বিজ্ঞাপন

এখন থেকে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড: অধ্যাদেশ জারি

October 13, 2020 | 4:17 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদিত সংশোধনীর খসড়া এবার অধ্যাদেশ আকারে জারি হয়েছে। অধ্যাদেশে আইনের সংশোধনীতে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড করা ছাড়াও ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষণের শিকার নারী ও অভিযুক্তের ডিএনএ পরীক্ষার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সই করা অধ্যাদেশটি এরই মধ্যে গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। এই অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড আজ মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) থেকেই কার্যকর হলো। সংসদ অধিবেশন না থাকায় ওই আইনের সংশোধনী অবিলম্বে কার্যকর করতে অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত আরও খবর-

এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (২০০০ সালের ৮ নম্বর) আইনের সংশোধন প্রয়োজন। সংসদ অধিবেশন না থাকায় সংশোধনীটি বিল আকারে উত্থাপন করে পাস করা যাচ্ছে না। তবে রাষ্ট্রপতির কাছে এই সংশোধনী সন্তোষজনক মনে হয়েছে। সে কারণে সংবিধানের ৯৩ (১) নম্বর অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ আকারে এটি জারি করলেন।

বিজ্ঞাপন

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এই অধ্যাদেশটি ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০০০’ নামে পরিচিত হবে, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে।

এই অধ্যাদেশ কার্যকর হওয়ার ফলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এর ৯ ধারার ১ ও ৪ উপধারায় যেখানে যেখানে ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ রয়েছে, সেই শব্দগুলো ‘মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ দিয়ে প্রতিস্থাপিত হবে। অর্থাৎ এসব ধারায় নার‌ী ও শিশুকে ধর্ষণ কিংবা ধর্ষণ করে হত্যা বা আহত করার চেষ্টার সাজার বিধান রয়েছে। এই অধ্যাদেশের বলে এখন থেকে আইনের ৯(১) ধারা অনুযায়ী ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড। এছাড়া ধারা ৯-এর (৪) (ক) উপধারা অনুযায়ী ধর্ষণ করে মৃত্যু ঘটানোর বা আহত করার চেষ্টা করলেও তার সর্বোচ্চ সাজা হবে মৃত্যুদণ্ড।

এছাড়া, আগের আইনের ৩২ ধারায় যেখানে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষণের শিকার ব্যক্তির মেডিকেল পরীক্ষার বিধান ছিল, সেখানে সংশোধনীর মাধ্যমে ধর্ষণের শিকার ব্যক্তির পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তির মেডিকেল পরীক্ষার বিধাও যুক্ত করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এর বাইরে ধর্ষণের ঘটনায় বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত করতে ডিএনএ পরীক্ষা সংক্রান্ত নতুন একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে আইনে। ‘অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং অপরাধের শিকার ব্যক্তির ডিএনএ পরীক্ষা’ শিরোনামের ‘৩২ক’ নম্বর এই ধারায় বলা হয়েছে, এই আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং অপরাধের শিকার ব্যক্তির মেডিকেল পরীক্ষা ছাড়াও ডিএনএ আইন, ২০১৪-এর বিধান অনুযায়ী ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে।

দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন অনুযায়ী ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং এর সঙ্গে অর্থদণ্ড। গত ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেটের মুরারীচাঁদ (এমসি) কলেজে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে দলবেঁধে ধর্ষণ এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক নারীকে বিবস্ত্র করে বর্বরোচিত নিপীড়নের ভিডিও গত ৪ অক্টোবর ভাইরাল হওয়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে দেশব্যাপী ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতাবিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এসব আন্দোলন থেকে কেউ কেউ ধর্ষণের সাজা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ডের দাবি তোলেন।

এ পরিস্থিতিতে গতকাল সোমবার (১২ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশোধনীর খসড়া অনুমোদন পায়। সংসদ অধিবেশন না থাকায় রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে আইনটি অবিলম্বে কার্যকর করতে সম্মতি দিয়েছেন বলে জানানো হয়। সেই অধ্যাদেশ আজ জারি হলো।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেআর/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন