বিজ্ঞাপন

এমডির তথ্যে চেয়ারম্যান গ্রেফতার

July 15, 2020 | 8:13 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদ পারভেজের তথ্যের ভিত্তিতেই চেয়ারম্যান মো. সাহেদের অবস্থান জানা যায়। গ্রেফতারের আগে তিনি কখনো কক্সবাজার, কখনো কুমিল্লা, কখনো ঢাকায় এবং সবশেষ সাতক্ষীরায় অবস্থান নেন। অবশেষে সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সময় সাহেদকে গ্রেফতার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৫ জুলাই) বিকেল ৩টায় র‌্যাব সদর দফতরে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে র‌্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এসব তথ্য জানান।

আরও পড়ুন- সাহেদকে ডিবিতে হস্তান্তর

তিনি বলেন, গত ৯ দিনে সাহেদ গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে ছিলেন। স্থান পরিবর্তন করেছেন। গোঁফ ফেলে দিয়েছেন। মাথার চুলও কলপ করেছেন। কখনো নিজের গাড়িতে, কখনো ভাড়া গাড়িতে, আবার কখনো সিএনজিতে— এমনকি অনেকবার ট্রাকে চড়েও অবস্থান পরিবর্তন করেছেন। র‌্যাবও নজরদারি করেছে। অনুসরণ করেছে। কৌশলের সঙ্গে অবস্থান পরিবর্তন করায় গ্রেফতার এড়িয়েছেন সাহেদ। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। শেষ পর্যন্ত গোয়েন্দা জালে আটকা পড়েছেন।

বিজ্ঞাপন

সাহেদের অবস্থান শনাক্ত করার তথ্যের অন্যতম উৎস ছিলেন রিজেন্ট গ্রুপের এমডি মাসুদ পারভেজ। গতকাল মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) তাকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, মাসুদ পারভেজ গ্রেফতারের পর গতকাল রাত ৮টায় র‌্যাবকে জানায়, সাহেদ সম্ভাব্য বেশ কয়েকটি সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টায় আছেন। এর মধ্যে বিশেষভাবে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত এলাকার কথা উল্লেখ করেন তিনি। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ওই সীমান্ত ছাড়াও বুড়িমারী, হিলি, বেনাপোল, সাতক্ষীরা, শ্রীমঙ্গলসহ বিভিন্ন  সীমান্ত পয়েন্টে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। র‌্যাবের এয়ার উইংও গতকাল থেকে সার্বক্ষণিক সাপোর্ট দিয়েছে। যার ফলে সাহেদ পালাতে পারেনি।

আরও পড়ুন- সাহেদকে নিয়ে গোপন বাসায় র‌্যাবের অভিযান, জাল টাকা উদ্ধার

বিজ্ঞাপন

এক প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, সাহেদ একজন সেরা প্রতারক। তার প্রতারণার কৌশল সবাইকে অবাক করেছে। সাধারণ মানুষ আজ হতবাক। ভুক্তভোগীরা আসছেন আমাদের কাছে। আমরা সব ধরনের আইনি সহায়তা নেওয়ার জন্য পুলিশের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছি। আরও যারা ভুক্তভোগী আসবেন, তাদেরও আইনি সহায়তা দেওয়া হবে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব প্রধান বলেন, ভোরে যখন তাকে গ্রেফতার করা হয়, তখন স্থানীয় অনেক লোকজন উপস্থিত ছিলেন। তারা দেখেছেন কিভাবে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি ভারত থেকে আসেননি, বরং ভারতে পালানোর সময় তাকে ধরা হয়েছে। তার কাছে অস্ত্র ও গুলিও পাওয়া গেছে। এ নিয়ে দেবহাটা থানায় অস্ত্র আইনে র‌্যাব মামলা করেছে আজ।

আরও পড়ুন- ‘বোরকা পরে নৌকায় ভারতে পালাতে চেয়েছিল সাহেদ’

সাহেদকে ঢাকায় আনার পর তাকে নিয়ে উত্তরার গোপন একটি অফিসে অভিযান চালায় র‌্যাব। ওই অফিস থেকে এক লাখ ৪০ হাজার জাল টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, এসব জাল টাকা দিয়েও সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন সাহেদ। তিনি মানুষের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। মানুষের কাছ থেকে বেশি দামে বাকিতে মাল কিনে তা কম দামে বিক্রি করে দিয়ে ক্যাশ টাকা সংগ্রহ করতেন। কিন্তু ওইসব পাওনাদারদের টাকা কোনোদিন পরিশোধ করতেন না। টাকা চাইতে গেলে ভয়ভীতি দেখাতেন। অস্ত্রধারীদের দিয়ে ভয় দেখাতেন। কাউকে কাউকে জাল টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধের কথা বলতেন।

বিজ্ঞাপন

পরে বিকেলে সাহেদকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। সাহেদসহ রিজেন্টের ১৭ জনের নামে দায়ের করা মামলাটি এখন ডিবি পুলিশই তদন্ত করছে।

আরও পড়ুন- ‘জাল টাকায় ঋণ পরিশোধ করতেন সাহেদ’

এর আগে বুধবার (১৫ জুলাই) ভোর সোয়া ৫টার দিকে সাহেদকে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার শাখরা কোমরপুর সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাবের বিশেষ একটি দল। শাখরা কোমরপুর গ্রামের লবঙ্গবতী নদীতীরের ইছামতি খাল দিয়ে তিনি ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। এসময় র‌্যাব তাকে গ্রেফতার করে। র‌্যাব জানিয়েছে, সাহেদ স্থানীয় দালালের মাধ্যমে সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।

সাহেদের রিজেন্ট হাসপাতালে গত ৬ জুলাই অভিযান চালান র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক মামলার তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

আরও পড়ুন-

সাহেদ গ্রেফতার

সাহেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে র‌্যাব

হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হচ্ছে সাহেদকে

সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আনা হলো সাহেদকে

‘দালালের সহায়তায় দেশত্যাগের চেষ্টা করছিল সাহেদ’

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন