বিজ্ঞাপন

করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ধাপের পরীক্ষা সফল— দাবি গ্লোব বায়োটেকের

July 2, 2020 | 9:50 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধে ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালসের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, এরই মধ্যে এই ভ্যাকসিন প্রাণী শরীরে প্রয়োগের প্রথম ধাপ সফল হয়েছে। তারা এবার প্রাণী শরীরে প্রয়োগের দ্বিতীয় ধাপে যাবেন, যে ধাপে সময় লাগবে কয়েক মাস। এই ধাপে সাফল্য এলে তবেই মানবশরীরে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগের দিকে যাবেন।

বিজ্ঞাপন

গ্লোব বলছে, পশুর শরীরে পরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপে ভ্যাকসিনটি সফল হলে সেটিকে মানবদেহে পরীক্ষা জন্য সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চাওয়া হবে। কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলে তারপর ভ্যাকসিনটির ‘হিউম্যান ট্রায়াল’ শুরু হবে। প্রতিষেধকটি পশুর শরীরে পরীক্ষার প্রথম ধাপের সাফল্যকে বাংলাদেশের জন্য বড় অগ্রগতি বলে বলে মনে করছে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড।

বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) দুপুরে তেজগাঁওয়ে প্রতিষ্ঠানটির করপোরেট অফিসে সংবাদ সম্মেলনে করোনা ভাইরাসের এই ভ্যাকসিন আবিষ্কারের বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দেন গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের কর্মকর্তারা।

প্রতিষ্ঠানের রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান ডা. আসিফ মাহমুদ প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে এই ভ্যাকসিন সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা করোনার ভ্যাকসিনে সফল হয়েছি। অ্যানিম্যাল পর্যায়ে এটা সফল হয়েছে। এখন আমরা আশা করছি, মানবদেহেও সফলভাবে কাজ করবে আমাদের ভ্যাকসিন। আমরা বিষয়টি নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে যাব। এরপর আমরা তাদের দেওয়া গাইডলাইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশিদ বলেন, করোনাভাইরাসের প্রকোপে সারাবিশ্বের মানুষ বিপর্যস্ত। তাই অন্য দেশের আশায় বসে না থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রয়োজনে আমরা আমাদের নিয়মিত গবেষণার পাশাপাশি কভিড-১৯ রোগ শনাক্তকরণ কিট, টিকা ও ওষুধ তৈরি সংক্রান্ত গবেষণাকর্ম শুরু করেছি। আমাদের এই ভ্যাকসিন সফল হলে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় যেমন হবে, তেমনি দেশের মানুষ সাশ্রয়ে মানসম্মত সেবা পাবে। এখন দেশ ও দেশের মানুষের উপকারে আসতে পারলেই আমাদের সার্থকতা। শুধু ব্যবসার কথা চিন্তা করে নয়, দেশের জন্য কিছু একটা করার জন্যই আমরা নতুন নতুন উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, এই ভ্যাকসিনটি সফল হলে আমরা এটা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতি উৎসর্গ করতে চাই। আমরা নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আমাদের গবেষণা কেন্দ্রে প্রাণীর ওপর প্রাথমিক ট্রায়াল করেছি। বর্তমানে গ্লোব বায়োটেকের তেজগাঁওয়ের ল্যাবে বাকি কাজ চলছে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন গ্রুপের পরিচালক ও নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাস্থ্যবান্ধব বর্তমান সরকার দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড স্বাস্থ্যসেবায় নতুন নতুন চিকিৎসাসেবা উদ্ভাবনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। করোনার এই ভ্যাকসিন আমরা মুজিব জন্মশতবার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করার ঘোষণা দিয়েছি।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এনসিবিআই ভাইরাস ডেটাবেজ অনুযায়ী মঙ্গলবার পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী পাঁচ হাজার ৭৪৩টি সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্স জমা হয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ থেকে জমা হয়েছে ৭৬টি। ওই সিকোয়েন্স বায়োইনফরম্যাটিক্স টুলের মাধ্যমে পরীক্ষা করে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড তাদের টিকার টার্গেট নিশ্চিত করে, যা যৌক্তিকভাবে এই ভৌগোলিক অঞ্চলে বেশি কার্যকর হবে। ওই টার্গেটের সম্পূর্ণ কোডিং সিকোয়েন্স যুক্তরাষ্ট্রের এনসিবিআই ভাইরাস ডেটাবেজে জমা দেওয়া হয়েছে এবং এনসিবিআই তা স্বীকৃতি দিয়ে প্রকাশ করেছে বলেও জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, প্রতিষ্ঠানটি গত ৮ মার্চ এই টিকা আবিষ্কারে কাজ শুরু করে। এই টিকা আবিষ্কারে সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন প্রতিষ্ঠানের সিইও ড. কাকন নাগ এবং সিওও ড. নাজনীন সুলতানা। সব পর্যায় যথাযথভাবে পেরোতে পারলে ৬ থেকে ৭ মাসের মধ্যে টিকাটি বাজারে আনা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ গ্লোব বায়োটেকের।

সারাবাংলা/এসবি/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন