ঞাপন

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন