বিজ্ঞাপন

ফিরে দেখা: তামিমের প্রথম, বাংলাদেশের প্রথম

March 13, 2018 | 7:05 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

সেঞ্চুরি তো কতই পেয়েছিলেন তামিম ইকবাল। লর্ডসে সেঞ্চুরি করে অনার্স বোর্ডের দিকে সেই নাম লেখানোর ভঙি হয়ে গেছে বাংলাদেশের ক্রিকেট পুরাণের অংশ। টেস্ট-ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশিবার তিন অঙ্ক ছোঁয়ার কীর্তিও নিজের করে নিয়েছেন। ওমানের বিপক্ষে সেঞ্চুরিটা এমন কিছু হওয়ার কথা নয়। তবে দুই বছর আগে ধর্মশালায় ওই সেঞ্চুরি করেই দুই হাত তুলে ঘুষি ছুঁড়েছিলেন আকাশে। উপলক্ষটা যখন টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি, তামিম তার অমন উদযাপন তো করতেই পারেন!

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে প্রায় দশ বছর হয়ে গেলেও একটা সেঞ্চুরির জন্য বাংলাদেশের তৃষিত অপেক্ষাটা কাটছিল না। এর মধ্যে বাংলাদেশের কেউ নব্বইয়ের ঘরেও যেতে পারেননি। সবচেয়ে কাছাকাছি গিয়েছিলেন তামিমই, ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঢাকাতেই ৮৮ রান করেছিলেন। টি-টোয়েন্টিতে আশির ঘরে বাংলাদেশের স্কোরই আছে সাকুল্যে পাঁচটি। কিন্তু আশা জাগিয়েও সেঞ্চুরিটা শেষ পর্যন্ত থেকে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরেই।


এর মধ্যে টি-টোয়েন্টিতে কত যে সেঞ্চুরি হয়ে গেছে, তার লেখাজোখা নেই। ২০০৭ সালে সেই যে ক্রিস গেইল প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। ২০ ওভারের খেলায়ও যে কেউ ১০০ রান করে ফেলতে পারেন, সেই ভ্রমটা কাটিয়ে দিয়েছিলেন গেইলই। এখন তো সেটা প্রায় ডালভাতের মতোই হয়ে গেছে। এক কলিন মানরোরই এই ফরম্যাটে সেঞ্চুরি আছে তিনটি।

বিজ্ঞাপন

তবে তামিমের ওই সেঞ্চুরির আগে টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি ছিল ১১টি দেশের। যার মধ্যে এমনকি ছিল স্কটল্যান্ড, আরব আমিরাত ও আফগানিস্তানও। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে শুধু সেঞ্চুরি ছিল না জিম্বাবুয়ের কারোরই। তবে বাংলাদেশের অতৃপ্তিটা তাতে কমে যাওয়ার কোনো কারণ ঘটেনি।

ধর্মশালার কনকনে ঠাণ্ডা আর দমকা হাওয়ার ওই রাতটা তামিম অনেক দিনই মনে রাখবেন। ওমানের সঙ্গে ম্যাচটা ছিল এক অর্থে বাঁচা মরার লড়াই, যে জিতবে সেই যাবে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে। শুরুতে টসে জিতে বোলিং নিয়েছিলেন ওমান অধিনায়ক, একটু মন্থর ট্র্যাকে তখনকার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও সেটি নিতে চেয়েছিলেন। শুরুতে রানের জন্য বেশ সংগ্রামই করতে হয়েছিল বাংলাদেশকে, প্রথম ৫ ওভারে এসেছিল মাত্র ২৪ রান। ঝড় যে আসছে, সেই আভাসও তখন মেলেনি তামিমের ব্যাট থেকে।

বিজ্ঞাপন

শুরুটা হলো সপ্তম ওভার থেকে। ওই ওভারেই পর পর দুই বলে চার-ছয় মারলেন তামিম, অবশ্য এরপরেই আউট হয়ে গেলেন ধুঁকতে থাকা সৌম্য। তবে তামিমের ব্যাট তখন খাপখোলা তলোয়ার, খুব দ্রুত পৌঁছে গেলেন চল্লিশের ঘরে। ৩৫ বলেই পেয়ে গেলেন ফিফটি, তাও চার মেরেই।

এরপর তামিমের ব্যাটে শুধু পুড়তেই থাকল ওমানের বোলাররা। উইকেটের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেন, ৩৮ বলে পৌঁছে যান ৬০ রানে। বাংলাদেশের রানও বেড়েছে তরতর করে, ১৫ ওভার শেষে হয়ে গেছে ১২৯। ছয় মেরে তামিম পা দেন নব্বইয়ের ঘরে, ব্যাটে স্নায়ুচাপের কোনো চিহ্নই ছিল না। ৯৭ রানে পৌঁছানোর পর যেন একটু খোলসে ঢুকলেন, পর পর তিন বল দিলেন ডট। তবে চার মেরেই এলো সেঞ্চুরি, সেঞ্চুরিটা এলো ৬০ বলে। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে তিন ফরম্যাটেই পান সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ করে ১৮০, তামিম ইনিংস শেষ করেন ১০৩ রানে। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচেও বাংলাদেশ ওমানকে হারিয়ে দেয় সহজেই।

এরপরও বাংলাদেশ অনেক টি-টোয়েন্টি খেলেছে, তবে সেঞ্চুরিটা পাওয়া হয়নি কারও। বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টির দীনহীন কুটিরে তামিমের সেই সেঞ্চুরি শোভা পাচ্ছে জ্বলজ্বলে এক মুক্তো হয়েই।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এএম/এমআরপি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন