বিজ্ঞাপন

বিপাশা নেই, ডেস্কটপে রয়ে গেছে তার ‘লালটিপ’

March 13, 2018 | 11:59 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ‘কপালে টিপ পরা খুব পছন্দ ছিল বিপাশার। সেই ’৯৮ থেকে গত ২০ বছরে একদিনও ওকে টিপ ছাড়া দেখিনি। বিপাশার ‌লাল টিপ একটা রয়ে গেছে এখনো ওর ডেস্কটপে। হয়তো কোনোদিন কাজের ফাঁকে সেঁটে রেখেছিল পরে পরবে বলে। বেখেয়ালে হয়তো মনেও ছিল না আর।’

মানুষ চলে গেলে তার কত সামান্য স্মৃতিও অসামান্য হয়ে ওঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন গণমাধ্যমকর্মী মুহম্মদ খান। লেখার সঙ্গে দুটি ছবিও দিয়েছেন তিনি।

সেখানে একটি ছবিতে সেই পরিচিত হাসিমুখের বিপাশা, কপালে তার চিরচেনা সেই টিপ। আরেকটি ছবি একটি ডেস্কটপে রক্তলাল রঙের বড় টিপ। ডেস্কটপের এই লালটিপও বিপাশার। সেই ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেছেন বিপাশারই এক সহকর্মী।

বিজ্ঞাপন

‘দি হাঙ্গার প্রজেক্ট’-এর সুশাসন ইউনিটের কর্মকর্তা ছিলেন সানজিদা হক বিপাশা। ছিলেন সংবাদকর্মীদের কাছের মানুষ। তাই তো বিপাশার ফেসবুক ওয়াল ভর্তি হয়ে উঠেছে তার সহকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের শোকার্ত বার্তায়।

সহকর্মীরা বলছেন, বাঁচতে বড় ভালবাসতেন বিপাশা। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ছিল বাংলা পহেলা ফাল্গুন। আজ ১৩ মার্চ। ঠিক একমাস আগে আজকের দিনে তিনি ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘ফাল্গুনের প্রথম সকালে কর্মস্থলের উদ্দেশে রিকশায় উঠতেই মনটা ভালো হয়ে গেল। মিষ্টি রোদ আর শীতল বাতাসের পরশে আমার ভেজা চুলের দূরন্তপনায় মনে হলো— বেঁচে থাকাতেই আনন্দ! প্রাণভরে নিশ্বাস নিতে পারাতেই তৃপ্তি! কোনো পাওয়া-না পাওয়ার দ্বন্দ্ব এই মুহূর্তে আমাকে স্পর্শ করছে না। শুভ বসন্ত সবাইকে।’

বিজ্ঞাপন

বিপাশা স্বামী রফিকউজ জামান এবং একমাত্র ছেলে অনিরুদ্ধ জামানকে নিয়ে পারিবারিকভাবে ঘুরতে গিয়েছিলেন নেপালে। কিন্তু নেপালে তারা জীবিত পৌঁছতে পারেননি। এই তিনজনের মৃতদেহ রয়েছে হাসপাতালে।

সোমবার (১২ মার্চ) কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ বিধ্বস্তে মোট ৬৭ যাত্রীর মধ্যে নিহত হন ৫০ জন। জীবিত ১৭ জনের মধ্যে ১০ জন রয়েছেন বাংলাদেশি নাগরিক।

আর নিহত অন্যান্য যাত্রীদের মধ্যে রয়েছেন মো. হাসান রবিকুল, তাহিরা তানভীন শশী রেজা, পিয়াস রয়, নাজিয়া আফরিন চৌধুরী, উম্মে সালমা, এফএইচ প্রিয়ক, তামাররা প্রিয়ন্ময়ী, মো. হাসান ইমাম, হুরুন-নাহার বিলকিস বানু, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, মোছা. আখতারা বেগম, বিলকিস আরা, ফয়সাল আহমেদ, মীর আলিফুজ্জামন, মিনহাজ বিন নাসির, আখি মণি, এস এম মাহমুদুর রহমান, মো. মতিউর রহমান ও মো. নূরউজ জামান।

বিজ্ঞাপন

অপরদিকে, মোট ১০ জন যাত্রী এখনও কাঠমান্ডুর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধানী রয়েছেন। তাদের মধ্যে নরভিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইয়াকুব আলী, ওম হাসপাতালে মো. রেজওয়ানুল হক এবং কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইমরানা কবির হাসি, শাহরিন আহমেদ, শেখ রাশেদ রুবায়েত, আলমুন নাহার অ্যানি, মেহেদি হাসান, সৈয়দা কামরুন্নাহার স্বর্ণা, মো. হোসাইন কবির ও মো. শাহীন ব্যাপারীর কথা নিশ্চিত করেছে ইউএস বাংলা কর্তৃপক্ষ।

সারাবাংলা/জেএ/আইজেকে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন