বিজ্ঞাপন

‘বাংলাদেশে দ্রুত গতিতে কোভিড-১৯-এর রূপ পরিবর্তন হচ্ছে’

September 6, 2020 | 3:54 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশে কোভিড-১৯ অনেক দ্রুতগতিতে রূপ পরিবর্তন করছে। বিশ্বে এর পরিবর্তনের হার ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ হলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ১২ দশমিক ৬০ শতাংশ। এখন পর্যন্ত দেশে কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ, মিউটেশনের হার, জিনগত বৈশিষ্ট্য, নন-সিনোনিমাস মিউটেশন এবং জেনোমিক ফাইলোজেনি পর্যবেক্ষণ করে পাঁচ ধরনের স্বতন্ত্র করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। যা বিশ্বের আর কোথাও পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) মিলনায়তনে বিসিএসআইআর জিনোমিক রিসার্চ ল্যাবরেটরির কোভিড-১৯ এর জিনোম সিকোয়েন্সিং প্রতিবেদন অবহিতকরণ সভা বিসিএসআইআরের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আফতাব আলী শেখ এ তথ্য জানান।

বিসিএসআইআরের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আফতাব আলী শেখ জানান, করোনা ভাইরাস ডিজিজ-১৯ সংক্ষেপে (কোভিড-১৯) জিনগত বৈচিত্র্য পর্যবেক্ষণ করার জন্য সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের সর্বমোট ২৬৩টি জিনোম সিকোয়েন্সিং ও ডাটা বিশ্লেষণ করা হয়। এ নমুনা চলতি বছরের ৭ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সংগ্রহ করা হয়।

নমুনাগুলোর জিনোম সিকোয়েন্সিং করে আন্তর্জাতিক ডাটাবেজ গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটা (জিআইএসএআইডি)-তে প্রকাশ করা হয় বলে জানানো হয় সভায়।

বিজ্ঞাপন

বিসিএসআইআররের চেয়ারম্যান বলেন, ‘চলমান বৈশ্বিক কোভিড-১৯ মহামারিতে সারাবিশ্বের বিজ্ঞানীরা সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের উৎস, গতি প্রকৃতি ও বিস্তার নির্ণয়ের পাশাপাশি এ ভাইরাসের ওষুধ ও ভ্যাকসিনের ওপর গবেষণা করছেন। সে লক্ষ্যে বাংলাদেশেও সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং করার প্রকল্প গ্রহণ করেছিল। জিনোম সিকোয়েন্সিং ল্যাবরেটরি বাংলাদেশের আটটি বিভাগের সর্বমোট ৩০০টি-ভাইরাস পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্সিং করার প্রকল্প গ্রহণ করেন। গবেষণালব্ধ ফল রিসার্চ পেপার আকারে আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হবে। একই সঙ্গে চীন, ইউএসএ ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিশ্বের প্রায় ৫০টি কোভিড-১৯ টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানকে এ প্রতিবেদন পাঠানো হয়।

গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সংগৃহীত নমুনায় শতভাগ ক্ষেত্রে আধিপত্যকারী ভ্যারিয়েন্টের G 414 (স্পাইক রুটিনে ৬১৪তম অবস্থানে অ্যাসপার্টিক গ্লাইসিন হওয়ার কারণ) উপস্থিতি পাওয়া যায়।

প্রাপ্ত ২৬৩টি সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের মধ্যে ২৪৩টি জিআর ক্লেড, ১৬টি জি ক্লেড এবং ১টি ও ক্লেডের অন্তর্ভুক্ত।

বিজ্ঞাপন

গবেষণা প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ২৬৩টি সার্স-কোভ-২ জিনোম বিশ্লেষণ করে জানা যায়, সর্বমোট ৭৩৭টি পয়েন্টে মিউটেশন হয়। যার মধ্যে ৩৫৮টি নন সিনোনিমাস অ্যামিনো অ্যাসিড প্রতিস্থাপন ঘটায়। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত ২৬৩টি সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের মিউটেশনের হার বার্ষিক ২৪ দশমিক ৬৪ নিউক্লিওটাইড। সারাবিশ্বে নমুনা প্রতি মিউটেশন হার ৭ দশমিক ২৩। যা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ১২ দশমিক ৬০ লক্ষ্য করা যায়‌। অর্থাৎ অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসটি অনেক দ্রুত গতিতে এর রূপ পরিবর্তন করছে। স্পাইক প্রোটিনের জিনে ১০৩টি নিউক্লিওটাইড মিউটেশনের মধ্যে ৫৩টি নন সিনোনিমাস অ্যামোনিয়া বেশি প্রতিস্থাপন ঘটে, যার মধ্যে পাঁচটি স্বতন্ত্র। যা বিশ্বের আর কোথাও পাওয়া যায়নি। সংগৃহীত নমুনা সময়ের মধ্যে ১০০ ভাগ ক্ষেত্রে চারটি মিউটেশনের পুনরাবৃত্তি লক্ষ্য করা যায়।

সভায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ও বিসিএসআইআর জিনোমিক রিসার্চ ল্যাবরেটরির গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এসবি/এমআই

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন