বিজ্ঞাপন

‘সুপ্রিম কোর্টও ট্রাম্পকে বিজয়ী ঘোষণা করতে পারবে না’

November 7, 2020 | 8:16 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ট্রাম্পকে বিদায় নিতেই হবে। সুপ্রিমকোর্টও ট্রাম্পকে বিজয়ী ঘোষণা করতে পারবে না। কারণ রাজ্যের বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টের বলার কিছু নেই। এছাড়া সৌজন্যবোধ ট্রাম্প কখনও দেখাননি। আর তার কাছে সেটা আশা করাও যায় না।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৭ নভেম্বর) সারাবাংলা আয়োজিত ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান ফোকাসে ‘যুক্তরাষ্ট্রের ভোট এবং গণতন্ত্র’ বিষয়ক আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সাহাব এনাম খান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. আসিফ মোহাম্মদ শাহান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সারাবাংলা ডটনেটের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট এমএকে জিলানী।

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমেরিকার ক্ষেত্রে নির্বাচনে অর্থনৈতিক গুরুত্ব কমেনি। অর্থনীতি সেখানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। করোনা শুরুর আগে আমেরিকার অর্থনীতি ভালো করছিল। ২ দশমিক ৫ থেকে ৩ শতাংশ তাদের প্রবৃদ্ধি ছিল। এছাড়া ট্রাম্প যে নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেগুলো তিনি পালনের চেষ্টা করেছেন। ফলে ট্রাম্পের অনুসারীদের অসন্তোষ হওয়ার কথা নয়। সমস্যা তৈরি হয়েছে করোনা নিয়ে। করোনাকে ট্রাম্প ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করেনি। যার কারণে অনেক মানুষ মারা গেছে। এতে ট্রাম্পের কিছু ভোট চলে গেছে। সঠিক সিদ্ধান্ত হলে যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় এত মানুষ মারা যেত না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ট্রাম্প প্রথম প্রেসিডেন্ট হওয়ার সময় যে ভোট পেয়েছিলেন এবার হেরেও তিনি তার চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন। তার জনপ্রিয়তা কমেনি। ভোটারদের সংখ্যা বেড়েছে। এছাড়া ভোট পড়েছে অনেক বেশি। দুপক্ষই কোনোভাবে চাননি প্রতিপক্ষ জয়ী হোক। যে কারণে বিপুল সংখ্যক মানুষ ভোট দিয়েছে। সৌজন্যবোধ ট্রাম্প কখনও দেখাননি। আর মন্ত্রিসভার যে পরিমাণ সদস্যকে ট্রাম্প বরখাস্ত করেছেন- এর আগে এমন ঘটনা ঘটেনি। আর সামনেও হয়তো ঘটবে না। তাই ট্রাম্পের কাছে সৌজন্যবোধ কখনও আশা করা ঠিক না। ট্রাম্প সৌজন্যবোধ দেখানোর মানুষ না। ট্রাম্প বলেছেন, নির্বাচন সঠিক হলে তার হারার কোনো সম্ভাবনা নেই। তাহলে কেন আমি রিজাইন দেবো। আর যদি হেরেও যান তাহলে বাকিটা পরে দেখা যাবে। অর্থাৎ ভদ্রভাবে তিনি ক্ষমতা ছাড়বেন না। অপরদিকে ট্রাম্প কখনও বলতে পারবেন না যে, তিনি জয়ী হয়েছেন। ট্রাম্পকে সুপ্রিমকোর্ট কখনও বিজয়ী ঘোষণা করতে পারবে না। রাজ্যের বিষয়গুলো নিয়ে সুপ্রিমকোর্ট কখনও কিছু বলতে পারবে না। পরাজয়কে খুব বাজেভাবে নিয়ন্ত্রণ করছেন ট্রাম্প।’

বিজ্ঞাপন

সাহাব এনাম খান বলেন, ‘এবারের আমেরিকার নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং চমকপ্রদ। ট্রাম্পের পপুলার ভোট বাইডেনের চেয়ে কোনো অংশে কম না। ইলেকট্ররাল ভোটেও ট্রাম্প যে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন সেটা তার জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে। আমেরিকার মানুষ অর্থনীতিকে তাদের জীবনের প্রধান হিসেবে উল্লেখ করে। আমেরিকার নাগরিকদের মধ্যে যে ইউনিটি আছে সেটা প্রমাণিত। এছাড়া বিভিন্ন নিয়ম নীতিতে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে সেটা আমেরিকার শিক্ষিত মানুষ গ্রহণ করেনি। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ কিছু জায়গাতে বাইডেন জয়ী হয়েছে। অর্থাৎ শিক্ষিতদের বড় একটি রোল কিন্তু দেখা গেছে। এছাড়া ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করতে অনেকের সমস্যা হয়েছে। চাকুরি ছেড়ে দিয়েছেন বা অনেকের চাকুরি চলে গেছে। এটা খারাপ দিক।‘

ড. আসিফ মোহাম্মদ শাহান বলেন, ‘আমেরিকার নির্বাচন নিয়ে সারাবিশ্বের একটা আগ্রহ থাকে। আমরা মেইল ইন ব্যালটে কিছু পার্থক্য দেখছি। এর আগেও আমেরিকার একটা জনগোষ্ঠী মেইল ইন ব্যালটে ভোট দিয়েছে। এবার দুটি ঘটনা ঘটেছে। করোনার কারণে অনেক মানুষ কেন্দ্রে যেতে চাননি। আর ডেমোক্র্যাটদের দিক থেকে সবসময় একটা আগ্রহ থাকে মেইল ইন ব্যালটে ভোট দেওয়ার। আমরা এবার দেখছি মেইল ইন ব্যালটে বিপুল পরিমাণ ভোট এসেছে। এবার তা ফলাফলে অনেক বেশি প্রভাব ফেলেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ট্রাম্প নির্বাচনকে গ্রহণ করছেন না। তিনি আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ফলাফল ডেড লক হওয়ার একটা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। অন্যদিকে অনেক রিপাবলিকান ট্রাম্পের পাশে নেই। তারা ট্রাম্পের পাশ থেকে সরে যাচ্ছেন। এছাড়া ডেড লক হওয়ার জন্য ট্রাম্পের যে স্টেটগুলোর জয়ী হওয়ার দরকার ছিল সেগুলোর সম্ভবনা এখন আর নেই। ফলে ডেড লক হওয়ার আশা করা যায় না আর। এমনকি সম্ভাবনাও নেই।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসজে/পিটিএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন