বিজ্ঞাপন

হার দিয়ে শুরু বাংলাদেশের নিদাহাস-অভিযান

March 8, 2018 | 11:02 pm

সারাবাংলা ডেস্ক

বিজ্ঞাপন

শ্রীলঙ্কার সঙ্গে দুইটি টি-টোয়েন্টিতেই নিজেদের হারিয়ে খুঁজেছিলেন বোলাররা। নিদাহাস কাপের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ আবারও ব্যর্থতার বৃত্তেই, ভারতের কাছে হেরে গেল ৬ উইকেট। তবে ১৩৯ রান করার পর এবার অন্তত বোলারদের ওপর দায় চাপানো কঠিন।

এই উইকেটে ১৩৯ রান যে অনেকটা কম হয়ে গেছে, প্রথম ইনিংস শেষেই তা বোঝা যাচ্ছিল। তবে ভারত একেবারে হাসতে হাসতে জিতেছে, সেটা বলা মুশকিল। রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ানের উদ্বোধনী জুটিই ম্যাচ অনেকটা শেষ করে দিতে পারত, কিন্তু তা টিকল না বেশিক্ষণ। স্কোরবোর্ডে যখন ২৮ রান, মোস্তাফিজের বল কাট করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে গেলেন অধিনায়ক রোহিত। ঋশভ পান্ট রান পাননি আগের ম্যাচে, আজও ৮ বলে ৭ রান করে বোল্ড হয়ে গেলেন। রোহিতের মতো পান্টও স্টাম্পে টেনে আনলেন বল। ৪০ রানে ভারত তখন হারিয়ে ফেলেছে ২ উইকেট।

দ্রুত আরও বেশ কিছু উইকেট নিলে বাংলাদেশের হয়তো ম্যাচে ফেরার একটা সুযোগ থাকত। কিন্তু সুরেশ রায়না ও ধাওয়ান সেই সুযোগটাই দেননি। একটু ভুল হলো অবশ্য, একটা সুযোগ রায়না দিয়েছিলেন। লেগ গালিতে কঠিন ক্যাচটা নিতে পারেননি রায়না, ভারতের রান তখন ৪২।

বিজ্ঞাপন

রায়না সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভারতকে প্রায় নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে গেছেন। ধাওয়ানের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে যোগ করেছেন আরও ৬৮ রান, শেষ পর্যন্ত ২৭ বলে ২৮ রান করে রুবেলের বলে ক্যাচ দিয়েছেন সেই মিরাজকেই। তাসকিন ছাড়া বাংলাদেশের বোলারদের আর কারও ওপর সেভাবে চড়াও হতে পারেননি ধাওয়ানরা।

ভারতের জয় নিয়ে অবশ্য কখনোই খুব একটা সংশয় হয়নি। ধাওয়ান অবশ্য শেষ পর্যন্ত থাকতে পারেননি, ৪৩ বলে ৫৫ রান করে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন তাসকিনের বলে। ভারত তখন জয় থেকে মাত্র ১৭ রান দূরে। মনীশ পান্ডে ও দীনেশ কার্তিক মিলেই সেই কাজটা শেষ করেছেন। ৮ বল বাকি থাকতেই টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম জয় তুলে নিয়েছে ভারত।

তার আগে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের সময় সম্ভাব্য সবভাবেই ‘সাহায্যের’ হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল ভারত। গোটা দুয়েক ক্যাচের সুযোগ নষ্ট করেছে, রান আউট কাজে লাগাতে পারেনি, নো বলও করেছে গোটা দুয়েক। অতিরিক্তই দিয়েছে ১৪ রান।  কিন্তু বাংলাদেশ সেটার সুযোগ কাজে লাগাতে পারল কই? নিদাহাস ট্রফির ২০ ওভার ব্যাট করে ৮ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ১৩৯ রান। পুরো ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ডট বলই দিয়েছে ৫৭টি, চাপটা নিয়ে নিয়েছে নিজেদের ওপর।

বিজ্ঞাপন

অথচ সেটার জন্য বাংলাদেশ নিজেদেরই দুষতে পারে। উইকেটে এমন কোনো জুজু ছিল না, ভারতের বোলাররা ভালো করলেও দায়টা ব্যাটসম্যানদেরই বেশি। সবাই কমবেশি নিজেদের উইকেটটা বিলিয়েই দিয়ে এসেছেন। সৌম্য সরকার যেমন উনাদকটের বলে ছয় মারার দুই বল পরেই ফ্লিক করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিলেন শর্ট ফাইন লেগে। তামিম ইকবাল শুরু থেকেই ছিলেন নড়বড়ে, শার্দুল ঠাকুরের বলে এলবিডব্লুও হয়ে গিয়েছিলেন। রিভিউ নিয়ে বেঁচে যাওয়ার পর দুই চারে ভালো কিছুর আশ্বাস দিচ্ছিলেন, কিন্তু ঠাকুরের পরের শর্ট বলেই ক্যাচ তুলে দিলেন সেই শরট লেগেই। ৩৫ রানের ভেতরেই ২ উইকেট হারাল বাংলাদেশ।

সেটা একটু পরেই হয়ে যেতে পারত ৩ উইকেট। কিন্তু এক ওভারে দুই বার ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গেছেন লিটন। মুশফিককে অবশ্য বেশ স্বচ্ছন্দ মনে হচ্ছিল, ১৪ বলে ১৮ রানও করে ফেলেছিলেন। লিটনের সঙ্গে জুটিটা যখনই জমে উঠছে, তখনই বিজয় শঙ্করের অফ স্টাম্পের বাইরের বলটা ক্রিজ ছেড়ে মারতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে এলেন। শুরুতে অবশ্য আউট দেননি আম্পায়ার, কিন্তু রিভিউ নিয়েই উইকেট পেয়েছে ভারত। ৬৬ রানেই ৩ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।

মাহমুদউল্লাহ প্রথম বল থেকেই মনে হচ্ছিল, যে কোনো সময় আবার ড্রেসিংরুমে ফিরে যেতে পারেন। ৭ বলে ১ রান করার পর চাপটা যখন বেশি হয়ে উঠল, তখনই ক্রিজ ছেড়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়ে এলেন এক্সট্রা কাভারে। ৭২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপটা বাড়ল আরও।

তবে লিটন আর সাব্বির একটু হলেও আশা দেখাচ্ছিলেন। দুজন মিলে যোগ করেছিলেন ৩৫ রান, তবে রান রেট তখন কমে গেছে অনেকটা। সেই চাপটা আরও জেঁকে বসতেই কি না, চাহালের বলে ক্রিজ ছেড়ে খেলতে গেলেন লিটন। কিন্তু বল উঠে গেল আকাশে, রায়না আগের বার মিস করলেও এবার ভুল করলেন না। ৩০ বলে ৩৪ রান লিটনের টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ, কিন্তু সেটা নিয়ে তাঁর আফসোসই বেশি থাকবে।

বিজ্ঞাপন

এরপর মেহেদিও বেশিক্ষণ টিকলেন না, একা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন সাব্বির। কিন্তু ২৬ বলে ৩০ রান করে তিনিও ফিরে গেলেন উনাদকটের বলে। বাংলাদেশের ১৫০ রানের আশাও শেষ ওখানেই। আসলে তো অনেকটাই শেষ ম্যাচ জয়ের আশাও।

সারাবাংলা/ এএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন