বিজ্ঞাপন

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদাসীনতায় সড়ক পরিবহন মন্ত্রীর ক্ষোভ

September 1, 2020 | 4:40 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নানামুখী উদাসীনতা-অজুহাত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি সচিব এবং ইডির উদ্দেশে বলেন, ‘দক্ষ উদ্যোমী কর্মকর্তা নিয়ে আসুন। বছরের পর বছর একই স্থানে অনেকে বসে আছেন। তাদের আউটপুট মূল্যায়ন করুন। গণপরিবহন ব্যবস্থাপনায় একটি সফল উদাহরণ আপনারা আমাকে দেখান। আপনারা করোনার ওপর দোষ চাপিয়ে যাচ্ছেন, আসলে সবকিছুর মূলে হলো সদিচ্ছা।’

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে ডিটিসিএ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি প্রথমেই সমন্বয়ের কথা বলতে চাই, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঢাকা মহানগরী এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় সড়ক উন্নয়ন ও ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি প্রকল্প যেন আমাদের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা আর ডিটিসিএর সঙ্গে সমন্বয় করে করা হয়। কোনো একটি প্রকল্প যদি আরএসটিপির সঙ্গে সমন্বিত না হয় তাহলে নগরবাসীর উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে ডিটিসিএ কাজ করছে রুট রেশনালাইজেশনের জন্য। বাসগুলোকে কোম্পানিতে রূপান্তরের মাধ্যমে পরিচালনা করার প্রথম আলোচনা শুরু হয় আনিসুল হকের সময়। এরপর দায়িত্ব দেওয়া হয় সাঈদ খোকনকে কিন্তু কতদূর এগুলো, নগরবাসী তো এখনো কিছু দেখতে পেল না? কয়টি সভা হলো সেটা বিষয় নয়, বিষয় হচ্ছে উদ্যোক্তা দৃশ্যমান করা।’

বিজ্ঞাপন

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বলতে গেলে এ নগরীতে ফুটপাত নেই! পথচারীদের হাঁটার জন্য যে ফুটপাত, সেটা বেদখলে। ঢাকা সিটি কলেজ থেকে সাতমসজিদ রোড ধানমন্ডি ৩৭ নম্বর পর্যন্ত পথচারীবান্ধব একটি ফুটপাত নির্মাণের উদ্যোগটিও এখনো সমীক্ষা কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ। কবে শেষ হবে সমীক্ষা? কখন প্রকল্প নেওয়া হবে আর কখন কাজ হবে জানি না?’

‘ডিটিসিএ শুধু সমীক্ষা আর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মধ্যে ঘুরপাক খায়। যে কাজেই দেওয়া হয় শুধু সমীক্ষা আর সমীক্ষা। কাজ হতে দেখি না। র‌্যাপিড পাস আর ক্লিয়ারিং হাউসের কাজের দ্বিতীয় পর্যায়ও একই বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। র‌্যাপিড পাস উদ্বোধন করেছিলাম কিন্তু কার্যকরিতা দেখছি না। তখনো তো বলা হয়েছিল রুটে সবাই এই কার্ড ব্যবহার করবে। তাহলে এখন করছে না কেন? নিশ্চয়ই আপনাদের পরিকল্পনা জনবান্ধব-যাত্রীবান্ধব ছিল না, যতটা প্রত্যাশা ছিল।’

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘বোর্ড সভায় নারায়ণগঞ্জ গাজীপুরের জন্য পরিবহন মাস্টারপ্ল্যান করার বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম সেটাও এখন পর্যন্ত ডিপিইসি সবাই আটকে আছে। চট্টগ্রামের পরিবহন মাস্টারপ্ল্যান বলার মতো কোনো অগ্রগতি নেই। একটি কাজ শুরু করলেন কিন্তু শেষ করতে না পারলে এর সফলতা কোথায়?‘

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘চারটি প্রকল্প আপনারা বাস্তবায়ন করছেন, আমি প্রতিবেদন দেখলাম একটি মেয়াদ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আরেকটির এক বছর বাড়ানো হয়েছে। তিনটির তৃতীয়টি ২০১৯ সালে অনুমোদনের পর মাত্র পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, চতুর্থটিতে বলা হয়েছে আশানুরূপ অগ্রগতি হয়নি। সবগুলোতে করোনাকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছে, এ কাজগুলোর অধিকাংশ টেবিলওয়ার্ক।
মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য দফতর করোনাকালে যেখানে ফিল্ড লেভেলে ফিজিক্যাল ওয়ার্ক করছে, প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে আপনারা সেখানে করোনার ওপর দোষ চাপিয়ে যাচ্ছেন, আসলে সবকিছুর মূলে সদিচ্ছা। আমি সচিব মহোদয় এবং ইডি সাহেবকে বলবো, দক্ষ উদ্যোমী কর্মকর্তা নিয়ে আসুন। বছরের পর বছর একই স্থানে অনেকে বসে আছেন। তাদের আউটপুট মূল্যায়ন করুন ‘

গণপরিবহন ব্যবস্থাপনায় একটি সফল উদাহরণ আপনারা আমাকে দেখান, বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কাদের। তিনি বলেন, ‘আইন পাস করে ডিটিসির আইনগত ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু সেটি কাজে লাগানো হচ্ছে কি না আপনারাই ভাল জানেন? বহুতল ভবনের ট্রাফিক ক্লিয়ারেন্স পেতে ভোগান্তি আছে বলে আমার কাছে অভিযোগ আছে। এ সকল সভা আপনারা নিয়মিত করবেন, মানুষের ভোগান্তি যেন না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।‘

‘আজ থেকে গণপরিবহন করোনাকালের জন্য সমন্বয় করা ভাড়ার পরিবর্তে আগের ভাড়ায় ফিরছে। জনস্বার্থে এবং যাত্রীদের সঙ্গে আমি সরকারের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পরিবহন মালিক-শ্রমিকসহ সকল স্টকহোল্ডারদের সহযোগিতা কামনা করছি।’ এছাড়া গণপরিবহনে ভ্রমণকালে যাত্রীসহ পরিবহন সংশ্লিষ্ট সকলকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরার আহ্বান জানান।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনআর/এমআই

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন