বিজ্ঞাপন

‘আইন মেনে বায়নাপত্র করলে কোনো পক্ষের ক্ষতি হবে না’

October 2, 2020 | 12:17 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: অনেকেই স্থাবর সম্পত্তির কেনার জন্য অগ্রিম টাকা হিসাবে বায়না করে থাকেন। অনেক সময় দেখা যায়, ক্রেতা হয়তো আর সেই সম্পত্তি কিনতে চাচ্ছেন না, কিংবা বিক্রেতা বিক্রি করতে চাচ্ছেন না। অথবা অন্য যেকোনো কারণেই হোক, বায়নাপত্রটি সম্পাদন করা হয় না। এ সময় অগ্রিম যে টাকা দেওয়া হয়েছিল, সেটি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদ হয়ে থাকে অনেক সময়। এ ক্ষেত্রে যদি বায়নাপত্রটি রেজিস্ট্রেশন আইনে নিবন্ধিত হয়ে থাকে, তাহলে দুই পক্ষই ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে সারাবাংলা ডটনেটের আইনি পরামর্শ বিষয়ক নিয়মিত আয়োজন ‘সারাবাংলা লিগ্যাল চেম্বার’ অনুষ্ঠানে আইনজীবীরা এসব কথা বলেন। ‘লিগ্যাল চেম্বারে’র এ পর্বের বিষয় ছিল ‘বায়না ও দলিল রেজিস্ট্রেশন’। বায়না ও দলিল রেজিস্ট্রেশন বিষয়ক জটিলতা তৈরি হলে কী করণীয়, তা আলোচনা করা হয় অনুষ্ঠানে।

সারাবাংলা ডটনেটের পক্ষে আলোচনা সঞ্চালনা করেন ব্যারিস্টার ইফ্ফাত গিয়াস আরেফিন। অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আশরাফ আলী ও অ্যাডভোকেট মো. মাহবুব ইসলাম মজুমদার।

বায়না দলিলের বিষয়টি ব্যাখ্যা করে অনুষ্ঠানে আইনজীবীরা বলেন, যখন একজন ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে কোনো স্থাবর সম্পত্তি বেচাকেনা নিয়ে সমঝোতা হয়, তখন সুনির্দিষ্ট কোনো সম্পত্তি বিক্রি বা কেনার জন্য যে চুক্তি বা এগ্রিমেন্ট হয়, তাকেই বায়নাপত্র বলে। ওই সম্পত্তি কেনার জন্য ক্রেতা আগাম কত টাকা দিচ্ছেন, বাকি টাকা কবে কিভাবে পরিশোধ করবেন— এসব বিষয় ওই বায়নাপত্র বা চুক্তিপত্রে উল্লেখ থাকে। উল্লেখ করা ওই শর্ত অনুযায়ী টাকা পরিশোধ করতে হয়। ২০০৪ সালের পর থেকে আইন অনুযায়ী এ ধরনের কোনো সম্পত্তি কেনাবেচার ক্ষেত্রে নিবন্ধিত চুক্তিপত্র বাধ্যতামূলক।

বিজ্ঞাপন

ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আশরাফ আলী বলেন, বায়না দলিল করার সময় কিছু বিষয় ক্রেতা/বিক্রেতাদের অবশ্যই খেয়ালই রাখতে হবে। প্রতিটি বায়নাপত্রে চুক্তির সব শর্ত উল্লেখ থাকবে, সম্পত্তির মোট দাম উল্লেখ থাকবে, অগ্রিম টাকার পরিমাণ ও বাকি টাকা কতদিনের মধ্যে কিভাবে পরিশোধ হবে, জমির টাইটেল, মর্গেজ ঠিক আছে কি না, সরিকানা, নামজারিসহ অন্যান্য বিষয়গুলো বায়না দলিলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

তিনি বলেন, যদি বায়না দলিল বাতিল করতে হয়, তাহলে অবশ্যই উভয়পক্ষের সম্মতি থাকতে হবে। দুই পক্ষের মধ্যে একপক্ষ রাজি থাকলেও অন্য পক্ষ যদি দলিল বাতিল করতে অস্বীকৃতি জানান, তাহলে আইনজীবীর মাধ্যমে একাধিকবার নোটিশ দিতে হবে। এরপর নোটিশটি পৌঁছানোর পর রেজিস্ট্রার অফিসে গিয়ে বায়না দলিলটি বাতিলের আবেদন করা যাবে। যদি সময়ের কথা উল্লেখ না থাকে, তাহলে ট্রান্সফার প্রোপার্টি অ্যাক্ট আইনের ৫৪ (এ) ধারা অনুসারে ছয় মাস ধরে নিতে হবে।

অ্যাডভোকেট মো. মাহবুব ইসলাম মজুমদার বলেন, কারও যদি বায়নার মেয়াদ হয়ে যায়, এ অবস্থায় বায়নার টাকা উদ্ধার করতে চাইলে ‘মানি স্যুট’ আইনে তিন বছরের মধ্যে টাকা উদ্ধার করা যাবে। বায়নার টাকা উদ্ধারের ক্ষেত্রে যেদিন থেকে বিক্রেতা টাকা দিতে অস্বীকার করবেন বা লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার পর টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানালে সেদিন থেকে তিন বছরের মধ্যে মামলা করতে হবে। আর যদি কেউ বায়নাপত্রের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাকি টাকা না পরিশোধ করেন, তাহলে জমা হওয়া টাকা বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে।

বিজ্ঞাপন

আইনজীবীরা বলেন, জমি কেনার আগে বায়নাপত্র করতে হবে। আবার বায়নাপত্র করার আগে অবশ্যই সরেজমিনে স্থাবর সম্পত্তি দেখে নিতে হবে। জমিটি কেনার আগে কাগজপত্র ঠিক আছে কি না, দেখেশুনে নিতে হবে। যদি কেউ নিজে বিষয়গুলো না বুঝতে পারেন, তাহলে আইনজীবীর সহযোগিতা নেওয়া উচিত। সবকিছু দেখেশুনে সম্পত্তি কিনলে ভবিষ্যতে ঝামেলায় পড়ার আশঙ্কা কমে যায়।

সারাবাংলা/এআই/টিআর

Tags: , , , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন