বিজ্ঞাপন

পাটের নতুন জাত, উৎপাদন বাড়বে ২৫ ভাগ

March 6, 2018 | 2:50 pm

এমদাদুল হক তুহিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: সোনালী আঁশের দেশ বাংলাদেশ। একসময় দেশের পাট, পাটজাতপণ্য কিংবা পাটবীজ বিদেশে রপ্তানী হলেও সেই দিন আর নেই। এখন বিদেশ থেকেই আমদানি করা হচ্ছে উন্নত জাতের পাটবীজ। আর এ আমদানি নির্ভরতার নব্বই ভাগই ভারতমূখী।

তবে আশার কথা এবার দেশের বিজ্ঞানীদের গবেষণায়ই আসছে পাটের একটি নতুন জাত। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিজেআরআই) মহাপরিচালক ড. মো: মনজুরুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘২০১৮ সালের মধ্যেই পাটের আরও একটি নতুন জাত আসছে। হয়তো জাতটি এ বছরই ছাড় করতে পারবো। রবি-১ নামের পাটের নতুন এই জাতে প্রচলিত জাতের চেয়ে উৎপাদন বাড়বে ২০ থেকে ২৫ ভাগ। এই জাতের আঁশের মান হবে প্রচলিত জাতের চেয়ে আরো ভাল।’  তিনি বলেন,  ‘আমাদের পাইপ লাইনে আরও কয়েকটি জাত রয়েছে। লবণাক্ততা সহিষ্ণু ‘বিজেআরআই দেশী পাট-৮’ নিয়েও আমরা সাফল্যের প্রায় দ্বারপ্রান্তে।

এদিকে, পাটের আরও কয়েকটি জাত নিয়েও গবেষণা প্রায় শেষ প্রান্তে। লবণাক্ততা সহিষ্ণু ‘বিজেআরআই দেশী পাট-৮’ নিয়ে বিজ্ঞানীরা বেশ আশাবাদী। জানা গেছে, দীর্ঘ ৩ বছর ধরে জাতটি নিয়ে মাঠ পর্যায়ে গবেষণা চলছে। শেষ পর্যায়ের গবেষণা চলাকালে দেশের কয়েকটি অঞ্চলে এ জাতের পাট উৎপাদনে প্রচলিত জাতের চেয়ে ফলন হয়েছে বেশ ভালো।

বিজ্ঞাপন

পাটকে এক ফসলী থেকে তিন ফসলীতে রুপান্তরের চেষ্টাও চলছে। এতে শীত, গ্রীষ্ম ও বর্ষা এই তিন মৌসুমেই দেশে পাট উৎপাদন হবে। বর্তমানে শুধু বর্ষা মৌসুমেই পাট উৎপাদন হয়। পাটের জীবন রহস্য উন্মোচন পরবর্তী গবেষণা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সারাবছরই যাতে পাট উৎপাদন হয়, এমন জাত উদ্ভাবনের চেষ্টা চলছে। ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো পালিত জাতীয় পাট দিবসের এক অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম জানান, পাটের জীন তত্ত্বকে কাজে লাগিয়ে শিগগিরই আসছে তিন ফসলী পাটের জাত। যদিও ওই ঘোষণার পর এক বছর পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে অগ্রগতি সম্পর্কে জানা যায় নি। তবে একটি সূত্র বলছে, গবেষক ড. শামিউল হক ও শহিদুল হকের নেতৃত্বে একটি দল পাটের জীবন রহস্য পরবর্তী কার্যক্রম এগিয়ে নিতে কাজ করছে।

পাট বীজ তথ্য: পাট অধিদফতরের তথ্য মতে, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে দেশে উচ্চ ফলনশীল পাট বীজের চাহিদা ছিল ৫ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। বিএডিসি, পাট অধিদফতর, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর মিলিয়ে ২ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন পাট বীজের যোগান দেয়। এ বছরে বাকি ৩ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন পাটবীজ আমদানি করতে হয়। আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরের পরিকল্পনায় পাটবীজের চাহিদা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৯০০  মেট্রিক টন। বীজের চাহিদা বাড়লেও পাটবীজের আমদানি নির্ভরতা কমাতে চায় সরকার। পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় চাহিদা ১০০ মেট্রিক টন বাড়লেও সেক্ষেত্রে আমদানি লক্ষ্যমাত্রা কমানো হয়েছে ৪০০  মেট্রিক টন। এক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণভাবে ৫০০ মেট্রিক টন পাটবীজের উৎপাদন বৃদ্ধি তথা সরবরাহের লক্ষ্য রয়েছে।

জানতে চাইলে পাট অধিদফতরের মহাপরিচালক মো: শামছুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, কাঁচাপাটের রফতানির চেয়ে এখন অভ্যন্তরীণ ব্যবহার বাড়াতেই আমরা বেশি জোর দিচ্ছি। বীজ আমদানিতে নির্ভরতা কমাতেও চেষ্টা চলছে।

বিজ্ঞাপন

জেডিপিসি’র নির্বাহী পরিচালক রীনা পারভীন বলেন, দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বহির্বিশ্বেও আমাদের পাটপণ্য এখন পরিচিত। এসব বহুমুখী পণ্যকে আরও জনপ্রিয় করে তুলতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের ৪৯ টি দূতাবাসকে আমরা চিঠি দিয়েছি। এসব দূতাবাসে পাট কর্ণার করার আহ্বান জানিয়েছি।

আর জেডিপিসি’র পরিচালক মঈনুল হক সারাবাংলাকে জানান, দিবসটি উপলক্ষে গতবারের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রীকে পাটের জামদানি শাড়ি উপহার দেয়ার কথা রয়েছে।

সারাবাংলা/ইএইচটি/এমএস

 

বিজ্ঞাপন

 

 

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন