বিজ্ঞাপন

ইউজিসির কমিটি আইনসিদ্ধ নয়: রাবি উপাচার্য

September 11, 2020 | 12:17 pm

রাবি করেসপন্ডেন্ট

রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে ইউজিসির গঠিত তদন্ত কমিটি আইনসিদ্ধ নয় জানিয়ে ইউজিসি বরাবর চিঠি দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) এ চিঠি ইউজিসি চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়ার বিরুদ্ধে ১৭ টি অভিযোগে আগামি ১৭ সেপ্টেম্বর শুনানি আয়োজন করে ইউজিসি গঠিত তদন্ত কমিটি।

শুনানির মাত্র এক সপ্তাহ আগে এবার ইউজিসি চেয়ারম্যান বরাবর লেখা চিঠিতে তদন্ত কমিটি গঠন প্রক্রিয়া, কমিটির সদস্য নির্বাচন থেকে তদন্ত কার্যক্রমের ত্রুটি ও আইন পরিপন্থী বিষয়গুলো তুলে উল্লেখ করেছেন।

চিঠিতে উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান উল্লেখ করেছেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ১৯৭৩ সালের অর্ডার এবং ১৯৯৮ সালের আইন (সংশোধিত) অনুযায়ী উপাচার্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠনের কোন ক্ষমতা ইউজিসিকে দেওয়া হয় নাই। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন উপাচার্যের বিরুদ্ধে নামে-বেনামে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তে আপনার নির্দেশে তিন সদস্যের কমিটি গঠিত হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য সেই কমিটিতে ইউজিসি’র একজন সিনিয়র সহকারী পরিচলক এবং উপাচার্যের সমমর্যাদা সম্পন্ন দুইজন সম্মানিত সদস্যকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। যা আইনসিদ্ধ নয়। আইন অনুযায়ী তদন্ত কমিটির সদস্যবৃন্দ উপাচার্যের মর্যাদার এক ধাপ উপরে হওয়া বাঞ্ছনীয়।’

বিজ্ঞাপন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের বিষয়টি তুলে ধরে উপাচার্য লিখেছেন, ‘৭৩’র অধ্যাদেশের ১১ ধারা অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতি তথা আচার্য কর্তৃক উপাচার্য নিয়োগপ্রাপ্ত হন। উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে শুধুমাত্র আচার্য দ্বারা সম্পন্ন করা আইনসিদ্ধ। অথচ আইন বর্হিভূতভাবে ইউজিসি’র একজন সিনিয়র সহকারী পরিচালক ও দুইজন সদস্য নিয়ে কমিটি গঠন করা শুধু বেআইনীই নয়, মহামান্য রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাকেও খর্ব করার সামিল।’

বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্টের ১২ ধারায় ১০টি অনুচ্ছেদে উপাচার্যের ক্ষমতা ও কর্তব্য বর্ণনা করা আছে উল্লেখ করে অধ্যাপক সোবহান বলেন, ‘অ্যাক্ট-এর ৫১ এর ১ ধারা অনুযায়ী উপাচার্যের কার্যক্রমে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি প্রতিকার চেয়ে শুধুমাত্র মহামান্য রাষ্ট্রপতি তথা আচার্য বরাবর আবেদন করতে পারেন।’

এদিকে চিঠিতে ইউজিসি গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক দিল আফরোজার বিরুদ্ধেও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন। এ বিষয়ে অধ্যাপক সোবহান লিখেছেন, ‘তদন্তাধীন বিষয়ে গণমাধ্যমে তদন্ত কমিটির আহ্বায়কের এমন বক্তব্য তদন্তের আগেই আমাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিয়ে আহ্বায়ক যেভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন, তা থেকে প্রতীয়মান হয় যে- তদন্তের আগেই মিডিয়া ট্রায়াল সম্পন্ন করা হয়েছে। যা দ্বারা একজন উপাচার্যকে নয় বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে অপদস্থ করা হয়েছে। ফলে তদন্ত রিপোর্ট পক্ষপাতহীন হওয়ার আশংকা রয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

উপাচার্য চিঠিতে লিখেছেন, ‘যেকোন অভিযোগ আমলযোগ্য হলে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণপূর্বক তার তদন্ত হওয়াই বাঞ্ছনীয়। আমি তাই দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই যে, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহের তদন্ত হোক। এ বিষয়ে আমি শতভাগ সম্মত। তবে সেই তদন্ত কমিটি অবশ্যই যথাযথ আইনসিদ্ধভাবে গঠিত হওয়া দরকার। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন উপাচার্যকে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা খর্ব করে অপদস্থ করা সমীচীন নয়।’

এছাড়া একই অভিযোগ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগে বিচারাধীন থাকায় ইউজিসি কর্তৃক তদন্ত বা প্রশ্ন উত্থাপন করা আদালত অবমাননার সামিল বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেন অধ্যাপক আব্দুস সোবহান।

এছাড়া তদন্ত কমিটি গঠন ও তদন্তে পক্ষপাতিত্বের বিষয়টি সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত তদন্ত কমিটির সকল কর্যক্রম বন্ধ করার অনুরোধ জানান উপাচার্য।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/টিসি

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন