বিজ্ঞাপন

ডাবল-হ্যাটট্রিকে মাশরাফির ইতিহাস

March 6, 2018 | 5:23 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

শেষ ওভারে দরকার ১৩ রান, অগ্রণী ব্যাংকের হাতে ৪ উইকেট। ক্রিজে ধীমান ঘোষ ২৬ বলে করে ফেলেছেন ৪৬ রান। আবাহনীর হয়ে শেষ ওভারটা করতে এলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। এরপর যা হলো, ফতুল্লার গুটিকয় দর্শক সেটা মনে রাখবেন অনেক দিন।

শেষ ওভারের প্রথম বলটা সিঙ্গেল নিলেন আবদুর রাজ্জাক, ক্রিজে ধীমান। ওই বলেই আউট ধীমান, পরের বলে শান্তকে ক্যাচ দিলেন রাজ্জাক। মাশরাফির সামনে হ্যাটট্রিকের সুযোগ, শফিউল ক্যাচ তুলে দিলেন সাইফ হাসানকে। মাশরাফির লিস্ট ‘এ’ তে হ্যাটট্রিক। তবে চমকের বাকি ছিল আরও।

ফজলে রাব্বি পরের বলে ক্যাচ দিলেন উইকেটের পেছনে, পর পর চার বলে উইকেট পেলেন মাশরাফি। বাংলাদেশের হয়ে লিস্ট ‘এ’ তে যে কীর্তি নেই আর কোনো বোলারের। চার বলে ৪ উইকেট নেওয়াকে অনেকেই বলেন ডাবল হ্যাটট্রিক। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে এই ডাবল হ্যাটট্রিক করেছিলেন শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গা। ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচে বাংলাদেশের এই কীর্তি আছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের আর টি-টোয়েন্টিতে আছে আল আমিনের। ১১ রানে জিতে প্রিমিয়ার লিগে শিরোপার আরও কাছে এখন আবাহনী।

বিজ্ঞাপন

এবারের লিগটা মাশরাফির জন্য কাটছে স্বপ্নের মতোই। এই ম্যাচের আগেই হয়ে গিয়েছিল ১৯ উইকেট, প্রিমিয়ার লিগেই যা সর্বোচ্চ। কে জানত, আজ ছাড়িয়ে যাবেন আগের সব ম্যাচের অর্জন। অন্তত শেষ ওভারের আগেও তো তা ভাবা যায়নি।

ম্যাচটা তো ৪৯তম ওভারের আগেও দুলছিল পেন্ডুলামের মতো। আবাহনীর ২৯০ রান তাড়া করে অগ্রণী ব্যাংক তীরের কাছাকাছি প্রায় পৌঁছেই গিয়েছিল। অগ্রণী ব্যাংক যখন ২৫০ ছুঁয়েছে, তখনো শেষ ২২ বলে দরকার ছিল ৪০। ধীমান ঘোষ সেটি একাই করে ফেলবেন বলে মনে হচ্ছিল। ৪৭তম ওভার থেকে এলো ১৩ রান, পরের ওভার থেকে এলো ৮ রান। শেষ দুই ওভারে দরকার ২৫ রান, ৪৯তম ওভার থেকে ধীমান-রাজ্জাক নিলেন ১২ রান। শেষ ওভারে যখন দরকার ১৩ রান, ধীমান তখন ২৬ বলে করে ফেলেছেন ৪৬। কে জানত, শেষের গল্পটা নতুন করে লিখে ইতিহাস গড়বেন মাশরাফি।

বিজ্ঞাপন

অগ্রণী ব্যাংকের এতদূর যাওয়ার মূল কৃতিত্ব অবশ্য শাহরিয়ার নাফীসের। আগের ম্যাচে ৯৯ রানে আউট হয়ে গিয়েছিলেন, তবে আজ সেই আফসোস করতে হলো না তাকে। ৬৩ রানে দুই উইকেট পড়ার পর রাজা আলী দারের সঙ্গে তার জুটিতেই ম্যাচে ছিল অগ্রণী। তৃতীয় উইকেটে দুজন মিলে যোগ করলেন ১৪৬ রান। তবে রান রেটের সঙ্গে ঠিক তাল মেলাতে পারছিলেন না শুরুতে। ৬৯ বলে ফিফটি করেছিলেন নাফীস, পরের ফিফটির জন্য খেলতে হয়েছে মাত্র ৩২ বল। ১১৯ বলে ১২১ রান করে যখন আউট হলেন, তখনো জয় থেকে ৬৩ রান দূরে অগ্রণী ব্যাংক, বল বাকি ৩৮টি।

সেখান থেকেই ধীমানের ব্যাটে কাছে চলে এসেছিল তারা। তবে মাশরাফির জন্যই তা হলো না। শেষ পর্যন্ত ৪৪ রানে ৬ উইকেট আড়াল করে দিয়েছেন দুই সেঞ্চুরিয়ানকে।

শাহরিয়ার নাফীসের সেঞ্চুরিটা ম্যাচ জেতাতে পারেনি, তবে নাজমুল হোসেন শান্তর সেই আফসোস নেই। ১০২ রানে ৩ উইকেট যখন আবাহনী হারিয়ে ফেলে, ম্যাচের বাকি ২৬ ওভারেরও বেশি। সেখান থেকে শান্ত ১২৩ বলে ১৩৩ রানের সেঞ্চুরি আবাহনীকে নিয়ে গেছে ৩০০র কাছাকাছি। ৩৮ বলে ৪৬ রান করে শেষের দিকে শান্তকে সঙ্গ দিয়েছেন মোহাম্মদ মিঠুন। শেষ ১০ ওভারে ১১০ রান করেছে আবাহনী, দিন শেষে সেটাই গড়ে দিয়েছে পার্থক্য।

সারাবাংলা/এএম/এমআরপি

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন