বিজ্ঞাপন

প্রিপেইড গ্যাস মিটার পাচ্ছেন ঢাকার আরও ১ লাখ ২০ হাজার গ্রাহক

November 16, 2020 | 11:30 am

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপনডেন্ট

ঢাকা: প্রিপেইড গ্যাস মিটারের আওতায় আসছেন রাজধানীর আরও ১ লাখ ২০ হাজার গ্রাহক। যাত্রাবাড়ী, বংশাল, গেন্ডারিয়া, লালবাগ, হাজারীবাগ, শাহবাগ ও নিউ মার্কেট এলাকায় এ সব গ্রাহককে মিটার দেওয়া হবে। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) সুপারিশে এসব এলাকা যুক্ত করা হচ্ছে ‘প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন’ প্রকল্পে। এ জন্য প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধনের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।

বিজ্ঞাপন

এ ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, প্রকল্প এলাকা পরিবর্তনের পাশাপাশি কিছু কার্যক্রমের ব্যয় বৃদ্ধি বা কমানো এবং অপারেশনাল অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স জনবল কাঠামো পরিবর্তনের কারণে প্রকল্পটি সংশোধন করা হচ্ছে। সম্প্রতি এই প্রস্তাবটি নিয়ে প্রকল্প মূল্য্য়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বেশ কিছু সুপারিশ দিয়ে ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) পুনর্গঠনের কথা বলা হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের যুগ্ম প্রধান আবু জাফর মো. ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন,‘ গত ৪ নভেম্বর এ প্রস্তাটি নিয়ে পিইসি সভা করা হয়েছে। সেখানে যেসব সুপারিশ দেওয়া হয়েছে সেগুলো প্রতিপালন করে ডিপিপি সংশোধনের জন্য সংশ্লিস্ট মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সংশোধিত প্রস্তাবটি এখনো পরিকল্পনা কমিশনে আসেনি।’

সূত্র জানায়, প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনী অনুযায়ী রজধানী ৩৪টি থানায় প্রিপেউড গ্যাস মিটার স্থাপনের কাজ করা হয়েছে। থানাগুলো হচ্ছে আদাবর, বাড্ডা, বনানী, ভাসানটেক, বিমানবন্দর, ক্যান্টনমেন্ট, দক্ষিণখান, দারুসসালাম, ধানমন্ডি, গুলশান, হাতিরঝিল, কাফরুল, কলাবাগান, খিলগাঁও, খিলক্ষেত, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, মতিঝিল, পল্লবী, পল্টন, রমনা, রূপনগর, সবজবাগ, শাহআলী, শেরেবাংলানগর, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, তেজগাঁও, তুরাগ, উত্তরা পূর্ব, উত্তরা পশ্চিম, উত্তর খান, ভাটারা এবং ওয়ারী থানা। এখন দ্বিতীয় সংশোধিত প্রস্তাবে নতুন করে ৭টি থানা যোগ করায় মোট থানার সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৪১টি। প্রকল্পটির আওতায় এরইমধ্যে ২ লাখ গ্রাহককে প্রিপেইড গ্যাস মিটার দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, তিতাস গ্যাস এলাকায় অধিকাংশ আবাসিক গ্রহক মিটারবিহীন গ্যাস ব্যবহার করে থাকেন। এ অবস্থায় তারা যে পরিমাণ গ্যাস ব্যবহার করুন না কেন তারা নির্দিষ্ট অঙ্কের বিল পরিশোধ করে থাকেন। এ অবস্থায় যেহেতু প্রতি ইউনিট ব্যবহৃত গ্যাসের জন্য বিল দেওয়ার প্রয়োজন হয় না, ফলে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস অপচয় হয়। অনেক সময় শীতকালে কাপড় শুকানো, ঘর উষ্ণ রাখা এবং দিয়াশলাইয়ের কাঠি বাঁচানোর জন্য গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে রাখা হতো। এভাবে গ্রাহক অসচেতনতার কারণে মূল্যবান এ প্রাকৃতিক সম্পদ প্রতিনিয়ত ব্যাপক অপচয় হয়ে আসছিলো। এ সব বাস্তবতার কারণে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ২ লাখ গ্রাহককে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের জন্য ‘প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পটি হাতে নেয় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

২০১৫ সালের ১৭ ফেবব্রুয়ারি ৭১২ কোটি ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (টিজিটিডিসিএল)। পরবর্তীতে প্রকল্পটি প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে মেয়াদ দুই বছর বাড়িয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। এ সময় ব্যয় ২১৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা কমে দাঁড়ায় ৪৯৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। প্রথম দিকে গ্রাহকদের অনাগ্রহ থাকলেও পরবর্তীতে এই মিটারের ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে মেয়াদ শেষ হওয়ার একবছর আগেই ২ লাখ প্রিপেইড মিটার স্থাপন শেষ হয়ে যায়। এ অবস্থায় প্রকল্পটির আওতায় আরও ১ লাখ ২০ হাজার গ্রাহককে এই মিটার ব্যবস্থায় যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

পিইসি সভার কার্যপত্র থেকে জানাগেছে, গত ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সভায় বেশ কিছ’ বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে পরিকল্পনা কমিশন। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনীতে ৭টি নতুন থানা এবং অতিরিক্ত ১লাখ ২০ হাজার গ্রাহক কিসের ভিত্তিতে এবং কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন করা হয়েছে সে বিষয়ে সভায় জানতে চাওয়া হয়েছিল। এই সংশোধনী প্রস্তাবে যেসব অঙ্গের ব্যয় বৃদ্ধি বা কমেছে সেগুলোর যৌক্তিকতা জানতে চাওয় হয়।

বিজ্ঞাপন

এ ছাড়া প্রকল্পের আওতায় ১৫টি যানবাহন কেনার সংস্থান রয়েছে। এর মধ্যে মোটর সাইকেল ১০টি, একটি জিপ এবং ৪টি ডাবল কেবিন পিকআপ। কিন্তু মোটর সাইকেল ছাড়া অন্য যানবাহনগুলো কেনা হয়েছে। এক্ষেত্রে মোটর সাইকেলের উপযোগিতা এবং মোটর সাইকেল ছাড়া অন্য যানবাহন কেনা যৌক্তিকতা জানতে চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে জ্বালানি বাবদ কোনো ব্যয় না রাখার কারণ জানতে চাওয়া হয়। প্রকল্প প্রস্তাবে প্রি শিপমেন্ট ইন্সিপেকশন ফি বাবদ ৫৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। আগেও ছিল। কিন্তু কোনো অর্থ ব্যয় হয়নি। ফলে এই ব্যয় বাদ দেওয়ার পক্ষে মত দেওয়া হয়। এ ছাড়া সভায় ডিসপিউট বোর্ড বাবদ ৫০ লাখ টাকা এবং অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রাম খাতে ২৫ লাখ টাকা বাদ দেওয়ার পক্ষে মত দেয় পরিকল্পনা কমিশন।

সারাবাংলা/জেজে/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন