বিজ্ঞাপন

সরকারি দলকে সর্বময় ক্ষমতা দিতে ইসির নতুন আইন: বিএনপি

November 2, 2020 | 8:22 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সরকারি দলকে সর্বময় ক্ষমতা দিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ‘স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান আইন-২০২০’ প্রস্তাব করেছে বলে অভিযোগ বিএনপির।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশন কোনো কথাই শোনে না। তাদের দায়িত্ব সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা। গঠনের পর থেকে তারা সেই কাজই করে যাচ্ছে। অত্যন্ত অসৎ উদ্দেশ্যেই তারা ‘স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান আইন-২০২০’ এর প্রস্তাব করেছে।’

‘তাদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য একটাই— সরকারি দলকে সর্বময় ক্ষমতায় দিয়ে দেওয়া এবং নির্বাচন কমিশনকে ঠুটো জগন্নাথে পরিণত করা। এই নির্বাচন কমিশন তো কোনো রকমের পরিবর্তন হয়নি। উপরন্তু তারা আইন করে বিভিন্নভাবে এই সরকারের হাতকে শক্তিশালী করে যাচ্ছে’— বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান আইনের বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘নির্বাচনে কমিশনের প্রস্তাবিত আইনে অনেক মৌলিক বিধানই বদলিয়ে ফেলেছে। তারা যে নতুন আইনের প্রস্তাব করেছে সেই আইনের একটা বড় অংশ ধারা ৬৬ থেকে আরম্ভ করে প্রায় ৮৪ পর্যন্ত-এর কোনোটাই স্থানীয় সরকারের প্রচলিত যেসব আইন রয়ে গেছে তার মধ্যে নেই। এসব আছে বিধিমালার মধ্যে। কিন্তু প্রস্তাবে তো নির্বাচন কমিশন আগে বলে নাই যে, বিধিমালা থেকে এনে নতুন আইন করা হবে। কিন্তু বাস্তবে তারা সেটা করেছে।

তিনি বলেন, ‘আলাদা আলাদা আইনসগুলোকে একীভূত করে একক আইন প্রণয়ন করা হলে ওই আইন থেকে পৃথক পৃথক স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জন্য সংশ্লিষ্ট বিধি-বিধান খুঁজে খুঁজে বের করে বোঝা বা আয়ত্বে আনা জটিল, কষ্টকর ও দুরুহ হয়ে পড়বে। বিধায় কমিশনের এই উদ্যোগ পরিত্যাজ্য।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘করোনার মধ্যে যখন সোশ্যাল ডিসটেন্স বজায় রাখা দরকার, যখন সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ, যখন স্কুল কলেজ বন্ধ করে রাখা হয়েছে, যখন আমাদের ভার্চুয়াল মিটিং করা লাগে- সেরকম সময়ে দেশের সব মানুষ জড়িত কেউ ইউনিয়ন পরিষদে, কেউ পৌরসভায়, কেউ জেলা-উপজেলা, কেউবা সিটি করপোরেশনে। যারা ভোটার ও প্রার্থী তাদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ না করে বা তাদের মতামত দেওয়ার সময় বা সুযোগ না রেখে ওয়েবসাইটে দিয়ে এই করোনার মধ্যে নতুন একটা আইন করতে হবে- এটার কোনো মানে হয় না।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে দাবি নেই, আন্দোলন-সংগ্রাম নেই। যেসব নিয়ে দাবি আছে তার মধ্যে অন্যতম- নির্বাচন সুষ্ঠু করেন, যেখানে কারচুপি হয় তা বন্ধ করেন, দিনের ভোট যেন রাত্রে না হয়, ভোটকেন্দ্রে যেন সন্ত্রাস না হয়, প্রচারণায় যে বাধা হয় সেগুলো বন্ধ করেন। সেদিকে নির্বাচন কমিশনের কোনো আগ্রহ নেই। যেটা নিয়ে কথা-বার্তা নেই তা নিয়ে তারা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘প্রস্তাবিত নতুন আইনে রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসারের দীর্ঘদিনের পদবিগুলো বাংলা করার প্রস্তাব, ফেরারি আসামিদের নির্বাচন করতে না দেওয়া, প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহকে নতুন আইনে অন্তুর্ভুক্ত না করা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক মনোনয়ন দেওয়া, প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার পোলিং অফিসার নিয়োগের তালিকা বৈধ্য প্রার্থীদের দেওয়ার ব্যবস্থা না রাখা, ভোট গণনার সময়ে প্রার্থীদের এজেন্টদের না রাখা ইত্যাদি ব্যাপারে বিএনপির আপত্তি আছে।’

তিনি বলেন, ‘পৃথক পৃথক আইন থাকার পরও তাদের একীভূত করে চলমান করোনা সংকটকালে প্রস্তাবিত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান আইন-২০২০ প্রণয়নের এই অপ্রয়োজনীয় ও অযৌক্তিক উদ্যোগ থেকে কমিশন বিরত থাকবে। এটা আমরা আশা করছি।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এতসব যুক্তিসঙ্গত কারণ অগ্রাহ্য করে যদি কমিশন একচেটিয়াভাবে প্রস্তাবিত নতুন আইন প্রণয়নে উদ্যোগ গ্রহণ করে, তাহলে বিএনপির দেওয়া আইনের অসঙ্গতিসমূহ দূরীকরণ ও সঙ্গত দাবি পূরণ এবং আমাদের সংশোধনী প্রস্তাবগুলো সংশ্লিষ্ট আইনে সন্নিবেশিত করার জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় এককভাবে কোনো আইন প্রণয়ন করা হলে তা দেশবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন