বিজ্ঞাপন

সরকারের কোনো কিছুই জনগণ বিশ্বাস করে না: মির্জা ফখরুল

July 30, 2020 | 1:42 am

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সরকারের কোনো কিছুই জনগণ বিশ্বাস করে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২৯ জুলাই) রাতে এক ভার্চুয়াল সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। সদ্য প্রয়াত স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুর স্মরণে এ সভা আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘করোনা যখন শুরু হলো, তখন (তারা)  বিষয়টাকে এমনভাবে উড়িয়ে দিলেন যে এটা কিছুই না। মন্ত্রীরা বললেন, এটা কোনো ব্যাপারই না— সর্দি-কাশি। আমাদের নেত্রীর নেতৃত্বে সব জয় করে ফেলব। আজকে গোটা বাংলাদেশের মানুষ একেবারে অসহায়। না আছে কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা, না আছে কোনো টেস্ট। টেস্টই হয় না, তো আপনি যাবেন কোথায়? টেস্টের রিপোর্টগুলো দুর্নীতি করছে। মানুষ এখন এই সরকারের  কোনো কিছু বিশ্বাস করে না।

‘সবকিছু নিয়ে চলছে চরম দুর্নীতি। আমার কাছে মনে হয় সমস্যা একটাই। সে সমস্যাটা হচ্ছে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা না থাকা। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আনতে পারলে এ সমস্যার সমাধান হবে না। একটা লিবারেল ডেমোক্রেসি প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটা কখনই সম্ভব না, কোনো প্রাইস পে না করলে,’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

শফিউল বারী বাবু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে তার বিনয় ছিল অনুকরণীয়। রাজনীতিবিদদের মধ্যে এটা দেখা যায় না সাধারণত। রাজনীতিতে তার মেধা ও প্রজ্ঞার অনেক পরিচয় আমি পেয়েছি। আমার কাছে মনে হয়, বাবু ঠিক অসুখে মারা যায়নি। বাবুকে কিছুটা মেরেই ফেলা হয়েছে। দীর্ঘদিন নির্যাতন, কারারুদ্ধ থাকা, অসংখ্য মামলা এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে যে অসম্মানজনক আচরণ, ব্যবহার তার সঙ্গে করা হয়েছে— সব মিলিয়ে খুব তাড়াতাড়ি সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে, তাড়াতাড়ি সে মারা গেছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘২০১১ সালের পর প্রতিটি আন্দোলনে একসঙ্গে আমরা কাজ করেছি। পরে ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ ও পরবর্তীকালে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে সে অগ্রসেনানীর ভূমিকা পালন করেছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার যেদিন সাজা হলো, সেদিন ও পরের দিন আমরা একটা মিছিল বের করেছিলাম। সেখানে সে লিড করেছিল। সে ছিল একজন সৎ ন্যায়-নিষ্ঠাবান রাজনীতিবিদ। হি ওয়াজ টোটালি কমিটেড টু বিএনপি পলিটিক্স।’

তিনি বলেন, ‘বাবুর আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না। পরিবারের দিকে নজর দেওয়ার সময় সে খুব কম পেয়েছে। কিন্তু যে সংগঠন সে করেছে, সেই সংগঠনকে দাঁড় করানোর জন্য সে সময়, শ্রম ও মেধা ব্যয় করেছে। স্বেচ্ছাসেবক দলের আলাদা চরিত্র দেওয়া চেষ্টা করেছে।’

বিজ্ঞাপন

‘এখন গোটা পলিটিক্সে নষ্ট সময় চলে এসেছে। খারাপ লোকদের প্রাধান্য বেশি এবং খারাপ লোকেরা অনেক বেশি করে প্রভাব বিস্তার করছে। সেখানে বাবু ছিল ব্যতিক্রম একজন রাজনীতিবিদ,’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজ সারা পৃথিবীতে কর্তৃত্ববাদী সরকার ছড়িয়ে পড়ছে। এই অবস্থা আমাদের দেশেও। সেটা আমরা সবাই জানি। এখানে গণতন্ত্র নেই, বাঁচার অধিকার নেই। এমন একটা সরকার আমাদের ওপর চেপে বসে আছে, জনগণের সঙ্গে যাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা নির্বাচিত নয়। জোর করেই রাতের অন্ধকারে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় বসে আছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের অনেক ত্যাগ স্বীকার করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আমরা করেছি, আরও করতে হবে। এটা কোনো সহজ হিসাব নয়। জনগণে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন আরও বেগবান করতে হবে। সেই জায়গায় আমরা বাবুকে মিস করব। তার অনুপস্থিতি আমাদের বার বার মনে করিয়ে দেবে।’

তিনি বলেন, ‘বাবুর মৃত্যু আমাদের আরেকটা বিষয় সামনে এনে দিয়েছে। আমাদের অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী আমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। এদের কেউ কেউ করোনাভাইরাসে যাচ্ছেন। হার্ট, কিডনি, লাংয়ের সমস্যা নিয়ে চলে যাচ্ছেন অনেকেই। আর আমাদের সরকার যে চিকিৎসা ব্যবস্থা আমাদের দিয়েছে, জনগণ হাসপাতালে যেতেই চায় না। বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছে। কারণ, বাসাতেই তারা মরবে, হাসপাতালের অব্যবস্থার মধ্যে যাবে না। অথচ সরকারের কথা শুনলে মনে হবে উন্নয়নের লহরী বয়ে যাচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

সাবেক ছাত্রনেতা বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপেদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, আজিজুল বারী হেলাল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল।

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন