বিজ্ঞাপন

সরকারি খাল দখল: দুর্ভোগে জেলেরা, বন্ধ নৌ চলাচল

November 1, 2020 | 12:17 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

নেত্রকোনা: জেলার মদনে ধুবাওয়ালা গ্রামে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে সরকারি খাল দখল করে বাঁধ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে নৌ চলাচল ব্যাহত হওয়াসহ জেলেরাও মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ নিয়ে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামের পিছনের মগড়া নদী থেকে বালই নদীর সংযোগ প্রায় ৮/৯ কিলোমিটার আলহুলহুলিয়া খালটি উন্মুক্ত জলাশয় হিসেবে হাওরাঞ্চলের লোকজনের যাতায়াতে ব্যবহৃত হয়। খালিয়াজুরী, ইটনা, ধিরাই ও তলার হাওরে বোরো ধান আবাদে কৃষকরা নৌ যোগে এ পথে যাতায়াত করে থাকেন। এলাকার সাধারণ মানুষ ও মৎস্যজীবীরা এ খালে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

তবে সম্প্রতি স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল মসজিদের নাম দিয়ে খালটি দখল করে ধুবাওয়ালা বাজারের পেছনের অংশে বাঁধ দিয়েছে। এতে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় লোকজন কয়েক কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এলাকার সাধারণ মানুষের দাবি, খালের বাঁধটি দ্রুত অপসারণ করে লোকজনের যাতায়াতের পথ সুগম করতে।

এছাড়া উপজেলার আট ইউনিয়নে মুক্ত জলাশয় খাল, বিল, নদী দখল করে প্রভাবশালীরা তাদের সুবিধামত বাঁধ দিয়ে মাছ ধরায় সাধারণ লোকজনও দুর্ভোগে পড়েছেন। জনগণ যেমন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তেমনি সরকারও হারাচ্ছে মোটা অংকের রাজস্ব। মুক্ত জলাশয় প্রভাবশালীদের দখল নিয়ে প্রতিবছরই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

বিজ্ঞাপন

সরজমিনে দেখা যায়, খালের ধুবাওয়ালা বাজারের পাশে বাঁশের ঘের, জালে বাঁধ দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। নৌ চলাচলের কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। হাওর থেকে নৌযানগুলো এলেও রাস্তা বন্ধ থাকায় হাওর এলাকায় ফিরে যেতে হচ্ছে।

বাঁধের ছবি তেলার সময় তিয়শ্রী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মিঠু মিয়া লোকজন নিয়ে জড়ো হন। এলাকাবাসীর দোহাই দিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘খালে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করে যে টাকা পাওয়া যাচ্ছে তা মসজিদের উন্নয়নে ব্যয় করা হচ্ছে।’

মেম্বার মিঠু মিয়া আরও বলেন, ‘সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হেলাল উদ্দিন তালুকদারও খাল বন্ধ করে পুকুর তৈরি করে ব্যক্তিগত লাভে মাছ চাষ করছেন। এই খাল মুক্ত করলে ওই পুকুরও যেন মুক্ত হয়।’

বিজ্ঞাপন

এ সময় ধুবাওয়ালা গ্রামের আব্দুল কাদির ও বাবু জানান, বাঁধ দেওয়ায় খাল দিয়ে এখন আর কোনো নৌকা চলাচল করতে পারে না। গরীবরা আগে জাল দিয়ে মাছ ধরতো, এখন জাল দিয়ে মাছ ধরতে গেলে তারা জাল রেখে দেয়। কেউ প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়।

সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ধুবাওয়ালা গ্রামের হেলাল উদ্দিন তালুকদার জানান, প্রভাবশালী মহলটি কাউকে পরোয়া করে না। আলহুলহুলিয়া খালে বাঁধ দিয়ে নৌ চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এলাকাবাসী এ নিয়ে কথা বললেই মারধর করে।

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফখর উদ্দিন আহমেদ জানান, এটি একটি সরকারি খাল। বিশেষ করে হাওরের মানুষ এ খাল দিয়ে নৌযোগে যাতায়াত করে থাকে। আমার ইউপি সদস্য বা যেই বাঁধ দিক, চলাচলের জন্য বাঁধটি খুলে দিতে হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ জানান, এ ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ তিনি পেয়েছিলেন। সংশ্লিষ্ট উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ও পুলিশকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই বিষয়টির সুরাহা করা হবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমও/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন