বিজ্ঞাপন

ছোট সংগ্রহেও মোহামেডানকে হারালো গাজী গ্রুপ

March 6, 2018 | 5:04 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

কামরুল ইসলাম রাব্বির বাউন্সারটা মোহাম্মদ আজিমের ব্যাটে লেগে উড়ে গেল আকাশে। গালিতে ক্যাচটা নিয়েই উল্লাসে মেতে উঠলেন মাহেদী হাসান, ডাগআউট থেকে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটারসের ক্রিকেটার থেকে বল বয়রাও দৌড় শুরু করে দিলেন মাঠে। প্রায় শুনশান মিরপুর তবু গাজী গ্রুপের উৎসবের কোরাসে মুখর। ১৩৭ রান নিয়েও যে শেষ পর্যন্ত মোহামেডানকে ২৯ রানে হারিয়ে দিল, এমন বাঁধনহারা উদযাপনে তো তারা হারিয়ে যেতেই পারে!

মিরপুরের উইকেট আজ মনে করিয়ে দিচ্ছিল ত্রিদেশীয় সিরিজে ফাইনালের সেই উইকেটকে। বল হঠাৎ করে লাফিয়ে উঠছিল, কখনো টার্ন নিচ্ছিল অনুমানের চেয়ে অনেক বেশি। তার পরও ১৩৭ রান করে জয়ের চিন্তা করাও অনেক বড় কষ্টকল্পনা। কে জানত, বোলিং নিয়ে এবারের লিগে হাপিত্যেশ করা গাজী গ্রুপ এমন অসাধ্য সাধন করে ফেলবে?

সেই আভাস মোহামেডানের ইনিংসের শুরুতেও পাওয়া যায়নি খুব একটা। নাঈম হাসানের বলে রনি তালুকদারের ক্যাচ দিয়ে মোহামেডানের হোঁচট খাওয়ার শুরু। স্কোরকার্ডে রান তখন ১৮, সেই ১৮ রানেই ফিরে গেলেন আমিনুল ইসলাম। তবে রনির ভাই জনি তালুকদার ছিলেন, শামসুর রহমানকে নিয়ে এগুচ্ছিলেন ভালোই। কিন্তু দলের ৪৬ রানে জনিকে ফেরালেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। ১০ রান পর নাঈম হাসানের বলে উইকেটের পেছনে জাকের আলীকে ক্যাচ দিলেন শামসুর রহমান। ৬৯ রানে যখন ইরফান শুক্কুরও আউট হয়ে গেলেন, ঈষাণ কোণে আশঙ্কার মেঘটা আরও কাছে আসছিল মোহামেডানের।

বিজ্ঞাপন

গাজী গ্রুপ ততক্ষণে ভালোমতোই চেপে ধরেছে প্রতিপক্ষকে। প্রতি ওভারেই আপিল হচ্ছিল দুয়েকটি। এর মধ্যে উইকেটকিপার জাকের আলী স্টাম্পিং-ক্যাচের সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন, অতি উত্তেজনায় বেশ কিছু রান বাইও হয়েছে। নইলে মোহামেডানের অবস্থা আরও খারাপ হতেই পারত।

তবে মোহামেডানকে এরপর বড় ধাক্কাটা দিয়েছেন নাঈম হাসান। ৫ উইকেটে যখন রান ৮৪, জয় থেকে তখন ৫৪ রান দূরে। রকিবুলই হাল ধরে রেখেছিলেন, কিন্তু ২২ রান করে মাহেদীকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন নাঈমের বলে। সেটাই যেন বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে দিল মোহামেডানের।

পরের আধ ঘণ্টা যেন জমজমাট সিনেমার শেষ অঙ্কের মতোই দেখতে দেখতে হয়ে গেল। বিপুল শর্মা রাব্বির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে এলেন, মিরপুরে মোহামেডানের অল্প কজন সমর্থক ‘মিষ্টি’ ভাষাতেই তাকে ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে সম্ভাবনা জানালেন। তাইজুল শুরুতেই এসে মারলেন চার, আবার চাঙা হলো মোহামেডান গ্যালারি। কিন্তু মেহেদীর বলে বোল্ড হয়ে ফিরে গেলেন ৫ রানে। মোহামেডান তখন ১০৫ রানে হারিয়ে ফেলেছে ৮ উইকেট, গাজীর জয়টা হাতছোঁয়া দূরত্বে। কাজী অনিককে ফিরিয়ে দিলেন মাহেদী, মোহামেডানের গ্যালারি তখন একেবারেই শুনশান। আজিমকে ফিরিয়ে শেষ অঙ্কটা টেনে দিলেন রাব্বি।

বিজ্ঞাপন

অথচ লাঞ্চের আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল গাজীর ইনিংস। শুরুটা অবশ্য খারাপ হয়নি, ১ উইকেট হারিয়ে তুলে ফেলেছিল ৪৩ রান। কিন্তু ১৩ রান করে মুমিনুল হকের ফিরে যাওয়ার পরেই যেন শুরু হয়ে যায় মড়ক। দেখতে দেখতে সেটা হয়ে যায় ৬ উইকেটে ৫০ রান, গাজীর তখন ১০০ রান করা নিয়েই টানাটানি। নাদিফ চৌধুরী ও আসিফ আহমেদের ৫৯ রানের জুটিতে সেটা পেরুল। নাদিফ করলেন ২৮, আসিফ ৩৫। কিন্তু তাও ৩৫.৪ ওভারেই ১৩৭ রানে অলআউট গাজী।

কে জানত, জয়ের জন্য সেটাই হয়ে যাবে যথেষ্ট? তার চেয়েও বড় কথা, অবনমন লড়াইয়ে থাকা তাদের জন্য জয়টা দরকার ছিল খুব করেই। আট ম্যাচে এটি তাদের তৃতীয় জয়, পয়েন্ট তালিকার নিচ থেকে তিনে আছে। সমান ম্যাচে মোহামেডানের এটি চতুর্থ হার, তাদের পয়েন্ট ৭।

সারাবাংলা/এএম/এমআরপি

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন