বিজ্ঞাপন

এলাকার উন্নয়নে এমপিরা পাচ্ছেন ২০ কোটি টাকা, একনেকে অনুমোদন

June 21, 2020 | 5:59 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সংসদীয় আসনগুলোর অবকাঠামো উন্নয়নে সংসদ সদস্যদের (এমপি) জন্য ২০ কোটি টাকা করে বরাদ্দ দেওয়ার প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এর আওতায় আগামী চার বছরে প্রতিবছর ৫ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারবেন ২৮০ জন সংসদ সদস্য।

বিজ্ঞাপন

ছয় হাজার ৪৭৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকার এই প্রকল্পসহ মোট ১০টি প্রকল্প অনুমাদন দেওয়া হয়েছে একনেক বৈঠকে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৯ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। পুরোটাই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে।

আরও পড়ুন- এলাকার উন্নয়নে তৃতীয় দফায় ২০ কোটি টাকা করে পাচ্ছেন এমপিরা

রোববার (২১ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেল কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। এসময় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরে বৈঠক শেষে তিনি ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিং করেন।

বিজ্ঞাপন

ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী এমপিদের জন্য ‘অগ্রাধিকারভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো প্রকল্প-৩’ শীর্ষক প্রকল্পটি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে অনুমোদন দিয়েছেন। এর কারণ প্রধানমন্ত্রী গ্রাম উন্নয়নকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। শহরের সুবিধা গ্রামে নিয়ে যেতে কাজ করছেন। এছাড়া এমপিরা যখন গ্রামে যান, সাধারণ জনগণ ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ বা রাস্তা উন্নয়নের মতো নানা দাবি জানান। এই প্রকল্প সেসব প্রতিশ্রুতি পূরণে সহায়ক হবে। তবে প্রকল্পটির মানসম্মত  বাস্তবায়নে বিশেষ সতর্ক  থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এমপিদের জন্য হাতে নেওয়া এই প্রকল্পের আওতায় প্রত্যেকে বছরে পাঁচ কোটি টাকার পছন্দমতো প্রকল্প দিতে পারবেন। গ্রামীণ উন্নয়নকে মাথায় রেখে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে বলে সিটি করপোরেশন এলাকার সংসদীয় আসনের এমপিরা এই প্রকল্পের বাইরে থাকছেন। সুনির্দিষ্ট এলাকা নেই বলে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপিরাও নেই এই প্রকল্পে। ছয় হাজার ৪৭৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকার প্রকল্পটি জুলাইয়েই শুরু হয়ে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে প্রত্যন্ত পল্লী অঞ্চলের সঙ্গে নিকটবর্তী গ্রোথ সেন্টার, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, শিক্ষা কেন্দ্র, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসহ উপজেলা ও জেলার যাতায়াত সুবিধা বাড়ানো হবে। ফলে পল্লী অঞ্চলে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণ হবে।

বিজ্ঞাপন

এর আগে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ প্রথম সরকার গঠনের পর প্রত্যেক এমপি নিজ আসনের অবকাঠামো উন্নয়নে ১৫ কোটি টাকা করে পেয়েছিলেন। সেসময় প্রকল্পের ব্যয় ছিল ৪ হাজার ৮৯২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এটি ২০১০ সালের মার্চ থেকে ২০১৬ সালে জুনে শেষ হয়।  আওয়ামী লীগ সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে এমপিদের ২০ কোটি টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। এ পর্যায়ে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৬ হাজার ৭৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদে এটি চলমান রয়েছে।

আরও পড়ুন- করোনা মোকাবিলায় এসি ব্যবহারে সতর্ক থাকার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর

একনেকে অনুমোদন বাকি ৯ প্রকল্প

বৃহত্তর পটুয়াখালী জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (৬৯১ কোটি ৮০ লাখ টাকা), জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি (দ্বিতীয় সংশোধিত) (৪০৯ কোটি টাকা),

মনু নদীর ভাঙন থেকে মৌলভীবাজার জেলা সদর, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলা রক্ষা (৯৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা),  হাওর অঞ্চলে টেকসই পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও হাইজিন ব্যবস্থার উন্নয়ন (৫৫৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা), জামালপুর জেলা কারাগার নির্মাণ (২১০ কোটি টাকা), গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (চট্টগ্রাম জোন, প্রথম সংশোধিত) (৬৯২ কোটি ৩৬ লাখ টাক),  টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ (হরিদাসপুর)-মোল্লাহাট (ঘোনাপারা) আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (৬১২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা), বাংলাদেশ রেলওয়ের ১০০ মিটার গেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ পুর্নবাসন (দ্বিতীয় পর্যায়) (৭৪ কোটি ১২ লাখ টাকা) এবং বিএএফও বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণ, যশোর (৩২১ কোটি টাকা)।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- জীবন চলতে থাকবে, জীবন স্থবির থাকতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী

করোনায় এডিপি বাস্তবায়ন কমেছে

ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে মাস পর্যন্ত সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তায়ন হয়েছে ৫৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এসময় মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো ব্যয় করতে পেরেছে ১ লাখ ১৫ হাজার ৪২১ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে বাস্তবায়ন হয়েছিল ৬৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ। ওই সময় ব্যয় হয়েছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৪৩ কোটি টাকা।

মন্ত্রী বলেন, এবছর কম অগ্রগতি হওয়ার কারণ সবারই জানা। কোভিড-১৯-এর কারণে প্রকল্প বাস্তবায়ন কম হয়েছে। তবে শেষ দিকে বিল পরিশোধের কারণে বেশি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানান তিনি।

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন