বিজ্ঞাপন

ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড— সংসদে বিল উত্থাপন

November 8, 2020 | 9:07 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান কার্যকর করতে আগেই অধ্যাদেশ জারি করেছেন রাষ্ট্রপতি। বিশেষ এই অধ্যাদেশকে এবার আইনে পরিণত করতে জাতীয় সংসদে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) বিল-২০২০’ উত্থাপন করেছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম ফজিলাতুন নেসা। বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এক সপ্তাহের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। অধিবেশনে বিলটি উত্থাপনের আগে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২০’ সংসদে উত্থাপন করেন। ওই অধ্যাদেশের আলোকে সংসদে সংশোধনী বিলটি আনা হয়। চলতি অধিবেশনেই বিলটি পাসের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

২০০০ সালের ৮ নম্বর আইন (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন) সংশোধনে জারি করা অধ্যাদেশের আলোকে সংসদে উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে’ শব্দগুলোর পরিবর্তে ‘মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপিত হবে।

দেশব্যাপী ধর্ষণসহ যৌন সহিংসতার ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকলে দেশব্যাপী এসব অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি ওঠে। বিশেষ করে সিলেটের মুরারী চাঁদ (এমসি) কলেজ ক্যাম্পাসে স্বামীকে আটকে রেখে এক গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণ এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে বর্বরোচিত নির্যাতন চালিয়ে তার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার পর সেই দাবি আরও জোরালো হয়ে ওঠে।

বিজ্ঞাপন

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ অক্টোবর মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আনা সংশোধনীর খসড়ায় অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। পরে এই সংশোধনী অবিলম্বে কার্যকর করতে ১৩ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করেন। বিধি অনুযায়ী, অধ্যাদেশ জারির পরবর্তী সংসদ অধিবেশনেই একে আইনে পরিণত করতে হয়। সে প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই বিলটি উত্থাপন করা হয়েছে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ বিষয়ক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নারী ও শিশু ধর্ষণ একটি জঘন্য অপরাধ। নারী ও শিশু নির্যাতনমূলক অপরাধ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ প্রণয়ন করা হয়। বর্তমান আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের মধ্যে দেশে নারী ও শিশু ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ সংঘটন সামাজিক গতিশীলতায় নেতিবাচক প্রভাব ও সার্বিক সামাজিক উন্নয়নের ধারাকে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তাই এমন অপরাধ দমনে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে আইনে সর্বোচ্চ দণ্ডের বিধান যুক্ত করতে এই বিলটি আনা হয়েছে।

বিদ্যমান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। নতুন বিধান কার্যকরের মাধ্যমে দেশে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনা কমবে বলে আশাবাদ জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এবং নারী ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম ফজিলাতুন নেসা।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন